Duncan Fletcher

বিরাটকে দেখিয়ে ফ্লেচার বলেন, লম্বা দৌড়ের ঘোড়া

শুধু ক্রিকেট নয়, ম্যাচ অথবা প্র্যাক্টিসের আগে গা ঘামানোর জন্য যে ফুটবল ম্যাচ খেলা হয় সেখানেও বিরাটকে নিজের সেরাটা দিতে দেখেছেন হুসেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩২
Share:

হার-না-মানা: ভারতের কোচ থাকাকালীন বিরাট কোহালিকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ডানকান ফ্লেচার। ফাইল চিত্র

মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপ জেতার পরেই কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ডানকান ফ্লেচার। বিশ্বজয়ী কোচ গ্যারি কার্স্টেন দায়িত্ব তুলে দিয়ে যান তাঁর হাতে। চার বছর ভারতকে প্রশিক্ষণ দেন ফ্লেচার। তিনি কোচ থাকাকালীন ভারতীয় ক্রিকেট খুঁজে পেয়েছিল এক হার-না-মানা যোদ্ধাকে। সেই যোদ্ধাই আজকের ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহালি। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেনের সঙ্গে আলোচনায় বিরাট-প্রসঙ্গে ফ্লেচার বলেছিলেন, “এই ছেলেটাকে দেখো। ভবিষ্যতের যোদ্ধা।”

Advertisement

প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক সেই উক্তি ভোলেননি। রবিবার এক প্রচারমাধ্যমের চ্যাট শো-এ এসেছিলেন হুসেন। সেখানেই বিরাট-প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত ও ভিভিএস লক্ষ্মণ। তাঁরাও বিরাট-প্রশংসায় মগ্ন। শ্রীকান্ত জানিয়ে দেন, বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কপিল দেবের সঙ্গে বিরাটের কিছুটা মিল খুঁজে পান তিনি।

সেই সুরেই হুসেন বলে ওঠেন, “একটা কথা খুব মনে পড়ে যাচ্ছে। ফ্লেচার যখন ভারতীয় দলের কোচ ছিল, তখন ওকে এক বার বিরাট প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ছেলেটি কী রকম তা জানতে। ফ্লেচার বলে ওঠে, প্রথম দিন দেখেই বুঝেছি ছেলেটা সহজে হার মানে না। ও কিন্তু ভবিষ্যতের যোদ্ধা।” ফ্লেচারের ভবিষ্যদ্বাণী যে ভুল ছিল না, তা এখন বুঝে গিয়েছে বিশ্বক্রিকেট। তিনি আরও বলেন, “ফ্লেচার কিন্তু তখনই বুঝেছিল, বিরাটের মধ্যে অদ্ভুত জেদ রয়েছে। জেতার খিদে হয়তো রান না পাওয়ার ব্যর্থতাকেও হার মানিয়ে দেবে। ওর মধ্যে যুদ্ধ করার যে অদম্য ইচ্ছে দেখতে পেয়েছি, তা অনেকের মধ্যেই দেখা যায় না।”

Advertisement

শুধু ক্রিকেট নয়, ম্যাচ অথবা প্র্যাক্টিসের আগে গা ঘামানোর জন্য যে ফুটবল ম্যাচ খেলা হয় সেখানেও বিরাটকে নিজের সেরাটা দিতে দেখেছেন হুসেন। তাঁর মনে হয়, এখনই হয়তো ক্রিকেটের পরিবর্তে ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে নেমে পড়বেন ভারতীয় অধিনায়ক। হুসেনের কথায়, “কোনও একটি ম্যাচের আগে ভারতীয় দলের ফুটবল দেখছিলাম। সেখানেও বাকিদের খেলার সঙ্গে বিরাটের তফাত বুঝতে পেরেছি। ওকে দেখে মনে হয়েছিল, ও যেন ফিফা বিশ্বকাপ অথবা এফএ কাপ ফাইনাল খেলতে নামবে।” যোগ করেন, “সেই একই ছন্দ ও খিদে খুঁজে পাওয়া যায় ও ব্যাট করার সময়েও। রান তাড়া করার ক্ষেত্রে তাই বিরাট এতটা সফল। ওকে একটা পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দাও যেখান থেকে জেতার সম্ভাবনা হয়তো এক শতাংশ। সেখান থেকেও ম্যাচ জিতিয়ে ফিরবে ও। ওর মতো জেতার খিদে আর কারও মধ্যে দেখিনি।”

বিরাটের হার-না-মানা মানসিকতা মন কেড়েছে শ্রীকান্তেরও। তাঁর বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় মিল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। বলেছেন, “কপিলের সঙ্গে খেলেছি। তার সঙ্গেই বিরাটকে বেছে নেওয়ার সময় আমি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম। দু’জনকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বলে দেওয়াই যায়, দু’জনের মনোভাবে কোনও তফাত নেই। প্রচণ্ড আস্থা রয়েছে নিজেদের প্রতি। শুধুমাত্র জেতার উদ্দেশ্যে মাঠে নামত। এই হার-মানা মনোভাব ও আত্রমণাত্মক মানসিকতার জন্যই রান তাড়া করতে এতটা সফল কোহালি।”

ভিভিএস লক্ষ্মণ কখনও বিরাটের ছন্দ নষ্ট হতে দেখেননি। তাঁর উপলব্ধি, “ম্যাচের শুরু থেকে যে আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখা যায়, সেটা কখনও কমে যায় না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিরাটের উত্তেজনায় কোনও তফাত দেখা যায় না।”

শেষ নিউজ়িল্যান্ড সফরে রান পাননি বিরাট। কিন্তু হুসেন মনে করেন, তা নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না ভারত অধিনায়ক। তাঁর ব্যাখ্যা, “ও রান পাচ্ছে কি না, ওর পরিসংখ্যান কী হল, তা নিয়ে বিরাট হয়‌তো চিন্তা করে না। ওর কাছে একটাই পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ, হার-জিতের শতাংশ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন