গৌরিকা
কোনও অলিম্পিক্সে সবচেয়ে কম বয়সি ক্রীড়াবিদ হিসেবে নামাটাই বিরাট কীর্তি। আর সেটা যদি ২০৭ দেশের ১০২৯৩ ক্রীড়াবিদের মধ্যে কনিষ্ঠতম হওয়ার নজির হয়, তা হলে তো আরওই অসাধারণ। কিন্তু রিও অলিম্পিক্সের সর্বকনিষ্ঠ ক্রীড়াবিদ গৌরিকা সিংহ-র অসাধারণত্ব যেন তার চেয়েও বেশি।
কেন? নেপালের ১৩ বছর বয়সি গৌরিকা গত বছর কাঠমান্ডুর ভয়াবহ ভূমিকম্পে গুটিকয়েক রক্ষা পাওয়া মানুষের একজন যে!
১৩ বছর বয়সটা কোনও খেলোয়াড়ের ভবিষ্যতে বড় মঞ্চে লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখার বয়স। সেখানে গৌরিকা এই বয়সে অলিম্পিক্সে সাঁতারের পুলে নামবে। পদক পাওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক গেমসে পদক জেতার স্বাদ গৌরিকা এ বছরই পেয়েছে। ২০১৬ সাউথ এশিয়ান গেমসে ফ্রিস্টাইল, ব্যাকস্ট্রোক, ব্যক্তিগত মেডলি থেকে একটা রুপো, তিনটে ব্রোঞ্জ পেয়েছে গৌরিকা। সেটাও আবার গুয়াহাটিতে।
নেপালে জন্মালেও দু’বছর বয়স থেকে গৌরিকা লন্ডনের বাসিন্দা। মা গরিমা আর বাবা পরসের সঙ্গে। ২০১৫-র এপ্রিলে যখন সে নেপালের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে কাঠমান্ডু এসেছিল, দুর্ভাগ্যবশত তখনই সেই ভয়াল ভূমিকম্প হয়েছিল। যার মারাত্মক ধাক্কায় প্রায় গোটা নেপাল ছারখার হয়ে যায়। গৌরিকার সঙ্গে তার মা আর খুব ছোট্ট ভাই সৌরেনও ছিল। ‘‘ভয়াবহ সেই স্মৃতি,’’ রিওতে ইতিহাস গড়ে ফেলেও এক বছরেরও বেশি পুরনো দুঃস্বপ্ন ভুলতে পারছে না সদ্য টিনএজে পৌঁছনো গৌরিকা।