গোলের মুখ বন্ধ করার অনুশীলনও ইস্টবেঙ্গলে

অনুশীলনের পরে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর জিমন্যাসিয়ামের সামনে চেয়ার নিয়ে বসেছিলেন তিনি। মাঠ থেকে তখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন ফুটবলাররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৩
Share:

মহড়া: আকোস্তা, কাশিমদের নিয়ে রক্ষণ মজবুতের জোরদার প্রস্তুতি সুভাষ ভৌমিকের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

অনুশীলনের পরে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর জিমন্যাসিয়ামের সামনে চেয়ার নিয়ে বসেছিলেন তিনি। মাঠ থেকে তখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন ফুটবলাররা। চেয়ারে বসেই লাল-হলুদ শিবিরের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক ডাকলেন তাঁর দলের দুই স্বদেশী ফরোয়ার্ড জবি জাস্টিন ও বালি গগনদীপকে।

Advertisement

জবিকে তাঁর প্রথমে প্রশ্ন, ‘‘তুমি কি কেরলকে দ্বিতীয় আই এম বিজয়ন উপহার দিতে চাও না? তা হলে কেন এত আনমনা হয়ে যাও খেলার মাঝে?’’ পিছনেই ছিলেন গগনদীপ। তাঁকে টিডির পরামর্শ, ‘‘তোর মতোই শুরুর দিকে আমার প্রথম ‘টাচ’ ভাল ছিল না। বাড়ির দেওয়ালে বল মেরে তা ‘রিসিভ’ করে সেই সমস্যা কাটিয়েছিলাম। আমি পারলে তুই কেন পারবি না।’’

কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে মহমেডান ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে এ ভাবেই নিজের দলকে তাতাচ্ছেন সুভাষ। দলের উইং-হাফ ডানমাউইয়াকে দেখেই সংবাদমাধ্যমের সামনে ইস্টবেঙ্গল টিডির আক্ষেপ, ‘‘ঈশ্বরপ্রদত্ত গতি ও স্কিল তোমার। ফোকাসটা নড়ে যাচ্ছে কেন? ভারতের হয়ে খেলার খিদেটা কি তোমার মরে গিয়েছে?’’

Advertisement

লিগে পর পর দুই ম্যাচে জয় নেই। প্রথমে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ড্র, তার পরে পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে হার। লিগের মাঝ পর্বেও বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ছিল না ইস্টবেঙ্গলে। কিন্তু এ বার সেই রক্ষণের চিন্তাতেই রাতের ঘুম গিয়েছে লাল-হলুদ শিবিরে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিকের। প্রথম সাত ম্যাচে এক গোল খেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচে কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার থাকা সত্ত্বেও চার গোল হজম করেছেন মহম্মদ আল আমনারা। ফলে এই মুহূর্তে নয় ম্যাচে পাঁচ গোল হয়েছে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ভেঙে। মহমেডানের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সেই ফাটল মেরামতিই করতে চাইছেন ইস্টবেঙ্গল টিডি।

রবিবার সকালে চড়া রোদের মধ্যেই রক্ষণ ও মাঝমাঠকে নিয়ে তাই পড়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল টিডি ও তার দুই সহকারী রঞ্জন চৌধুরী ও বাস্তব রায়। আকোস্তার সঙ্গে ভাষা সমস্যার জন্য মাঠের মধ্যেই দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন দোভাষীকে। ভুল হলেই ছুটে গিয়ে বোঝাচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গল টিডি। উদ্দেশ্য, নিজেদের গোলের মুখ বন্ধ করা।

অনুশীলন দেখে বোঝা যাচ্ছে, গত লেফ্ট ব্যাক লালরাম চুলোভার আসতে পারেন ফানাই। এ দিন তাঁর সঙ্গে হতাব সিংহ, জনি আকোস্তা ও সামাদ আলি মল্লিককে নিয়ে প্রথমে ডিফেন্ডারদের বেড়ে যাওয়া দূরত্ব কমানোর অনুশীলন করান ইস্টবেঙ্গল টিডি। যেখানে মেহতাবের পরিবর্তন হিসেবে তিনি ডেকে নিয়েছিলেন কিংশুক দেবনাথকেও। এই চার ব্যাকের সামনে কাশিম আইদারা, কমলপ্রীত কখনও বা সঞ্চয়ন সমাদ্দার ও প্রকাশ সরকার—দুই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডারকে রেখে দুই প্রান্ত ধরে ডানমাউইয়া ও সুরাবুদ্দিন মল্লিককে আক্রমণ সানাতে বলছিলেন। আর দুই উইঙ্গার আক্রমণে এলেই গগনদীপ ও জবি ব্যস্ত রাখছিলেন ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে দলকে বিপন্মুক্ত করতে হবে এ দিন সেই অনুশীলনেই জোর দেওয়া হল ইস্টবেঙ্গলে।

বেকায়দায় ইউতা: গত মরসুমে মোহনবাগান মাঝমাঠ আই লিগে পোক্ত ছিল তাঁর জন্যই। সেই ইউতা শনিবার রাতে দমদম বিমানবন্দরে নেমে কর্তাদের কাউকে দেখতে না পেয়ে বিব্রত বোধ করেন। তবে বিমানবন্দরে উপস্থিত সমর্থকদের সহায়তায় পরে ক্লাব সভাপতির হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিটের বাড়িতে যান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন