Gokulam FC

হেরে লিগ জয়ের দৌড়ে আরও পিছিয়ে পড়ল ইস্টবেঙ্গল

১৪ বছর অতিক্রান্ত, এখনও আই লিগ ঢোকেনি ইস্টবেঙ্গলে। প্রতি বছরই এক রাশ আশা নিয়ে বুক বাঁধেন সমর্থকরা। ভাবেন, এ বার নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু, বার বারই সেই আশার অকালমৃত্যু!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৯:২১
Share:

গোল করেও দলকে জয় এনে দিতে পারলেন না কাটসুমি ইউসা।—ফাইল চিত্র।

গোকুলমেই বাড়ছিল ইস্টবেঙ্গল বধের রূপকারেরা! মিনার্ভা ম্যাচ জিতে আই লিগ লড়াইয়ে লাইফলাইন পাওয়া ইস্টবেঙ্গলের লিগ জয়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে গেল তাঁদের পায়েই। শনিবার গোকুলম কেরল এফসি বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

এ দিন শুরুটা ভালই করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু, অত্যাধিক তাপমাত্রা এবং ফুটবলারদের দায়সারা মনোভাবই শেষ করে দিল ইস্টবেঙ্গলকে।

তবে গরমকে অজুহাত হিসেবে খাড়া না করাই উচিত। কারণ যে দল লিগের লড়াইয়ে আছে, তাদের তো এ সব প্রতিকূলতা পেরিয়েই নিজেদের সেরাটা দিতে হবে! কিন্তু, ইস্টবেঙ্গলের তারকা ফুটবলারদের খেলা দেখে সেটা বোঝা গেল না।

Advertisement

প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে বক্সের মধ্যে কেভিন লোবোকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন কাটসুমি ইউসা। ভাবা গিয়েছিল, প্রথমার্ধে লিড পেয়ে যাওয়ায় তারা দ্বিতীয়ার্ধে চেপে বসবে গোকুলমের উপর। কিন্তু, না! চাপ বজায় রাখা তো দূরঅস্ত্, মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতেই পারলেন না আমনা-কাটসুমিরা। বরং এক গোলে পিছিয়ে থাকা গোকুলমের পর পর আক্রমণে তখন ত্রাহি ত্রাহি রব লাল-হলুদ ডিফেন্সে।

ম্যাচের ৫১ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে গোল করে গোকুলমকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন কিভি। গোল হজম করেও ম্যাচে ফিরে আসার মরিয়া তাগিদ দেখা যায়নি ইস্টবেঙ্গলের খেলায়। দায়সারা গোছের ম্যাচটা কাটিয়ে দিলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচত খালিদ জামিলের দল। তবে, ধিকি ধিকি মশালে আগুন জ্বললেও তা সম্পূর্ণ ভাবে নিভে যায় ম্যাচের ৮৭ মিনিটে। হেনরির নেওয়া শট বিপদ মুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন সালামরঞ্জন সিংহ।

ম্যাচটি আরও বেশি গোলেও জিততে পারত গোকুলম, যদি না বারপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়াত।

গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো ম্যাচের অন্তিমলগ্নে দু’টি হলুদ কার্ড দেখার পর লাল কার্ডে মাঠ ছাড়েন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অর্ণব মণ্ডল। তবে, শুধু অর্ণবই নন, লাল কার্ড দেখেছেন গোকুলমের মহম্মদ ইরশাদও।

আরও পড়ুন: বেঞ্জেমাকে নিয়ে অশান্তি রিয়ালে

আরও পড়ুন: এইবার ম্যাচের আগে উদ্বেগ বার্সা শিবিরে

শুধু গরম নয়, এ দিনের ম্যাচকে আতস কাচের তলায় রাখলে ইস্টবেঙ্গলের হারের কারণ হিসেবে উঠে আসবে অনেকগুলি বিষয়। ভুল স্ট্র্যাটেজি থেকে দল গঠন—সব কিছুতেই ভুল ছিল খালিদ জামিলের।

মিনার্ভা ম্যাচে নজর কাড়তে না পারা ইয়ামি লংলাভকে এ দিনের ম্যাচে প্রথম থেকে কেন খেলানো হল তা বুঝতে পারেননি অধিকাংশ লাল-হলুদ সমর্থকই। কেন সুযোগ দেওয়া হল না জবি জাস্টিনকে? উত্তর হয়তো দিতে পারবেন খোদ খালিদ জামিল-ই।

অন্য দিকে, গোকুলমের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষাতেই গোল করা মহম্মদ রফিককেও রাখা হয়নি প্রথম এগারোয়। মাঝমাঠে রফিকের নেতৃত্ব দিয়ে খেলা তৈরি করার ক্ষমতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বহু ম্যাচে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কেন রফিকের সার্ভিস প্রথম থেকে কাজে লাগালেন না আই লিগ জয়ী কোচ? রহস্য সেটাও।

শুধু এ দু’টিই নয়, এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই বার বার আক্রমণে একা হয়ে যাচ্ছিলেন ডুডু ওমাগবেমি। মাঝমাঠে লোক বাড়াতে গিয়ে আক্রমণ ভাগের সঙ্গে সংযোগটাই প্রায় হারিয়ে ফেলছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। বর্তমানে ডুডু সেই জায়গায় নেই, যেখান থেকে একা হাতে বদলে দিতে পারেন ম্যাচের রং।

১৪ বছর অতিক্রান্ত, এখনও আই লিগ ঢোকেনি ইস্টবেঙ্গলে। প্রতি বছরই এক রাশ আশা নিয়ে বুক বাঁধেন সমর্থকরা। ভাবেন, এ বার নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু, বার বারই সেই আশার অকালমৃত্যু! ঢাক ঢোল পিটিয়ে নতুন নতুন কোচ, ফুটবলার রিক্রুট করা হলেও সাফল্য আসে না। তবুও ক্লাব কর্তারদের উপর সমর্থকদের ভরসা অটুট। তবু তাঁদের প্রশ্ন, বিভিন্ন দলের বাতিল ফুটবলার, খেপের মাঠ থেকে তুলে আনা ফুটবলারদের দিয়ে কী আই লিগ জেতা যায়!জবাবটা হয়তো দিতে পারবেন ক্লাবের শীর্ষকর্তারাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন