দুর্যোগে পণ্ড ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ লিগকেও ফেলে দিল দুর্যোগে

কম আলো আর ঝিরঝিরে বৃষ্টিতেই ঘরের মাঠে ভেস্তে গেল ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি তখন র‌্যান্টির গোলে লাল-হলুদ ১-০ এগিয়ে। চিমা আর পুলিশের বেষ্টনি তো ভাঙা গেলই না, উল্টে বুধবার বিকেলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের গোড়ার দিকেই জন্ম দিল আর এক দুর্যোগেরপরিত্যক্ত ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ ম্যাচের ভবিষ্যৎ কী? দু’দলের কোচ-কর্মকর্তা এবং আইএফএ সচিব যা বললেন তাতে লিগে দুর্যোগের ইঙ্গিতই স্পষ্ট।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৪
Share:

গোল করেও ম্যাচ শেষ না হওয়ার হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন র্যান্টি। বুধবার। ছবি: উৎপল সরকার

কম আলো আর ঝিরঝিরে বৃষ্টিতেই ঘরের মাঠে ভেস্তে গেল ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি তখন র‌্যান্টির গোলে লাল-হলুদ ১-০ এগিয়ে। চিমা আর পুলিশের বেষ্টনি তো ভাঙা গেলই না, উল্টে বুধবার বিকেলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের গোড়ার দিকেই জন্ম দিল আর এক দুর্যোগেরপরিত্যক্ত ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ ম্যাচের ভবিষ্যৎ কী? দু’দলের কোচ-কর্মকর্তা এবং আইএফএ সচিব যা বললেন তাতে লিগে দুর্যোগের ইঙ্গিতই স্পষ্ট।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গল কোচ আর্মান্দো কোলাসো বললেন, “আজ রেফারিই ম্যাচের সেরা। খেলাটা উনিই শেষ করতে দিলেন না। ফের যদি খেলতে হয় তা হলে আমরা বাকি সময়টার জন্যই কিন্তু খেলব। এটাই ফিফা আর ফেডারেশনের নিয়ম।” যা শুনে পুলিশ কোচ চিমা বলছেন, “অন্ধকারে আমার গোলকিপার বল দেখতে পাচ্ছিল না। রেফারিই খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। সুতরাং, নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচটা রিপ্লে হবে।” লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার আবার বলে দিলেন, “রেফারি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খেলা শেষ করালেন না। পুলিশ গোলকিপারকে সতর্ক করার বদলে সময় নষ্ট করলেন। আমরা গোটা ঘটনা জানিয়ে আইএফএকে চিঠি দিচ্ছি। আজকের দিনে অন্তত আমাদের সিদ্ধান্ত, এই ম্যাচ আর খেলব না। ভবিষ্যতের কথা ভবিষ্যৎ বলবে।” যা শুনে আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় আবার বললেন, “আগে চিঠি পাই তার পর মন্তব্য করব। তবে কলকাতা লিগের নিয়ম অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্ধ হওয়া ম্যাচ ফের নতুন করে খেলা হয়।”

ঠিক কী হয়েছিল এ দিন ম্যাচে? প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে বলজিতের পাস থেকে র‌্যান্টির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। মাথার উপরে তখন ঘন কালো মেঘ। দ্বিতীয়ার্ধ যখন শুরু হয় আলো কমে আসছে। চিমার দল দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেও দেরিতে। যা নিয়ে সরব ইস্টবেঙ্গল কোচ। যদিও চিমার কৌশলী উত্তর, “ওরা হয়তো বেশি আগে মাঠে নেমে গিয়েছিল।”

Advertisement

ঘটনা হল, এর পরেই রেফারি রঞ্জিত বক্সির কাছে এসে মন্দ আলোর জন্য খেলা বন্ধের আবেদন করতে থাকেন পুলিশ কিপার ঝণ্টু মণ্ডল এবং তাঁর সতীর্থরা। ৬৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ফ্রিকিক পেলে খেলা বন্ধ করার জন্য ফের আবেদন জানাতে থাকে বিপক্ষ দল। তিন মিনিট পর খেলা শুরু হলে মাঠের মধ্যেই শুয়ে পড়েন ঝণ্টু। এখান থেকেই আর খেলা শুরু করা যায়নি। পাল্টা ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা রেফারিকে ঘিরে ধরে আবেদন করতে থাকেন খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। দু’পক্ষের দাবি-পাল্টা দাবিতে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় মিনিট কুড়ি। মাঠে তখন আলো নেই বললেই চলে। রেফারি এর পরেই মন্দ আলোর জন্য খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে গ্যালারির সঙ্গেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেহতাব-র‌্যান্টিরা। শেষ পর্যন্ত দর্শক বিক্ষোভ থেকে বাঁচাতে চিমা ও তাঁর ফুটবলারদের ঘোড়সওয়ার পুলিশ কর্ডন করে তাঁবুতে নিয়ে যায়।

গত বছর লিগে মন্দ আলোর জন্যই কালিঘাট এমএস-এর বিরুদ্ধে পণ্ড হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ। ঘোর বর্ষার মরসুমে তার পরেও কেন আইএফএ এই ম্যাচ তিনটে পঞ্চাশে দিল তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন দু’দলের কর্তাদেরই। যাকে রেফারি তাঁবুর কেউ কেউও যুক্তিসঙ্গত বলছেন। লাল-হলুদের দেবব্রতবাবুর কথায়, “আমরা ম্যাচটা তিনটেয় দিতে বলেছিলাম। আইএফএ কর্ণপাতই করেনি।” আইএফএ সচিবের পাল্টা ব্যাখ্যা, “সম্প্রচার সংস্থা যে সময় দিয়েছে তার বাইরে যাই কী ভাবে?”

সব মিলিয়ে বুধ-বিকেলের আকাশের মতোই অন্ধকারে হাঁতড়ে বেড়ানোর দশা ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ ম্যাচের ভবিষ্যৎ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন