অনুশীলন ম্যাচে গোল নষ্ট করে কাতসুমি। নিজস্ব চিত্র
সুপার কাপ খেলতে ভুবনেশ্বর রওনা হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে ফের অস্বস্তি লাল-হলুদ শিবিরে! এ বার অবশ্য টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) সুভাষ ভৌমিক বনাম কোচ খালিদ জামিল নয়। উদ্বেগের কারণ দু’টো— এক) ফুটবলারদের পারফরম্যান্স। দুই) চোট-আঘাতের সমস্যা।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে রবিবার সকালেও ইস্টবেঙ্গল অ্যাকাডেমির ফুটবলাররা আটকে দিলেন ডুডু ওমাগবেমি, কাতসুমি ইউসা-দের! এ দিন ম্যাচের শুরুতেই তেতে পুইয়া-র গোলে পিছিয়ে পড়ে সুভাষ-খালিদের দল। পেনাল্টি নষ্ট করেন মহম্মদ আল আমনা। শেষ পর্যন্ত সমতা ফেরান লালডানমাওয়াইয়া রালতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডুডু গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। কিন্তু এ বারও রক্ষণের ভুলে অ্যাকাডেমির সুরঞ্জিৎ সিংহ সমতা ফেরান। নাইজিরীয় স্ট্রাইকারকে অবশ্য কখনওই স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি অ্যাকাডেমি দলের ডিফেন্ডার মনোজ মহম্মদ। তেতে পুইয়া ও দীপ সাহাকে আটকাতে গিয়ে একই অবস্থা হয়েছিল সুপারকাপগামী দলের দুই ডিফেন্ডার অর্ণব মণ্ডল ও গুরবিন্দর সিংহের। আগামী মরসুমে মনোজ, তেতে পুইয়া-সহ অ্যাকাডেমির বেশ কয়েক জনকে সিনিয়র দলের হয়ে খেলতে যাবে।
পরপর দু’ম্যাচে যে ভাবে অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে আটকে গেলেন ডুডু-রা, তাতে একেবারেই স্বস্তিতে নেই ইস্টবেঙ্গল কোচ। খালিদ বলছিলেন, ‘‘রক্ষণ আরও মজবুত করতে করতে হবে। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে আগে কয়েকটা দিন সময় রয়েছে। তার মধ্যেই ভুলত্রুটি শুধরে নিতে হবে।’’ সুভাষ অবশ্য ম্যাচের ফল নিয়ে চিন্তিত নন। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যাচে ফুটবলাররা গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছে কি না সেটাই দেখতে চেয়েছিলাম। ওদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি।’’ কেমন লাগল অ্যাকাডেমির ফুটবলারদের? উচ্ছ্বসিত লাল-হলুদ টিডি বললেন, ‘‘দুর্দান্ত খেলেছে ওরা। এই কারণেই তো অ্যাকাডেমি দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেললাম।’’ কাতসুমি বললেন, ‘‘ওরা খুব ভাল খেলেছে। প্রত্যেকেই প্রতিশ্রুতিমান। তবে অভিজ্ঞতায় একটু পিছিয়ে রয়েছে।’’
লাল-হলুদ অ্যাকাডেমির কোচ রঞ্জন চৌধুরীর মতে, গোল করেও তা ধরে রাখতে না পারা প্রধান সমস্যা সুভাষ-খালিদের দলের। তিনি বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল দলটা দারুণ। কিন্তু রক্ষণকে আরও মজবুত করতে হবে। সুপার কাপে নক-আউট টুর্নামেন্ট। তাই গোল করলেই শুধু হবে না। বিপক্ষের গোল করা আটকাতেও হবে।’’ রঞ্জনের মতে সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট ইস্টবেঙ্গলের। বললেন, ‘‘ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে প্রচুর পাস খেলে আক্রমণে উঠছে। তবে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের সামনে গিয়ে মাঝেমধ্যেই ছন্দ হারিয়ে ফেলছে। এই ভুলগুলো শুধরে নিতে পারলে কোনও সমস্যা হবে না।’’
অনুশীলন ম্যাচেই গোড়ালিতে চোট পেয়ে সুপার কাপে অনিশ্চিত হয়ে পড়লেন ডিফেন্ডার মেহতাব সিংহ। চব্বিশ ঘণ্টা আগে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছিলেন মিডফিল্ডার মহম্মদ রফিক। এ দিন পায়ে স্ট্র্যাপ লাগিয়ে হতাশ মুখে বসে অনুশীলন ম্যাচ দেখলেন তিনি। বললেন, ‘‘দিন দশেক বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার।’’ রফিক-মেহতাবকে ছাড়াই আজ, সোমবার সকালে ভুবনেশ্বর রওনা হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ম্যাচে খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে আর এক ডিফেন্ডার এদুয়ার্দো ফেরিরা-র।