দুই প্রধানের তারকা পাওয়া কঠিন

বলবন্ত সিংহ, আশুতোষ মেহতা, জয়েশ রানে, অমরিন্দর সিংহ, বিকাশ জাইরু, রবিন সিংহ বা প্রবীর দাসদের মতো মাঝারি মাপের ফুটবলারদের কাছে ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ক্লাবগুলো যে আর্থিক প্রস্তাব দিতে চলেছে তাতে বিশেষ ফারাক নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০৩:৫৪
Share:

আইএসএল এবং আই লিগ পাশাপাশি হওয়ায় সুনীল ছেত্রী, জেজে লালপেখলুয়া, দেবজিৎ মজুমদার, সন্দেশ ঝিঙ্গনদের মতো তারকা ফুটবলারদের দাম কমছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ক্লাব মিলিয়ে ওই ফুটবলাররা গত বছর যা পেয়েছেন তার চেয়ে অনেক কম টাকার প্রস্তাব পাচ্ছেন এ বার। তাতেও তারা ঝুঁকে আইএসএলের দিকে।

Advertisement

বলবন্ত সিংহ, আশুতোষ মেহতা, জয়েশ রানে, অমরিন্দর সিংহ, বিকাশ জাইরু, রবিন সিংহ বা প্রবীর দাসদের মতো মাঝারি মাপের ফুটবলারদের কাছে ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ক্লাবগুলো যে আর্থিক প্রস্তাব দিতে চলেছে তাতে বিশেষ ফারাক নেই। সেখানেও কথা বলে মনে হচ্ছে, অ্যাডভান্টেজ ফ্র্যাঞ্চাইজি।

বিভিন্ন টিমের রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা ফুটবলারদের মনোভাব, অবশ্য অন্য। তাঁদের মনোভাব, যে লিগেই খেলি যেন মাঠে নামতে পারি। তাতে টাকা একটু কম হয় হোক। এই ফুটবলারদের লক্ষ্যই শুধু আই লিগ।

Advertisement

ফ্র্যাঞ্চাইজি নিলাম এবং আই লিগের দড়ি টানাটানিতে অদ্ভুত এক অবস্থায় নামী থেকে অনামী সব ফুটবলার। যে যাঁর মতো অঙ্ক করছেন।

হিসাব মতো দুটো লিগের ২০টি টিমের জন্য প্রায় সাড়ে তিনশো ফুটবলার দরকার। কিন্তু দেশে এত ভাল ফুটবলার কোথায়? মাথায় হাত পড়েছে আই লিগ ক্লাব কর্তাদের। তাঁরা ধরেই নিয়েছেন, আইএসএলের নিলাম শেষ না হলে কোনও ভাল ফুটবলারই পাওয়া যাবে না। অ্যাকাডেমির ফুটবলারদের দিকে চোখ রাখার পাশাপাশি তাই তাঁরা কোচেদের মাধ্যমে বা সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন ফুটবলারদের সঙ্গে। মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন যেমন বললেন, ‘‘দেখি না কে কত টাকা পায় আইএসএল থেকে? যত দূর খবর পেয়েছি কিছু তারকা ফুটবলার ছাড়া বাকিদের ক্লাবের চেয়ে বেশি টাকা দেবে না ফ্র্যাঞ্চাইজিরা।’’ একই রকম মত ইস্টবেঙ্গলের টিম তৈরির দায়িত্বে থাকা অন্যতম প্রাক্তন ফুটবলার অ্যালভিটো ডি’কুনহার। ‘‘আরে আশুতোষ মেহতার মতো ফুটবলার বলছে ওকে নাকি আট-দশটা টিম ডাকছে। শুনছি আইএসএলের কিছু ক্লাবের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তারা নির্ধারিত ১৮ কোটি টাকা খরচের জায়গাতেই নেই। নিলামটা হোক। দেখবেন কত জন ক্লাবে ফেরে। আমরা অপেক্ষা করছি।’’ ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান আশায় রয়েছে। বাস্তবটা কিন্তু অন্য রকম।

আরও পড়ুন: ধোনির পর গোয়েন‌্কার টার্গেটে বিরাট

মাঠের আড়ম্বর, বিদেশে ট্রেনিং, পাঁচ তারা হোটেলে থাকা-খাওয়া, টিভি সম্প্রচার—সব মিলিয়ে নীতা অম্বানীর নিজের টুনার্মেন্টের প্যাকেজ সবসময়ই ফুটবলারদের কাছে আকর্ষণীয়। জেজে থেকে দেবজিৎ, সব দেশীয় ফুটবলারই তাই ঝুঁকে আইএসএলের দিকে। তাঁদের ঝুঁকে থাকার আরও কারণ আতলেতিকো দে কলকাতা বা চেন্নাইয়ান এফসি-তে খেললে সমর্থকদের কোনও চাপ থাকে না। চ্যাম্পিয়ন হলে ভাল, না হলে কেউ ইট ছুঁড়বে না। গালাগালিও দেবে না। ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানে খেললে সেই চাপটা নিতে হয়। মোহনবাগানের এক নামী তারকা ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘ক্লাব জার্সি আর আবেগের কথা বলে খেলাতে চাইছে। কিন্তু একটু টাকা বেশি পেলে আইএসএলেই খেলব।’’ ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র এক ফুটবলারের মন্তব্য, ‘‘আই লিগ তো ভালভাবে দেখানোই হয় না টিভিতে। আর আইএসএলের পুরো ব্যাপারটাই অন্য রকম। অনেক আড়ম্বর সেখানে।’’ যা থেকে স্পষ্ট, মাঝারি বা রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলার পেতেও সমস্যায় পড়বে আই লিগের ক্লাবেরা। কারণ কোনও ক্লাবেরই যে আইএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে লড়ার আর্থিক সামর্থ্য নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন