—ফাইল চিত্র।
খড়কুটো ধরেও যে ভেসে থাকা যায় ও তীরে পৌঁছনোও যায়, তা দেখিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা। ওদের তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা সেই খড়কুটো। যারা একটা ডুবন্ত জাহাজকে তীরে নিয়ে এসে তুলল বৃহস্পতিবার ওভালে। আর ভারতকেও বুঝিয়ে দিল, স্কোরবোর্ডে বিশাল রান তুললেই ম্যাচ জেতা যায় না।
এত বড় রান তাড়া করতে গেলে যে আগ্রাসনটা দরকার, তা ওদের ব্যাটিংয়ে ছিল না ঠিকই। কিন্তু ভারত ওদের গলা টিপে ধরা সত্ত্বেও যে ভাবে ওরা ধীরে ধীরে নিজেদের সেই দমবন্ধ অবস্থা থেকে বার করে আনল, জয়টা তারই পুরস্কার। শ্রীলঙ্কা বুঝিয়ে দিল, ওদের ‘পাঞ্চিং ব্যাগ’ হয়ে থাকার দিন শেষ। যে পারবে এসে ওদের ওপর ঘুষি মেরে চলে যাবে, ওরা কিছুই বলবে না, তা আর হবে না।
ভুল ধরতে হবেই বলে বিরাটদের ভুল ধরার কোনও মানে হয় না। ভারতের পক্ষে তো আর আট জন বোলার নিয়ে খেলা সম্ভব ছিল না। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা যে ভাবে ব্যাট করল, তাতে যে কোনও ধারালো বোলিংও ভোঁতা হয়ে যেতে পারে। কৃতিত্বটা ওদেরই। এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দলে একটাই বদল দরকার। আর সেটা কিন্তু রবীন্দ্র জাডেজা নয়। রবি অশ্বিনকে মাঠে নামানো দরকার। তিন পেসারের একজনকে তার জন্য বসতে হবে। অথবা কেদার যাদবকে বসানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হার্দিক পাণ্ড্যকে ছ’নম্বরে ব্যাট করতে নামতে হবে। স্পিনারদের মারে সদ্য ক্ষতবিক্ষত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভাল উপায় আর কিছু নেই।
বিরাট আশা করি পরের দিন টস জিতবে। এই ভাগ্যটা তো ওর তেমন ভাল না। আসলে ওভালে টসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাচ্ছে এখানে কোনও রানই সুরক্ষিত নয়। তার ওপর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে লেজ বলে তেমন কিছু নেই। আর ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মে তো দেখছি সুইং ছুটি নিয়ে বসে আছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন-আপ এতটাই ভাল যে পরপর দু’ম্যাচে ওরা সাধারণত ব্যর্থ হয় না। এবি ডি’ভিলিয়ার্স যে কোনও মুহূর্তে জ্বলে উঠবে। অবশ্য বাঁহাতি স্পিনারদের বিরুদ্ধে ও ঘাবড়ে যায় না, এ কথা বললে এখন যে কেউ মুচকি হাসবে। তার ওপর আবার লোয়ার অর্ডারে ডেভিড মিলার নামক একজন ব্যাটসম্যান। এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে লোয়ার অর্ডারে ডেভিড মিলারের উপস্থিতিটা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ওপর থেকে অনেকটা চাপ কমিয়ে দেয়। মিলারের থাকাটা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য স্বস্তির একটা বড় কারণ।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলা হচ্ছিল গ্রুপ বি থেকে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার নক আউটে ওঠার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে রবিবার যে কোনও একটা দলকে হয়তো বেরিয়ে যেতে হবে। পরের দিন শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মধ্যে কেউ শেষ চারে যাবে। এই দুই দলকেই কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পরও কি কেউ আর ভবিষ্যদ্বাণীর রাস্তায় হাঁটবে?