যুবভারতীতে ফিফার খেলা জেনারেটরে

এমনই নির্দেশ দিয়েছে ফিফা। এমনকী, অনুশীলনের সময়েও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে জেনারেটরের মাধ্যমেই।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

সুসজ্জিত: সামনে অনূর্ধ্ব ১৭ যুব বিশ্বকাপ। প্রস্তুত হচ্ছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। —নিজস্ব চিত্র।

এ রাজ্যে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। কিন্তু অক্টোবরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনূর্ধ্ব সতেরোর যুব বিশ্বকাপে ফ্লাড লাইট জ্বালাতে ব্যবহার করা হবে জেনারেটর। গ্রিডের বিদ্যুৎ নেওয়াই হবে না খেলার সময়ে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে ফিফা। এমনকী, অনুশীলনের সময়েও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে জেনারেটরের মাধ্যমেই।

Advertisement

ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, শুধু খেলা চলাকালীনই নয়, খেলার এক ঘণ্টা আগে থেকেই জেনারেটর চলবে এবং তা চলতে থাকবে ম্যাচ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পর পর্যন্ত। কারণ, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বিদ্যুৎ সরবরাহের উপরে আস্থা রাখতে পারেনি ফিফা।

কারণটা যুবভারতীর ইতিহাস। বছর কয়েক আগে ভারত-জাপান ম্যাচ চলছিল সেখানে। জাপানের কোচ ছিলেন জিকো। সেই খেলা চলার সময়ে হঠাৎ অন্ধকারে ডুবে যায় মাঠ। ২৯ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। এখানেই শেষ নয়। ডার্বি ম্যাচেও দু’বার খেলা চলার সময়ে যুবভারতীর আলো চলে গিয়েছিল। খেলা বন্ধ রাখতে হয়েছিল বেশ কয়েক মিনিট। এমনকী, সম্প্রতি লিওনেল মেসির সাংবাদিক বৈঠকের সময়েও আলো নিভে গিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়া দফতরকে। জবাবদিহি করতে হয় রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরকেও।

Advertisement

রাজ্য ক্রীড়া দফতর সূত্রের খবর, যুব বিশ্বকাপের জন্য যুবভারতীকে বাছার আগে মাঠ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়টি নজরে আসে ফিফার। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেনারেটরের ক্ষেত্রেও এ রাজ্যের প্রযুক্তির উপরে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না ফিফা। ফিফা-র উদ্যোগেই কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে দু’টি অতি শক্তিশালী জেনারেটর। সেগুলির মাধ্যমেই প্রতি দিন দু’টি করে ম্যাচ খেলানো হবে। ফিফা-র নির্দেশ, প্রতিটি জেনারেটরকে এক সঙ্গে অর্ধেক শক্তিতে চালানো হবে। যাতে একটি খারাপ হয়ে গেলে অন্যটি পূর্ণ ক্ষমতায় সঙ্গে সঙ্গে চালানো যায়।

বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা জানান, যুব বিশ্বকাপ উপলক্ষে যুবভারতীর বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো ঢেলে সাজা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে মুহূর্তের মধ্যেই অন্য লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও ফিফা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। কারণ যুব বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ বিশ্ব জুড়ে সম্প্রচারিত হবে। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই খেলাগুলিতে কোনও বিদ্যুৎ বিভ্রাট চাইছে না ফিফা।

যুবভারতীর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফিফা বলে দিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কোনও ম্যাচ বিঘ্নিত হলে চলবে না। জেনারেটরের আলোতেই খেলা হবে।’’

প্রাথমিক ভাবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের পরিকাঠামো ও মাঠ দেখে ফিফা-কর্তারা খুশি। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকও মাঠের পরিবেশ ও পরিকাঠামো নিয়ে প্রশংসাই করেছে। কিন্তু বাদ সাধল বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। ফিফা-র নির্দেশ যে তাঁদের কিছুটা লজ্জায় ফেলে দিয়েছে, তা কিন্তু অস্বীকার করছেন না বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা। এমনই এক জন বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। কিন্তু আমাদের এখানেই জেনারেটরে ফ্লাড লাইট জ্বলবে, এটা ঠিক মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’’ রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা সরবরাহ ব্যবস্থা নয়, যুবভারতীর অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ সংযোগের জন্যই রাজ্যকে এমন অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বলেই মত বিদ্যুৎ-কর্তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন