সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার আগে টিমে একটা পরিবর্তন করতে পারে ইংল্যান্ড। অফ ফর্মে থাকা জেসন রয়-কে বাদ দিয়ে জনি বেয়ারস্টো-কে খেলানোর কথা ভাবছে তারা।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অইন মর্গ্যান মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আমি এখনই চূড়ান্ত এগারোর নাম ঘোষণা করব না। কাল মাঠে এসে সেটা করা হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, আমাদের টিমে বদল হতেই পারে।’’ ইংল্যান্ড অধিনায়কের এই কথার পরে ধরে নেওয়া হচ্ছে, ওই পরিবর্তনটা সম্ভবত জেসন রয়-ই হতে যাচ্ছেন। কারণ, ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে রয়-ই একমাত্র দুর্বলতা।
তাঁর পরিবর্ত যে হতে পারেন, সেই জনি বেয়ারস্টো-কে নিয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেন, ‘‘জনির সবচেয়ে বড় গুণ হল, যে কোনও পরিস্থিতিতে, যে কোনও পরিবেশে রান করে যেতে পারে। বিশেষ করে সাদা বলের ক্রিকেটে।’’ দীর্ঘ দিন রিজার্ভে বসে থাকতে হয়েছে বেয়ারস্টো-কে। যা নিয়ে মর্গ্যান বলছেন, ‘‘আপনার টিমে যদি এমন প্লেয়ার থাকে, যারা অনেক দিন ধরে সাইডলাইনে বসে আছে, একটা সময় তারা হতাশ হয়ে পড়তে পারে। এই অবস্থায় যখন রিজার্ভে থাকা ক্রিকেটাররা মাঠে নামার সুযোগ পায়, তখন তারা চাপে পড়ে যায়। ওদের পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়ে। কিন্তু জনিকে দেখে আমার মনে হয়েছে, এ সব ব্যাপার ওকে সমস্যায় ফেলবে না। জনিকে ওপেন করতে পাঠাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমি জানি, ও সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগাবে।’’
আরও পড়ুন:অধিনায়ক হচ্ছি, অনুষ্কাকে বলেই কান্না
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আয়্যারল্যান্ডের সঙ্গে যে ত্রিদেশীয় সিরিজ হয়েছে, সেখানে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন বেয়ারস্টো। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে ইয়র্কশায়ারের হয়ে ওপেন করতে নেমে ১৭৪ রানে অসাধারণ ইনিংস খেলে যান তিনি। যার পর থেকে অনেকেই বলতে থাকেন, কেন বেয়ারস্টো-কে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একটা সুযোগ দেওয়া হবে না? খুব সম্ভবত সেই সুযোগ আজ, বুধবার পেতে চলেছেন ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান।
কার্ডিফে পাকিস্তান আবার বাড়তি এক জন স্পিনার খেলানোর কথা ভাবছে। ফইম আশরাফের জায়গায় খেলতে দেখা যেতে পারে লেগস্পিনার শাদাব খান-কে। কার্ডিফের মাঠ ছোট হলেও মনে করা হচ্ছে, লেগস্পিনের সামনে সমস্যায় পড়তে পারেন ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা। তবে আপাতত এই টুর্নামেন্টে এবং তার আগে যে দু’জন লেগস্পিনারকে খেলতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে— সেই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহিরের বিরুদ্ধে অবশ্য খুব একটা অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়নি তাঁদের।
পেসারদের মধ্যে জুনেইদ খান ও হাসান আলি অবশ্য ভাল ফর্মে রয়েছেন। দু’জনে মিলে এ পর্যন্ত এক ডজন উইকেট নিয়েছেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে মহম্মদ আমির তেমন বিধ্বংসী ফর্মে নেই। মাত্র দুটো উইকেট পেয়েছেন এ পর্যন্ত। তবে তাঁর বলে ব্যাটসম্যানরা বেশি রান করতে পারছেন না।
তবে লেগস্পিনার খেলুন বা পেসার, সব মিলিয়ে লড়াইটা হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড ব্যাটিং বনাম পাক বোলিংয়ের। কার্ডিফের আবহাওয়া ও উইকেট অবশ্য ব্যাটসম্যানদেরই বেশি সাহায্য করতে পারে। বুধবার সারা দিন চড়া রোদের পূর্বাভাস রয়েছে। এমন আবহাওয়ায় এখানে সাধারণত ব্যাটসম্যানদের মুখেই হাসি দেখা যায়। এই উইকেটেই পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা পাকিস্তানের কাজে লাগতে পারে।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ অবশ্য বলছেন, ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং সব বিভাগেই তাঁদের ভাল করে দেখাতে হবে। সরফরাজ বলেন, ‘‘ইংল্যান্ড খুবই ভাল দল। গত দু’বছর ধরে ওরা খুব ভাল ক্রিকেট খেলে চলেছে। ওদের মতো একটা বিশ্বমানের দলের বিরুদ্ধে যদি খেলতে হয়, তা হলে আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। পুরো দলকেই ভাল খেলতে হবে। সব বিভাগেই ভাল খেলতে হবে আমাদের।’’