রজার্সের নজিরেও অস্ট্রেলিয়ার বিপদ কাটল না

পরপর সাত ইনিংসে সাতটি হাফ সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড ছুঁলেও সেঞ্চুরির খরা কাটল না অজি ওপেনার ক্রিস রজার্সের। কাটল না অস্ট্রেলিয়ার বিপদও। সেঞ্চুরি থেকে পাঁচ রান দূরে থেকে তিনি ফিরে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংও হোঁচট খেতে শুরু করল। ইংল্যান্ডের ৪৩০-এর জবাবে অ্যাসেজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ২৬৪-৫। ক্রিজে থাকা শেন ওয়াটসনই ভরসা মাইকেল ক্লার্কদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৫ ০৫:০৬
Share:

আউট হওয়ার পর দর্শকদের অভিবাদন নিচ্ছেন রজার্স।

পরপর সাত ইনিংসে সাতটি হাফ সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড ছুঁলেও সেঞ্চুরির খরা কাটল না অজি ওপেনার ক্রিস রজার্সের। কাটল না অস্ট্রেলিয়ার বিপদও। সেঞ্চুরি থেকে পাঁচ রান দূরে থেকে তিনি ফিরে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংও হোঁচট খেতে শুরু করল। ইংল্যান্ডের ৪৩০-এর জবাবে অ্যাসেজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ২৬৪-৫। ক্রিজে থাকা শেন ওয়াটসনই ভরসা মাইকেল ক্লার্কদের।

Advertisement

এভার্টন উইকস, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, শিবনারায়ণ চন্দ্রপল ও কুমার সঙ্গকারা এর আগে একই কীর্তি স্থাপন করলেও এঁরা কেউ ওপেনার নন। আর একটা অমিল এঁদের সঙ্গে রজার্সের। এই চারজনের কেউই এই নজিরে সেঞ্চুরিহীন ছিলেন না। কিন্তু নিউ সাউথ ওয়েলসের ৩৭-এর এই ওপেনার বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরির খরা কাটাতে গিয়েও পারলেন না। নার্ভাস নাইনটিজেই ফিরে গেলেন, যেমন বছরের প্রথম সপ্তাহে ভারতের বিরুদ্ধে সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিরে গিয়েছিলেন ৯৫-এ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইংরেজ পেসার মার্ক উডের অফ স্টাম্পের বাইরে যাওয়া বল তাঁর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যখন ইংরেজ কিপার জস বাটলারের গ্লাভসে ঢুকে পড়ল, তখনও তিনি ৯৫-এ। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ততক্ষণে ১৮০ তুলে ফেলেছে বোর্ডে।

ইংল্যান্ডের ৪৩০-এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়ার্নার, স্মিথরা সমর্থকদের খুশি না করেই ফিরে যাওয়ার পর রজার্স ও মাইকেল ক্লার্কই হাল ধরেছিলেন। জেমস অ্যান্ডারসন, ক্রিস ব্রড-রা অবশ্য বেশ চাপেই রেখেছিলেন তাঁদের। মার্ক উড ও মইন আলিরা পরে বল করতে এসে চাপটা আরও বাড়ান।

Advertisement

এমন চাপ ইংল্যান্ডের উপর সে ভাবে রাখতে পারলেন কই অজি বোলাররা? মিচেল জনসনকে সে জন্য গ্যালারি থেকে আওয়াজও শুনতে হয়। শিকারহীন অজি পেসার সকালে যাও বা একটা উইকেট প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন, তাও টিভি আম্পায়ার তা নাকচ করে দেন বল ফিল্ডারের হাতে যাওয়ার আগে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল, এই কারণে। মিচেল স্টার্ক অবশ্য পাঁচ উইকেট নিয়েই বোলিং শেষ করেন। আগের দিন যেমন ইংল্যান্ডকে টেনেছিলেন জো রুট, এ দিন সেই দায়িত্বটা নেন মইন (৭৭)। লাঞ্চের আগে পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডকে যে জায়গা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান, সেই জায়গায় পৌঁছতে কাল ঘাম ছুটছে অজি ব্যাটসম্যানদের।

অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রাখলেও ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন কিন্তু চাপে পড়ে গেলেন স্লিপে দাঁড়িয়ে স্টিভ স্মিথের ব্যাট হয়ে আসা বল আটকাতে গিয়ে। জেমস অ্যান্ডারসনের আশি মাইলের উপর গতির বল স্মিথের ব্যাট ছুঁয়ে সোজা অ্যলিস্টার কুকের কুঁচকিতে গিয়ে লাগে। প্রচণ্ড ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যখন ছটফট করছেন কুক, তখন তাঁর পাশে বসা রুটের হাসির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়।

মাইকেল ক্লার্ক (৩৮) যখন বোলার মইন আলির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে গেলেন, তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে ২০৭-৪। এখান থেকেই অ্যাডাম ভোজেসকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু শেন ওয়াটসনের। সোফিয়া গার্ডেনের পাটা উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে যে রান আসতে বাধ্য, চায়ের বিরতিতে টিভি বক্সে বসে রিকি পন্টিং, ইয়ান বোথামরা সে রকমই বলছিলেন। ওয়াটসনরা সেই মন্ত্র মেনে এগোতে শুরু করলেও কিছুক্ষণ পরেই ভোজেস একস্ট্রা কভারে অ্যান্ডারসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তখন থেকেই অশনি সঙ্কেত দেখা শুরু অস্ট্রেলিয়ার।

ছবি: এএফপি।

জনসনকে বিদ্রুপ

তাঁর সঙ্গে ইংরেজ দর্শকদের সম্পর্ক নিয়ে গল্প কম নেই। এ বারের অ্যাসেজ শুরু হতে না হতেই দেখা যাচ্ছে মিচেল জনসন বনাম ইংরেজ দর্শকদের লড়াই আবার জমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে জনসন যখন ওভার শেষ করে ফাইন লেগে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেখানকার দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে শুরু করেন। কারণ, তত ক্ষণে যে জনসনের ‘সেঞ্চুরি’ হয়ে গিয়েছে। একশো রান দিয়ে ফেলেছেন কোনও উইকেট না নিয়ে। জনসনকেও দেখা যায় টুপি খুলে দর্শকদের উদ্দেশে দেখাতে। ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন অজি ফাস্ট বোলার, তা অবশ্য পরিষ্কার হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন