ইংল্যান্ডের ময়নাতদন্ত: সিরিজ জয় নিয়ে রোহিত

এর পর তো অশ্বিন সামলাতে অবস্থা আরও বেশি করুণ হবে

অ্যালিস্টার কুকদের বাংলাদেশ যে ভাবে হারাল, তার পর আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে একটা ভবিষ্যদ্বাণী করার লোভ সামলাতে পারছি না। বিরাট কোহালি মনে হচ্ছে সিরিজ ৫-০ জিতবে! বলার কারণ আছে। বাংলাদেশের যে মেহদি হাসান মিরাজকে খেলতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেল কুকরা, তার বয়স মাত্র উনিশ।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৯
Share:

বিধ্বস্ত কুক। রবিবার মিরপুরে। ছবি: রয়টার্স

অ্যালিস্টার কুকদের বাংলাদেশ যে ভাবে হারাল, তার পর আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে একটা ভবিষ্যদ্বাণী করার লোভ সামলাতে পারছি না।

Advertisement

বিরাট কোহালি মনে হচ্ছে সিরিজ ৫-০ জিতবে!

বলার কারণ আছে। বাংলাদেশের যে মেহদি হাসান মিরাজকে খেলতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেল কুকরা, তার বয়স মাত্র উনিশ। টেস্ট কেরিয়ার সবে শুরু করেছে। সেখানে ভারত সফরে এসে কোন কোন স্পিনারের বিরুদ্ধে লড়তে হবে ইংল্যান্ডকে? না, রবিচন্দ্রন অশ্বিন। রবীন্দ্র জাডেজা। অমিত মিশ্র। ইংল্যান্ড সামলাবে কী করে? সবচেয়ে বড় কথা, টিমটা তো একই। যে টিমটা বাংলাদেশে হারল, সেই একই টিম নিয়ে তো ভারতে আসছে ইংল্যান্ড। আমার তো মনে হয়, ওরা দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছে। অশ্বিন-জাডেজাদের খেলার দুঃস্বপ্ন।

Advertisement

রবিবার দুপুরে শুনলাম ২৭৩-এর টার্গেট নিয়ে ইংল্যান্ড একটা সময় বিনা উইকেটে একশো ছিল। সেখান থেকে ১৬৪ অলআউট! দশটা উইকেটই পড়ল দিনের শেষ সেশনে। মেহদি হাসান প্রায় একাই বুলডোজার চালিয়ে দিল ওদের ব্যাটিংয়ের উপর দিয়ে। যা প্রশ্ন উঠে পড়ল যে, ভারতে এলে এদের কী হাল হবে?

আগের টেস্টেও কোনও রকমে জিতেছিল ইংল্যান্ড। সে টাবাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য। কিন্তু এ বার যেহেতু হার-জিতের ফয়সলা বাংলাদেশের বোলারদের হাতে ছিল, ইংল্যান্ড ম্যাচ আর বার করতে পারেনি। চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের কুড়িটার মধ্যে ১৯টা উইকেট নিয়েছিল স্পিনাররা। এই ম্যাচে কুড়িটা উইকেটের কুড়িটাই স্পিনার। যা বুঝিয়ে দিল, স্পিন-অস্ত্রে এই ইংল্যান্ডকে কাবু করা কঠিন হবে না। গত ভারত সফরে টেস্ট সিরিজ ইংল্যান্ড জিতেছিল দু’টো কারণে। গ্রেম সোয়ান আর মন্টি পানেসরের মতো দু’জন স্পিনার ছিল হাতে। সেখানে এই ইংল্যান্ডের সেরা স্পিনার মইন আলি একদম ফর্মে নেই। বাকি তিন স্পিনারের মধ্যে গ্যারেথ ব্যাটি, আদিল রশিদ, জাফর আনসারিদের মোট টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা—চোদ্দো! দ্বিতীয়ত, ব্যাটিং। গত সফরে ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে একটা কেভিন পিটারসেন ছিল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অ্যালিস্টার কুক ছিল। কুক এ বারও আছে। কিন্তু পিটারসেন নেই। টিমটা বড় বেশি কুক আর জো রুটের উপর নির্ভর করে। ওদের কপাল খারাপ। মি আলির মতো রুটেও ফর্ম খারাপ যাচ্ছে।

শুনলাম, ভারত সফরের আগে সাকলিন মুস্তাককে আনছে ইসিবি। স্পিনারদের পনেরো দিনের একটা ক্র্যাশ কোর্স করাতে। মনে হয় না, তাতে বিশেষ কোনও লাভ হবে। সাকলিন তো এখনও টিমটাকে ধরতেই পারল না। কাজই করল না। ওর হাতে জাদুদণ্ড আছে নাকি যে, ছুঁলেই সব পাল্টে যাবে? ইসিবির উচিত ছিল, বাংলাদেশ সফরের আগে সাকলিনকে টিমের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া। তা হলে কিছু হতে পারত। ভারত সফরের সাত দিন আগে এসে বিশেষ কোনও লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না।

আর পিচও তেমন হবে। অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, কী ভাবে মোহালিতে টার্নার বানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাড়ে তিন দিনে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত? রাজকোট, বিশাখাপত্তনমের উইকেটে স্পিনারদের সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তার উপর অশ্বিন-জাডেজাদের নিউজিল্যান্ড ওয়ান ডে সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হল। পুরো ভাবনাটাই হচ্ছে, ইংল্যান্ডের জন্য তৈরি হও। নিজেদের তাজা রাখো। আর ভারত যদি অমিত মিশ্রকে খেলিয়ে তিন স্পিনারে যায়—ইংল্যান্ডের কপালে দুঃখ আছে। কুক-রুট ছাড়া খেলবে কে? ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ের অবস্থা কী, বাংলাদেশ তো বুঝিয়ে গেল।

৫-০ এর পর অবিশ্বাস্য লাগছে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন