ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলব না, বলে দিলেন ডুডু

বুধবার ভুবনেশ্বর থেকে ফোনে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্তে কথা বলার সময় ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার ডুডু ওমাগবেমি কখনও বিস্ফোরক, কখনও অভিমানী।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৩
Share:

ক্ষুব্ধ: ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের আচরণে হতাশ ডুডু। ফাইল চিত্র

তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার ক্ষোভে জার্সি ছিঁড়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর উদ্দেশে সমর্থকরা বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছেন। সুপার কাপে খেলবেন না বলে ক্লাব কর্তাদের উপর চাপ বাড়িয়েছেন দু’সপ্তাহ আগে। তাঁর নানা কথায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে বারবার। শাস্তির দাবি জানিয়েও পরে পিছিয়ে এসেছেন কর্তারা। কারণ লাল-হলুদের এ বারের সফলতম স্ট্রাইকার তিনিই। ১১ ম্যাচ খেলে ৯ গোল করেছেন। সুপার কাপ সেমিফাইনালে দুর্দান্ত গোল করে ফাইনালে তুলেছেন ইস্টবেঙ্গলকে। বুধবার ভুবনেশ্বর থেকে ফোনে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্তে কথা বলার সময় ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার ডুডু ওমাগবেমি কখনও বিস্ফোরক, কখনও অভিমানী।

Advertisement

প্রশ্ন: বুধবার অনুশীলনে যাননি। হোটেলে বসে থেকেছেন। শুক্রবার ফাইনালে খেলবেন?

ডুডু ওমাগবেমি: না, খেলব না। আমার যা চোট তাতে খেলার ঝুঁকি নিয়ে জীবন বাজি রাখতে পারব না। তা ছাড়া আমাকে তো ইস্টবেঙ্গলের
দরকারও নেই।

Advertisement

প্র: আপনি তো বহুবার অনেক কথা বলে পরে মত বদলেছেন। এ বারও সে রকম হবে না তো?

ডুডু: আমার ফাইনালে খেলার মতো অবস্থা নেই কোচকে সেটা জানিয়ে দিয়েছি।

প্র: ফাইনালে তুললেন। অথচ ট্রফি জেতার সুযোগ পেয়েও নামবেন না। আপনার নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কারণ কী শুধু চোট-আঘাত, না অন্য কোনও কারণ?

ডুডু: বললাম তো, আমার চোট আছে। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। এর পরে বড় কোনও চোট পেয়ে গেলে ইস্টবেঙ্গল কি দেখবে?

প্র: কিন্তু এ সব ক্ষেত্রে তো কোচেরা ইঞ্জেকশন দিয়ে খেলাতে নামান ফুটবলারদের। যদি সে রকম কিছু অনুরোধ আসে?

ডুডু: কোচের সব প্রস্তাব ইতিমধ্যেই ফিরিয়ে দিয়েছি। ইঞ্জেকশন দিয়ে খেলতে নামব না জানিয়ে দিয়েছি। ইস্টবেঙ্গলের যা অবস্থা তাতে আমি হয়তো ইঞ্জেকশন নিয়ে খেললাম, গোল করলাম, ট্রফি জেতালাম এবং চোট পেলাম। পরের মরসুমে আমাকে ইস্টবেঙ্গল দেখবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?

প্র: আল আমনা, ইউসা কাতসুমিকে পরের মরসুমের জন্য চূড়ান্ত করেছেন ক্লাব কর্তারা। আপনার সঙ্গে কথা বলেননি। সেই অভিমানেই কি না
খেলার সিদ্ধান্ত?

ডুডু: না, না সে রকম কিছু নেই। আমি পেশাদার। এখানে না খেললে অন্য ক্লাব পেয়ে যাব। সুপার কাপ তো শেষ টুনার্মেন্ট। আমার নিজের কথাও ভাবতে হবে। তাই কোচেদের বলে দিয়েছি, খেলতে পারব না। অনুশীলনেও যাব না আর।

প্র: কিন্তু আপনি না খেললে তো সদস্য-সমর্থকদের বঞ্চিত করা হবে। ওরা তো এই ট্রফিটা চাইছে?

ডুডু: সে তো চাইবেই। কিন্তু ওরা তো আমার গোল উৎসব দেখতে চায় না। সে জন্যই এফ সি গোয়ার বিরুদ্ধে জেতার গোল করার পর সতীর্থরা উৎসব করলেও আমি নির্লিপ্ত ছিলাম। ওদের দিকে ফিরেও তাকাইনি।

প্র: কিন্তু সহজ সুযোগ থেকে গোল করতে না পারলে সমর্থকরা তো নানা কথা বলবেনই! সেটা নিয়ে আপনার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার ভাববে কেন?

ডুডু: আমি ইউরোপে খেলে এসেছি। ভারতে বহু বছর খেলছি। প্রচুর গোল করেছি। গোল নষ্টও তো খেলার অঙ্গ। কিন্তু কেউ কখনও আমার গায়ের রং বা মুখ নিয়ে কটাক্ষ করেনি। এ রকম নির্বোধ সমর্থক কোথাও দেখিনি। যে সমর্থকরা অন্যদের সম্মান দেয় না, তাদের আমিও সম্মান দেব না। এই তো গতকাল (মঙ্গলবার) মোহনবাগান ও রকম বিশ্রীভাবে হারল। সোনালি সুযোগ নষ্ট করল। ওদেরও তো মাঠে সমর্থক ছিল। কেউ কি হনুমান (মাঙ্কি) বলেছে দিপান্দা ডিকাকে? আমার নরওয়ের এক বন্ধু বলছিল, এ রকম অভব্য ও উগ্র সমর্থক ও
কোথাও দেখেনি।’

প্র: আপনি না খেললে গোল করে জেতাবে কে?

ডুডু: কেন, ক্রোমা (আনসুমানা ক্রোমা) আছে। ও গোল করে দেবে। আমনা, কাতসুমিও তো গোল করেছে। ওরা ঠিক জিতিয়ে দেবে।

প্র: বেঙ্গালুরুকে কেমন দেখলেন?

ডুডু: ভাল দল। তবে হারানো যায়। আমি চাই ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হোক। ডুডু মাঠে নামলে ঠিক গোল করে জেতাত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement