প্রশ্ন: অলিম্পিক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে লড়েছেন। এ বার পেশাদারদের রিংয়ে। এ বারই কি সবচেয়ে বেশি টেনশন হচ্ছে?
বিজেন্দ্র: না। আমি বলব অলিম্পিকের সময় সবচেয়ে বেশি টেনশন ছিল। বেজিংয়ে সেই কোয়ার্টার ফাইনাল লড়াইয়ের আগের রাতে তো ঘুমোতেই পারিনি। ওটা আমার পদক ম্যাচ ছিল। প্রচণ্ড টেনশনে ছিলাম। তখন কে-ই বা আমাকে বক্সার হিসেবে চিনত! নিজেকে প্রমাণ করার একটা অন্য রকম তাগিদ ছিল। এখানে সে রকম চাপ আর কোথায়?
প্র: সনি উইটিং আপনার সম্পর্কে বলেছেন, ও তো বাচ্চা ছেলে। দু’-তিন রাউন্ডের বেশি দাঁড়াতে দেব না। আপনি কী বলবেন?
বিজেন্দ্র: দেখুন, আমি মুখে বেশি কথা বলতে চাই না। সনি যা বলছে বলুক। আমি রিংয়ে নেমে ওর কথার জবাব দেব।
প্র: কিন্তু কিছুই কী বলবেন না?
বিজেন্দ্র: (একটু ভেবে) আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, দেখো ভাই সনি, ভারতীয় বক্সিংটা কি জিনিস সেটা কাল রিংয়ে নেমে তোমাকে বুঝিয়ে দেব।
প্র: শনিবার জেতার ব্যাপারে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
বিজেন্দ্র: আমি দারুণ আত্মবিশ্বাসী যে, জিতবই। আমার একটা অস্ত্র হল অভিজ্ঞতা। ভাবছেন তো পেশাদার বক্সিংয়ে প্রথম যে নামছে তার আবার অভিজ্ঞতা কীসের? আমি শুধু পেশাদার বক্সিং নয়, সব মিলিয়ে রিংয়ে আমার অভিজ্ঞতার কথা বলছি। আমি অলিম্পিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে লড়েছি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে লড়েছি। আমার এই অভিজ্ঞতাটাই কিন্তু কাল কাজে আসবে।
প্র: কিন্তু অপেশাদার এবং পেশাদার বক্সিংয়ের মধ্যে ফারাক তো বিস্তর...
বিজেন্দ্র: হ্যাঁ, সে তো বটেই। আসলে অ্যামেচারে আমাকে তিন রাউন্ড লড়তে হত। এখানে লড়তে হবে বারো রাউন্ড। পেশাদার হওয়ার পর আমি এনডিওরেন্স বাড়ানোর উপর অনেক জোর দিয়েছি। সেই বাড়তি সহনশীলতাটা আশা করি কাল কাজে আসবে।
প্র: আপনার ট্রেনিংয়ের মোটিভেশনাল ফ্যাক্টর নিজের প্রথম পেশাদার লড়াইয়ে কতটা কাজ করবে?
বিজেন্দ্র: দেখুন, আমি ভারতীয়। তাই যোগ, ধ্যান এগুলো তো আমার ট্রেনিংয়ের অঙ্গ হবেই। আমি সব সময় ভিসুয়ালাইজ করি রিংয়ে নেমে কী করব। ভিসুয়ালাইজ করি, কী ভাবে রিংয়ে বিপক্ষকে উড়িয়ে দিচ্ছি।
প্র: আপনার আই়ডল কে? কাউকে সামনে রেখে কি শনিবার আপনি রিংয়ে নামছেন?
বিজেন্দ্র: সে রকম এক জন কেউ নেই। এত বিশাল বিশাল বক্সার আছেন। তাদের সবার থেকে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করি। মহম্মদ আলির দুর্দান্ত মুভমেন্ট বা ফ্রেজিয়ারের পাওয়ারফুল পাঞ্চ। এখনকারদের মধ্যে আমির খানের অ্যাটিটিউড— এ রকম সব কিছু থেকেই শেখার চেষ্টা করি।
প্র: আপনি পেশাদার হওয়ার ফলে আর অলিম্পিকে নামতে পারবেন না। এর জন্য অনেক সমালোচনা হচ্ছে। আপনার কি মনে হয় কাল আপনি গোটা ভারতকে পাশে পাবেন?
বিজেন্দ্র: অবশ্যই গোটা দেশের সমর্থন পাব। অলিম্পিকে আমি যেমন দেশকে পাশে পেয়েছি, এখানেও পাব। আমি তো ভারতেরই প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি জিতলে তো ভারতই জিতবে। দেশ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রচুর ফোন আসছে। দেশবাসীর এই ভালবাসাটাই কিন্তু আমার এক্স ফ্যাক্টর।