অতিথি: ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফান্তিনোকে দুর্গা মূর্তি উপহার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র
ফিফা ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ করলে বাংলায় তা করতে জমি দেবে রাজ্য সরকার। এ জন্য রাজারহাটে ১৫ একর জমি দিতে রাজ্য প্রস্তুত। শুক্রবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সম্মানে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ইকো পার্কে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন ফিফার সর্বোচ্চ পদাধিকারীর সঙ্গে। ডোকরার একটি দুর্গা প্রতিমা ইনফান্তিনোর হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ফিফা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘কলকাতার আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। স্টেডিয়াম, হোটেল, পরিকাঠামো অসাধারণ।’’ উত্তরে মমতা বলেন, ‘‘বাংলা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ শুধু নয়, সিনিয়র বিশ্বকাপও করতে প্রস্তুত।’’
ইকো পার্কে রাতের অনুষ্ঠানের আগে অবশ্য ছিল ফিফা প্রেসিডেন্টের সাংবাদিক সম্মেলন। সেখানে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ব্যবস্থাপনা ও দর্শক সমর্থন নিয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেও, দু’বছর পর অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ সংগঠনের দায়িত্ব ভারতকে দেওয়া হবে এ রকম কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি ইনফান্তিনো।
ফিফার কাউন্সিল মিটিংয়ের পর বাইপাসের ধারের এক পাঁচ তারা হোটেলে ফিফার প্রধান কর্তা বলে দিলেন, ‘‘এ বছর এশিয়াতে দুটো টুনার্মেন্ট হয়েছে। অনূর্ধ্ব ২০ এবং অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ। ভারতের মতো অনেক দেশ চাইছে ২০১৯-এর অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ করতে। জানুয়ারির ফিফার সভায় কোথায় তা হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের পাশে বসে সরাসরি প্রতিশ্রুতি না দিলেও একেবারে হতাশ করেননি ফিফার সর্বোচ্চ কর্তা। বলে দেন, ‘‘২০১৯ এর পর যুব বিশ্বকাপের কাঠামো বদলাতে পারে। অনূর্ধ্ব ১৭ উঠে গিয়ে অনূর্ধ্ব ১৮ বা ১৯, একটা বিশ্বকাপই হবে। সেখানে ৪৮টি দেশ খেলবে। সেটা সামনের বছর অক্টোবরে ঠিক হবে। তখন ভারতের সামনে সুযোগ আসতে পারে। কারও সঙ্গে যুগ্মভাবে টুনার্মেন্ট সংগঠন করার।’’ এ দিন ফিফা কাউন্সিলের সভায় রাশিয়া বিশ্বকাপের পুরস্কার অর্থ বারো শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এটাই ছিল ভারতে অনুষ্ঠিত প্রথম ফিফা কাউন্সিলের বৈঠক। সেই বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত ছিলেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল। তিনি সভায় জোরালো সওয়াল করেন, ২০১৯-এর অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ ভারতকে সংগঠিত করতে দেওয়ার জন্য। ফিফা প্রেসি়ডেন্টের পাশে বসে তিনি বলেন, ‘‘এই বিশ্বকাপ নিয়ে ভারতের ফুটবল যেভাবে জেগে উঠেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা দরকার। সেজন্যই ফিফা কিছু টুর্নামেন্ট দিক।’’ তাতে অবশ্য জল ঢেলে দেন ইনফান্তিনো। তিনি বরং হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘ক্রিকেট নয়, ভারত এখন ফুটবলের নতুন উপমহাদেশ হিসাবে ফুটবল বিশ্বে পরিচিতি পেয়ে গেছে।’’