জার্মানি-২ (মুস্তাফি, সোয়াইনস্টাইগার) : ইউক্রেন-০

ফিট বাস্তিয়ানকে পেলে এই জার্মানিও অপ্রতিরোধ্য

রবিবার রাতে কলকাতার জার্মান সমর্থকদের যদি জোয়াকিম লো-র টিমকে দেখে একটু ভয়-ভয় করে, একটা সময় ইউক্রেনের পরের পর আক্রমণে জার্মান ডিফেন্স কেঁপে যাওয়া দেখে যদি টেনশন হয়, তা হলে প্রথমেই বলব ও সব বাদ দিন। ভয় পাবেন না। টেনশন করবেন না।

Advertisement

দীপেন্দু বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৬ ০৯:৩৬
Share:

রবিবার রাতে কলকাতার জার্মান সমর্থকদের যদি জোয়াকিম লো-র টিমকে দেখে একটু ভয়-ভয় করে, একটা সময় ইউক্রেনের পরের পর আক্রমণে জার্মান ডিফেন্স কেঁপে যাওয়া দেখে যদি টেনশন হয়, তা হলে প্রথমেই বলব ও সব বাদ দিন। ভয় পাবেন না। টেনশন করবেন না।

Advertisement

কারণ, জার্মানি মোটেও ইউরো জুড়ে মোটেও এ রকম খেলবে না।

আমি ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির খেলা মাঠে বসে দেখেছি। দেখেছি, আলজিরিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে কাঁপতে থাকা একই টিম ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে সাত গোল দিল। কী ভাবে ওই একই টিম লিওনেল মেসির ফাইনালে আর্জেন্তিনাকে হারিয়ে কাপ নিয়ে চলে গেল। আসলে জার্মানিকে যেমন বিশ্ব ফুটবলে যেমন সবচেয়ে ধারাবাহিক টিম ধরা হয়, ঠিক তেমনই ওদের স্লো স্টার্টারও বলা হয়। টুর্নামেন্টের প্রথম দিকে এমন খেলবে যে দেখে মনে হবে, কোয়ার্টার ফাইনাল পেরোবে না। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেলে দেখবেন কাপটাই নিয়ে চলে গিয়েছে!

Advertisement

রবিবারের দ্বিতীয়ার্ধকেই দেখুন না। নিজের খেলাকে কত দ্রুত ওরা উন্নত করে ফেলতে পারে তার সেরা উদাহরণ তো ইউক্রেন ম্যাচের দ্বিতীয় হাফ। প্রথমার্ধের শেষ দিকে একটা সময় মনে হচ্ছিল যে কোনও সময় মুস্তাফির গোলটা শোধ হয়ে যাবে। ইউক্রেন তখন বল ধরে সোজা ম্যানুয়েল নয়্যার পর্যন্ত চলে আসছিল। একটা হেড নয়্যার দুর্দান্ত ভাবে বাঁচিয়ে দিল। একটা গোল অফসাইড হয়ে গেল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে পুরোটাই জার্মানি খেলে গেল।

বলছি না যে ব্রাজিল বিশ্বকাপের জার্মানি আর এই জার্মানি এক। ইউরোর জার্মানির দুর্বল জায়গা ওদের ডিফেন্স। লো-র অবশ্য কিছু করারও নেই। ফিলিল লাম অবসর নিয়ে‌ ফেলেছে। মার্টেসকার অবসরে। হুমেলস চোট পেয়ে বসে। প্লাস বাস্তিয়ান সোয়াইস্টাইগারকেও ওরা পুরো পাচ্ছে না। সোয়াইনস্টাইগার এ দিন শেষ দিকে মিনিট তিনেক খেলে একটা গোল করে বেরিয়ে গেল। ভাবুন তো, পুরো খেললে কী করত।

আসলে পুরো ফিট সোয়াইনস্টাইগার একা দু’জনের কাজ করে। ও টিম থাকা মানে চারটের বদলে পাঁচটা ডিফেন্ডার নিয়ে নামা। যে কোনও অবস্থায় ব্যাক ফোরের উপর চাপটা পড়তে দেয় না। সামনের দিকে খেলাটাকে অপারেটও করবে। রবিবার প্রথমার্ধে দেখছিলাম, ইউক্রেন প্লেয়াররা বল ধরলে সোজা নয়্যারের কাছাকাছি চলে আসছে। ফিট সোয়াইস্টাইগার থাকলে যা হত না। আবার একই সঙ্গে ক্রুজকে আরও ভয়ঙ্কর দেখাত। এমনিতেই রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার যা খেলল, মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো। ফাইনাল পাস বাড়ানো ছেড়ে দিলাম। গোলের ওই ফ্রিকিকটা? যেটা থেকে মুস্তাফি হেডটা দিল? এক কথায় অসাধারণ। ওজিল-খেদিরাও দুর্দান্ত। আসলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের অনেকে না থাকলেও খেলার স্টাইল একই রেখে দিয়েছে জার্মানি। বিপক্ষকে চাপ দিয়ে-দিয়ে খেলাটাকে তাদের হাফে রেখে দেওয়া। তার পর মারাত্মক গতিতে ঢুকে এসে সব তছনছ করে চলে যাওয়া।

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এখন একটাই কাজ। যত দ্রুত সম্ভব সোয়াইনস্টাইগারকে ফুরো ফিট করে তোলা। ও নেমে গেলে এই জার্মানিকেও আটকানো অসম্ভব হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন