প্রবল গরমের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানকে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে। ছবি: টুইটার
শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্য জুড়েই চলছে তাপপ্রবাহ। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে বেরোতে বারণ করা হচ্ছে। বাস্তবেই রাস্তাঘাটে কোনও লোক দেখা যাচ্ছে না। অবাক করা হলেও, এই গরমে ভরদুপুরে চলছে ফুটবল ম্যাচ! তা-ও আবার যুব ফুটবলারদের। রিলায়্যান্স ফুটবল ডেভেলপমেন্ট লিগে পূর্বাঞ্চলের খেলাগুলি হচ্ছে কলকাতা ও পাশের জেলার তিনটি মাঠে। সেখানেই দুপুর তিনটে থেকে শুরু হচ্ছে ম্যাচ! এই লিগ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
যুবস্তর থেকে ফুটবলার তুলে আনার লক্ষ্যে এই লিগ শুরু করেছে রিলায়্যান্স। বাজারে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু যুব লিগ চালানোর নামে ভরদুপুরে ম্যাচ করে প্রহসন করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সেই লিগে খেলছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানের মতো তিন প্রধানের যুব দল। ম্যাচগুলি নিয়ে উৎসাহও রয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড রোদের তেজ এবং তাপপ্রবাহের কারণে ম্যাচে দর্শক হচ্ছে না। কল্যাণী স্টেডিয়াম, নৈহাটি স্টেডিয়াম এবং ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলি হচ্ছে। অনেক ম্যাচেই ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন অল্প সময়ে। ফলে উত্তেজক ম্যাচ দেখা যাচ্ছে না।
পূর্বাঞ্চলের ম্যাচগুলির আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে আইএফএ। সকাল ৮টা এবং দুপুর ৩টের সময় শুরু হচ্ছে ম্যাচ। সূত্রের খবর, প্রবল গরমে যুব দলের ফুটবলারদের খেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারাও। ইতিমধ্যেই আয়োজকদের অনুরোধ করে দুপুর ৩টের বদলে ম্যাচের সময় পিছিয়ে ৩.৪৫ করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময়েও যা গরম থাকছে, তাতে স্বস্তি পাচ্ছেন না ফুটবলাররা। ৪৫ মিনিটের ফারাকে কোনও লাভই হচ্ছে না।
তিনটি মাঠেই ফ্লাডলাইটের সুবিধা রয়েছে। তা হলে কেন সন্ধের পর খেলাগুলি শুরু করা যাচ্ছে না? এ বিষয়ে বিভিন্ন মত শোনা যাচ্ছে। এই যুব লিগের আয়োজন করছে রিলায়্যান্স। গোটা প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বাজেট রাখা হয়েছে। সেই বাজেট অবশ্যই আইএসএল আয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। যে বাজেট রয়েছে তাতে ফ্লাডলাইটে ম্যাচ আয়োজন করার মতো অর্থ নেই। সে কারণেই তা সম্ভব হচ্ছে না।
তবু আইএফএ-র তরফে আয়োজকদের অনুরোধ করে চেষ্টা চালানো হচ্ছে পুরোটা না হলেও অন্তত আংশিক ভাবে ফ্লাডলাইটে ম্যাচ করানোর। অর্থাৎ, সময় আরও একটু পিছিয়ে যদি বিকেল সাড়ে ৪টে বা ৫টা থেকে ম্যাচ শুরু করা যায়, তা হলে শেষের দিকে কিছুটা অন্তত ফ্লাডলাইটে আয়োজন করা যাবে। এতে খরচও সে ভাবে বাড়বে না, আরাম পাবেন ফুটবলাররাও।
কেন ম্যাচ ফ্লাডলাইটে আয়োজন করা যাচ্ছে না তা জানতে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল আয়োজকদের শীর্ষকর্তা চিরাগ তান্নার সঙ্গে। তিনি বলেন, “এখনও ম্যাচ ফ্লাডলাইটে আয়োজন করা যায়নি। পরে করা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে।” এর পরে কোনও প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দেন। আইএফএ সূত্রের খবর, আয়োজকরা চাইলেই ফ্লাডলাইটে ম্যাচ আয়োজন করতে পারে তারা। কিন্তু অনুমতি এখনও মেলেনি।
এ-ও জানা গিয়েছে, দুপুর ৩টের সময় ম্যাচ রাখা হলেও যে পরিমাণ জল দেওয়া হয় দলগুলিকে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। বড় দলগুলি নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরাই করে নেয়, অসুবিধা হচ্ছে ছোট দলগুলির। ২১ এপ্রিলের মধ্যে আঞ্চলিক খেলাগুলি শেষ করতেই হবে। তার পরে জাতীয় রাউন্ড শুরু হবে। সেখানে ২০টি দলকে চার ভাগে ভাগ করা হবে। গ্রুপের জয়ী দল নকআউট রাউন্ডে খেলবে।
আপাতত এটাই দেখার, দলগুলির অসুবিধার কথা ভেবে বাকি কয়েক দিনের জন্য ফ্লাডলাইটে ম্যাচ আয়োজন করার কথা ভাবা হয় কি না।
ভ্রম সংশোধন
‘১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটির মালিকের আলো জ্বালানোর টাকা নেই! প্রবল গরমে ভরদুপুরে ছোটদের ফুটবল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ভুলবশত ১৮ লক্ষ কোটি এবং ১৮ হাজার কোটি লেখা হয়েছিল। পড়তে হবে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।