অ্যালবামে: প্রয়াণ শান্ত মিত্রের। থেকে যায় কিছু ছবি। ফাইল চিত্র
বেশ কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিন্তু গত কয়েকদিনে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। রবিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক শান্ত মিত্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী এবং এক কন্যাকে।
প্রয়াত ফুটবলারের কন্যা রেশমী মিত্র জানিয়েছেন, ১৮ এপ্রিল থেকে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এ দিন সকাল সাতটা কুড়ি মিনিটে মারা যান শান্ত মিত্র।
তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে শোকাহত ময়দানের ফুটবল মহল। শ্যাম থাপা বলছেন, ‘‘শান্তদা ছিলেন ফুটবলারদের ফ্রেন্ড, ফিলোজফার ও গাইড। যে কোনও সমস্যা ওঁকে গিয়ে বলা যেত। তৃতীয় বার আমাকে লাল-হলুদে ফেরাতে শানুদা-ই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।’’
প্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলারের আর এক সতীর্থ নইমুদ্দিন শোকজ্ঞাপন করতে গিয়ে বললেন, ‘‘আমার দেখা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার চলে গেলেন। একজন উপকারি এবং ভদ্র মানুষকে হারালাম। কোনও দিন বুঝতে দেননি যে আমি ওঁর চেয়ে বয়সে ছোট ছিলাম।’’
ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে শান্ত মিত্রের এক সতীর্থ লাল্টু ভট্টাচার্য বলে গেলেন, ‘‘প্রকৃত নেতা ছিল শানু। যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি অনুকূল করতে ওঁর জুড়ি ছিল না।’’
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য আবার খেলেছেন শান্ত মিত্রের কোচিংয়ে। তাঁর শোকস্তব্ধ প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভারতীয় দলে কোচ চিরিচ মিলোভানের সহকারী ছিলেন শানুদা। অমায়িক ব্যক্তিত্ব। ফুটবলে অগাধ জ্ঞান। অনেক কিছু শিখেছি ওঁর কাছ থেকে। সকালে দুঃসংবাদটা শুনেই মনটা তাই খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’
খেলতেন লেফট ব্যাকে। বিএনআর থেকে ইস্টবেঙ্গলে আসেন ১৯৬৫ সালে। তার পরে লাল-হলুদ জার্সি গায়েই খেলেছেন একটানা আট বছর। ১৯৬৮ সালে মারডেকা ফুটবল প্রতিযোগিতায় জাতীয় দলেও ছিলেন তিনি। তবে বাঙালি ফুটবলপ্রেমীদের কাছে শান্ত মিত্র অমর হয়ে থাকবেন ১৯৭০ সালের ইরানের পাস ক্লাবকে হারানো আইএফএ শিল্ড জয়ী ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক হিসেবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিদেশি টিমের বিরুদ্ধে ক্লাব স্তরে ভারতের কোনও ক্লাবের সেটাই প্রথম জয়। সত্তর দশকে টানা ছ’বার কলকাতা লিগ জয়ী ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম সদস্যও ছিলেন তিনি। খেলা ছাড়ার পর ১৯৮১ সালে মজিদ বাসকর, জামশিদ নাসিরি-দের ইস্টবেঙ্গল টিমে কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিরাশিতে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলেরও কোচ ছিলেন শান্ত মিত্র।
২০০৯ সালে কলকাতার শেরিফ হয়েছিলেন। ২০১২ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব শ্রদ্ধা জানিয়েছিল।