বাংলার ফুটবলে আঁধার: আনন্দবাজারের ময়নাতদন্ত

দু’বছর ধরে বন্ধ আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ

বছর চোদ্দো আগে ঘটা করে জেলা লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সদের নিয়ে শুরু হয়েছিল ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে আনার জন্য স্পটারের ভূমিকায় থাকতেন প্রাক্তন ফুটবলারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

—ফাইল চিত্র

বছর চোদ্দো আগে ঘটা করে জেলা লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সদের নিয়ে শুরু হয়েছিল ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে আনার জন্য স্পটারের ভূমিকায় থাকতেন প্রাক্তন ফুটবলারেরা। কিন্তু গত দু’বছর ধরে বন্ধ এই আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ! চমকের এখানেই শেষ নয়। ২০১৩ সালের ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছিল প্রায় বছর তিনেক পরে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্যামনগরের তরুণ সঙ্ঘ। খেলেছিলেন, সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়, লালকমল ভৌমিকের মতো কলকাতার দুই প্রধান ও জাতীয় দলে খেলা তারকারা।

Advertisement

জেলা লিগে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স দলগুলোকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। খেলা হয় চারটি জ়োনে। প্রত্যেকটি জ়োনের চ্যাম্পিয়ন দলকে নিয়ে সেমিফাইনাল হয় নিরপেক্ষ কোনও মাঠে। সেখানেই হয় ফাইনাল। আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পরে বহু প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার উঠে এসেছিল। কলকাতার লিগের অনেক ক্লাব এই প্রতিযোগিতা থেকে ফুটবলার সই করিয়েছিল। পাশাপাশি বেড়ে গিয়েছিল জেলা লিগের আকর্ষণও।

কেন বন্ধ হয়ে গেল আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ? বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা (আইএফএ)-র সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, আর্থিক সমস্যায় গত দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, ‘‘আমাদের প্রধান সমস্যা আর্থিক সঙ্কট। স্পনসরের অভাবেই দু’বছর ধরে আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ করতে পারিনি।’’ এর পরেই তাঁর আশ্বাস, ‘‘এ বছর এই প্রতিযোগিতা হবে। ইতিমধ্যেই জেলার কর্তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। কবে থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হবে, কোথায় সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হবে তা দ্রুত চূড়ান্ত হবে।’’

Advertisement

জেলার অধিকাংশ ক্লাবের কর্তারাই অবশ্য আইএফএ সচিবের বার্তায় খুব একটা আশাবাদী হতে পারছেন না। তাঁরা বলছেন, ‘‘প্রত্যেক বছরই শুনি, আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ হবে। শেষ পর্যন্ত তা হয় না। আমরা খুব একটা আশার আলো দেখছি না।’’

ভারতীয় ফুটবলের প্রাক্তন তারকা সুব্রত ভট্টাচার্য বিস্মিত আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। তিনি বললেন, ‘‘আমরা যখন খেলতাম, তখন আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল না। আমাদের সময়ে জেলা লিগে চ্যাম্পিয়ন দল আইএফএ শিল্ডের মতো ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পেত। সবাই মাঠে নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে খেলত। পরে আন্তঃজেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করে আইএফএ। দারুণ সাড়া পরে গিয়েছিল। অথচ সেই প্রতিযোগিতা গত দু’বছর ধরে বন্ধ।’’ ক্ষুব্ধ সুব্রত যোগ করলেন, ‘‘বাংলার ফুটবলকে সমৃদ্ধ করেছিল জেলার ছেলেরাই। দুই চব্বিশ পরগনা, হুগলি, হাওড়া থেকে অসংখ্য ফুটবলার উঠে এসেছে। সেই জেলার ফুটবলকেই এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন