জোরকদমে: অনুশীলন ভগৎ সিংহ স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র
কয়েকটি মেয়ের খুব ইচ্ছে ছিল, ফুটবল পায়ে তারাও মাঠ দাপাবে ছেলেদের মতো। তাদের এই ‘ইচ্ছেপূরণ’ করতেই দুর্গাপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা প্রথম বার অনূর্ধ্ব ১৫ স্তরের প্রশিক্ষণ শিবিরে মেয়েদেরও যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগৎ সিংহ স্টেডিয়ামে ৩২ জন মেয়ে ও ৩০ জন ছেলেকে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে শিবির। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি, এই তিন দিন মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। প্রশিক্ষণ চলে সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে ন’টা পর্যন্ত।
প্রশিক্ষণ শিবিরের দরজা মেয়েদের জন্যও খুলে দেওয়া হল কেন? সংস্থার এক কর্তা জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল, কয়েক জন মেয়ে ফুটবল নিয়ে আগ্রহী। কিন্তু বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা-সহ নানা কারণে তারা মাঠ পর্যন্ত আসতে পারছে না। তাই পলাশডিহা, পিয়ালা, কলাবাগান বস্তি, ভ্যাম্বে কলোনি, মামরা গ্রাম, আমরাই-সহ শহরের বেশ কিছু এলাকা থেকে স্থানীয় ক্লাবের সাহায্যে ৩২ জন মেয়েকে বেছে নেওয়া হয়।
প্রশিক্ষকদের দাবি, খুদে খেলোয়াড়দের ডায়েট চার্টের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। টিফিনে থাকছে চারটি রুটি, ডিম ও তরকারি। কোনওদিন স্যুপ। বাসভাড়া, জার্সি ও অন্যান্য ক্রীড়া সরঞ্জামও দেওয়া হচ্ছে শিবির থেকে। আর্থিক সহযোগিতা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনএসপিসিএল।
গত বছর এখান থেকেই চার জন ছেলে রাজ্য স্তরের শিবিরে ডাক পায়। তাদের মধ্যে দু’জন আবার কেন্দ্রীয় সরকারের ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৯ স্তরে রাজ্য দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে। ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তাপস সরকারের আশা, ‘‘এ বার ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও সাফল্য আনবে।’’
এমন সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে মনিকা সিংহমুণ্ডা, লক্ষ্মী টুডু, রুমা টুডুরাও। কেউ সাইকেলে চড়ে, কেউ বা বাসে ঝুলতে ঝুলতে ফি দিন সময়মতো চলে আসছে শিবিরে। তাদের কথায়, ‘‘খুব ইচ্ছে হতো, জার্সি পরে মাঠে নামব। ভাল কিছু করতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব।’’