harmanpreet kaur bhullar

মেয়ের গর্বে দারুণ বার্তা পাঠালেন হরমনপ্রীতের মা

হরমনপ্রীতের ব্যাটে ১৭১ রানের বিরাট ইনিংস। ছাপিয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের সব বিশ্বকাপ রেকর্ডকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নক-আউট পর্বে এই রান নেই কারও। না ছেলেদের না মেয়েদের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ১৭:৩৫
Share:

হরমনপ্রীত কৌর।ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন মুখ।

গত রাতটা অন্যরকম ছিল পঞ্জাবের মোগায়। এতটা ভেবেও কেউ খেলা দেখতে বসেননি। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ম্যাচের রঙ বদলেছে ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার মতই। আর সেই বদলের কারিগর অবশ্যই তাঁদের গ্রামের মেয়ে। তার পরই যেন বার্তাটা ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। দেশ থেকে বিদেশ। এক মায়ের বার্তা, মেয়ের জন্য। সব কন্যা সন্তানের বাবা-মাদের জন্য। প্রশ্ন তুলে দিলেন কন্যা ভ্রূণ হত্যা নিয়ে। সেই মা আর কেউ নন, তিনি এই মুহূর্তে সব থেকে সেলিব্রিটি মা। হরমনপ্রীত কৌরের মা।

Advertisement

আরও খবর: কপিল-ঝড় মনে করাল ‘হারিকেন’ হরমনপ্রীতের বিধ্বংসী ইনিংস

বিরাট কোহালির সঙ্গে তুলনা হচ্ছে হরমনপ্রীতের। বিশ্ব মঞ্চে দু’জনেই প্রমাণ করে দিয়েছেন তাঁদের আক্রমণাত্মক ব্যাটের কাছে উড়ে যায় সকলেই। তবুও কোথাও একটা পার্থক্য থেকে যায়। থেকে যায় লিঙ্গ বৈষম্য। যে বৈষম্যের শিকার হতে হয় প্রায় সব মহিলা ক্রীড়াবিদকেই। যে কারণে মিতালি রাজকে শুনতে হয় তাঁর প্রিয় পুরুষ ক্রিকেটারকে? তাই যখন মেয়ের চওড়া ব্যাটে ভারতের জয় লেখা হয় তখন পঞ্জাবের গ্রামে বসে আসল বার্তাটা দিয়ে দেন এক রত্নগর্ভা। বলে দিলেন, ‘‘মেয়েদের অবশ্যই নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তাঁদের গর্ভেই মেরে ফেলা যায় না। যে ভাবে আমার মেয়ে দেশকে গর্বিত করেছে অন্য মেয়েরাও তা দেখে উদ্বুদ্ধ হবে।’’

Advertisement

এভাবেও উইকেট পতন বাঁচালেন হরমনপ্রীত কৌর।

প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রকৃতি। বৃষ্টির জন্য ৫০ ওভার থেকে ম্যাচের সময় কমে দাঁড়িয়েছিল ৪২ ওভারে। দুই ওপেনার দ্রুত প্যাভেলিয়নে ফেরার পর ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন হরমনপ্রীত কৌর। দলের ওই অবস্থায় যখন ঘরের মেয়ে নামছেন মাঠে তখন যেন টেনশনটা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। সঙ্গে বিশ্বাসও ছিল। গোটা গ্রাম হাজির হয়েছিল ওই বাড়িটায়। শেষটা উৎসবের। গ্রামের মেয়ের ব্যাটে ১৭১ রানের বিরাট ইনিংস। ছাপিয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের সব বিশ্বকাপ রেকর্ডকে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নক-আউট পর্বে এই রান নেই কারও। না ছেলেদের না মেয়েদের। হরমনপ্রীতের বাবা বলেন, ‘‘আমরা চাই পরের বাঁধাটাও ও পেড়িয়ে যাক। বিশ্বকাপ জিতে দেশকে গর্বিত করুক।’’

সেঞ্চুরির পর সতীর্থের আলিঙ্গনে হরমনপ্রীত।

বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষ হতেই ঢোল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন গ্রামের মানুষরা। ওই রাতেই হরমনপ্রীতের পরিবারের পক্ষ থেকে মিষ্টি খাওয়ানো হয় প্রায় পুরো গ্রামকে। হরমনপ্রীতের বোন বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই ও ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে। ওর রানের খিদে কখনও হারাতে দেখিনি। যেটা ওর স্ট্রাইক রেট দেখলেই বোঝা যায়। মাঠে ওর আক্রমণাত্মক মানসিকতা অনেকটা বিরাট কোহালির মতো। কিন্তু মাঠের বাইরে ও খুব শান্ত।’’ হরমনপ্রীতের আইডল অবশ্য বীরেন্দ্র সহবাগ। ওঁর মতই ব্যাট করার চেষ্টা করে এসেছেন। হরমনপ্রীতের এটা ছিল তৃতীয় সেঞ্চুরি। যা সাজানো ছিল ২০টি বাউন্ডারি ও ৭টি ওভার বাউন্ডারিতে। ৫১ থেকে ১০০তে পৌঁছতে হরমনপ্রীত মাত্র ২৬টি বল খেলেছিলেন। ১০১ বলে করেছিলেন ১৫০ রান। অজি বোলাররা হরমনপ্রীতকে আটকানোর কোনও রাস্তাই খুঁজে পাননি শেষ পর্যন্ত।

ছবি: রয়টার্স, এপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন