আনন্দবাজারকে সিন্ধু

‘স্ম্যাশটাকে অস্ত্র করতে বলেছিলেন গোপী স্যার’

কাঁধে ঝোলানো সাদা তোয়ালে। ঘামে ভিজে জবজবে। হলুদ সেই পয়মন্ত ব্রাজিলিয়ান রঙের টি-শার্ট কাম জামাটা, সেটাও রয়েছে। একবার ছুঁয়ে দেখার আকুতি। একশো কুড়ি কোটির অপেক্ষমান জনগনের জন্য রুপো নিশ্চিত করে সোনার স্বপ্ন দেখানো মেয়ে যখন আসছেন, তখন মনে হচ্ছিল সত্যিই তিনি টেনিস-রানি। থুতনির তিলটা তাঁকে যতটা না আকর্ষণীয় করেছে, তার চেয়ে বেশি টানল পুসরলা বেঙ্কটা সিন্ধু-র কথাবার্তা। কয়েকশো মিডিয়া প্রতিনিধির সঙ্গে ছাড়াও আনন্দবাজারের সঙ্গে আলাদা কথা বললেন তিনি।কাঁধে ঝোলানো সাদা তোয়ালে। ঘামে ভিজে জবজবে। হলুদ সেই পয়মন্ত ব্রাজিলিয়ান রঙের টি-শার্ট কাম জামাটা, সেটাও রয়েছে। একবার ছুঁয়ে দেখার আকুতি। একশো কুড়ি কোটির অপেক্ষমান জনগনের জন্য রুপো নিশ্চিত করে সোনার স্বপ্ন দেখানো মেয়ে যখন আসছেন, তখন মনে হচ্ছিল সত্যিই তিনি টেনিস-রানি। থুতনির তিলটা তাঁকে যতটা না আকর্ষণীয় করেছে, তার চেয়ে বেশি টানল পুসরলা বেঙ্কটা সিন্ধু-র কথাবার্তা।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪৮
Share:

প্রশ্ন: তা হলে স্বপ্ন সত্যি হল। রুপো তো নিশ্চিত। এ বার সোনার লড়াই।

Advertisement

পিভি: আমার স্বপ্ন এখনও পূর্ণ হয়নি। যে আশা নিয়ে রিওয় এসেছি, সেটা পূর্ণ করার জন্য এখনও একটা ম্যাচ বাকি। তার আগে আমার লড়াই শেষ হবে না।

Advertisement

প্রশ্ন: তা হলে সোনা জেতার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছেন?

পিভি: আমার বিপক্ষে যে খেলবে সে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ওর সেমিফাইনাল ম্যাচটা আজ আমি দেখেছি। খুব ভাল খেলেছে। ওকে হারানোর জন্য কোচ নিশ্চয়ই স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দেবেন। ক্যারোলিনা মারিনের সঙ্গে আমি আগে খেলেছি। ও আমাকে জানে। আমিও। ফোকাসটা ঠিক রাখছি অন্য ম্যাচের মতোই।

প্রশ্ন: আজ জাপানি নোজোমির সঙ্গে খেলার সময় কয়েকবার চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। অনেক সময় ভুল খেলে নিজের উপর বিরক্তিও প্রকাশ করছিলেন। হেরে যাওয়ার কথা মনে হচ্ছিল?

পিভি: একেবারেই না। আসলে আমি রিও-র জন্য প্রচুর প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। গত মরসুমটা তেমন ভাল যায়নি। তাই গোপী স্যারের অ্যাকাডেমিতে দিন-রাত প্রচুর খেটেছি। হারার কথা ভাবিনি এক বারও। আপনি যদি একেবারে সিওর স্ম্যাশের পয়েন্ট বা প্লেসিং পয়েন্ট থেকে সামান্য ভুলের জন্য বঞ্চিত হন, তা হলে নিজের উপর একটা রাগ তো হয়ই। গোপী স্যার অবশ্য সারাক্ষণ আমাকে সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন পাশ থেকে।

প্রশ্ন: এই ম্যাচটাকে কি আপনি আগের ম্যাচের চেয়ে এগিয়ে রাখবেন?

পিভি: দু’টো দু’রকম ম্যাচ। দু’টোই যথেষ্ট লড়াই করে আমাকে জিততে হয়েছে। আমি ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে এগোতে চাইছি। স্বপ্ন থাকলেও কখনও ভাবিনি এখানে পৌঁছব। ভেবেছিলাম, পদক পেতে হলে একটার পর একটা ম্যাচ জিততে হবে। সেটাই করছি।

প্রশ্ন: তা হলে এটাই সেরা ম্যাচ বলবেন?

পিভি: এ ভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে এটা মেডেল-ম্যাচ ছিল বলে একটু হলেও বেশি গুরুত্ব পাবে। জেতার পর মনে হচ্ছে অসাধারণ মুহূর্ত। ওকুহারা কিন্তু খুব ভাল খেলল। দারুণ র‌্যালি করছিল। প্রতিটি পয়েন্টের জন্য লড়াই করেছে।

প্রশ্ন: সবাই বলছে আপনার উচ্চতা আর অসাধারণ সব স্ম্যাশ আপনাকে এত সহজ জয় এনে দিল।

পিভি: (ভ্রু কুচকে) কী বলছেন? ও তো আমাকে প্রথম গেমে যথেষ্ট চাপে ফেলে দিয়েছিল। আর উচ্চতা? ওটা তো ঈশ্বরের দান। যে যে ভাবে ব্যবহার করে। আর ওকে চাপে রাখতে স্ম্যাশটা অস্ত্র করতে বলেছিলেন আমার কোচ। সেটা করেছি। ফলও পেয়েছি।

প্রশ্ন: আপনি যদি সোনা পান তা হলে তো ইতিহাস হবে। অভিনব বিন্দ্রার সঙ্গে একাসনে তো বসবেনই, ভারতের ইতিহাসে কোনও মেয়ে যা করেননি তা-ই করবেন। পুরো ভারত তো আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে।

পিভি: (স্বপ্নালু হাসি ছড়িয়ে পড়ল মুখে) আপনারা আমার জন্য প্রার্থনা করুন। আমি যেন ফোকাসটা ঠিক রাখতে পারি। দেখি পারি কি না। তবে স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য আমার চেষ্টার কোনও ত্রুটি থাকবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন