বাইলস-সেরিনা। বিস্ফোরক ডোপিং অভিযোগের মুখে।
বিস্ফোরক দাবি এবং তার পাল্টা জবাব। মঙ্গলবার রাতে এই নিয়ে তুলকালাম পড়ে গেল আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামহলে।
বিস্ফোরক দাবিটা করেছিল রাশিয়ার হ্যাকার গ্রুপ ‘ফ্যান্সি বিয়ারস’। ওয়াডার (বিশ্ব ড্রাগ বিরোধী সংস্থা) ওয়েবসাইট হ্যাক করার পর তারা অভিযোগ করে, রিও অলিম্পিক্সে চারটে সোনা জেতা সিমোন বাইলস ডোপ করেও ছাড় পেয়ে গিয়েছেন। ডোপ করার তালিকায় রয়েছেন সেরিনা উইলিয়ামস, ভিনাস উইলিয়ামসও।
হ্যাকারদের দাবি, ওয়াডার ডেটাবেসে মার্কিন অ্যাথলিটদের সম্পর্কে এ সব তথ্য পাওয়া গিয়েছে। হ্যাকারদের বক্তব্য, দশ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মার্কিন জিমন্যাস্ট বাইলস অগস্টে নিষিদ্ধ মিথাইলফেনিডেট নেন। কিন্তু তবু তাঁকে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়নি। শুধু তাই নয়, ২০১৩, ২০১৪-তেও ডেক্সট্রোয়ামফেটামিন নিয়ে বেঁচে যান বাইলস। একই ভাবে নাকি সদ্য বিশ্বসেরার সিংহাসন হারানো সেরিনা উইলিয়ামসও ২০১০, ২০১৪ আর ২০১৫-তে অক্সিকোডোন, হাইড্রোমরফোন, প্রেডনিসোন, মিথাইলপ্রেডনিসোলোনের মতো নিষিদ্ধ ড্রাগ নেন।
গভীর রাতে এর পাল্টা আসে মার্কিন ডোপ বিরোধী সংস্থা এবং আইওসি-র তরফে। তারা জানায়, নিয়ম মেনেই এই নিষিদ্ধ ওষুধ নিয়েছেন অ্যাথলিটরা। ‘‘ভাবাই যায় না এমন একচটা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বেআইনি ভাবে হ্যাকাররা গোপন ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেয়ে অ্যাথলিটদের দোষী দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু অ্যাথলিটরা অন্যায় কিছু করেনি। নিয়ম মেনেই তাঁরা এই ওযুধগুলো নিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য। ওযুধ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি মানার পর তাঁদের আইওসি আর মার্কিন ডোপ বিরোধী সংস্থা অনুমতি দিয়েছে। এ ভাবে সাইবার আক্রমণে নিরপরাধ অ্যাথলিটদের কলঙ্কিত করার চেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি আমরা।’’ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থাও একই দাবি করে অ্যাথলিটদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে ডোপিংয়ের জন্য রুশ অ্যাথলিট টিমকে সাসপেন্ড করে ওয়াডা। এ বার রুশ হ্যাকারদের এই আক্রমণের পর মনে করা হচ্ছে, রুশ-মার্কিন নতুন একটা যুদ্ধ শুরু হল।
‘‘ওয়াডার ডেটাবেস হ্যাক করে আমরা দেখেছি অনেক মার্কিন অ্যাথলিটেরই ডোপ পরীক্ষা পজিটিভ এসেছে। অনুমতি থাকার সার্টিফিকেট দেখিয়ে রিও অলিম্পিক্সে পদকজয়ীরা অ্যাথলিটরাও নিয়মিত নিষিদ্ধ ওষুধ খেয়েছেন। অন্য ভাবে বললে ডোপিং করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল এই অ্যাথলিটদের। এতেই প্রমাণ হয় ওয়াডা আর আইওসি কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত,’’ দাবি ফ্যান্সি বিয়ারস হ্যাকার গ্রুপের।
হ্যাকার গ্রুপের এই চাঞ্চল্যকর দাবির পরই বিশ্ব ডোপ বিরোধী সংস্থাও স্বীকার করে নিয়েছে তাদের ডেটাবেস হ্যাক হওয়ার কথা। এবং এর পিছনে যে রাশিয়ান হ্যাকারদেরই সন্দেহ করা হচ্ছে সেটাও জানিয়েছে তারা। ‘‘এ ভাবে অ্যাথলিটদের গোপন মেডিক্যাল তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসার জন্য আমরা অসম্ভব দুঃখিত,’’ জানিয়েছেন ওয়াডার ডিরেক্টর জেনারেল অলিভিয়ার নিগলি।
গত এক মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ওয়াডার ডেটাবেস হ্যাক হল। ওয়াডাও সেটা স্বীকার করেছিল।