বিশ্বাস হচ্ছে না ইংল্যান্ড কোচের

ইতিহাস গড়ে ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ কুপার অভিভূত। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলেদের এই লড়াই আমাকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে।’’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘‘এই জয় শৃঙ্খলা, ব্যক্তিগত দক্ষতা ও ইংল্যান্ড ফুটবলের। ০-২ পিছিয়ে থেকে ৫-২ জিতে ফেরাই সেটা প্রমাণ করে।’’

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৪৯
Share:

নায়ক: সেরা ফুটবলারের পুরস্কার নিয়ে ফোডেন। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

দু’গোলে পিছিয়ে গিয়েও ৫-২ জিতে ফেরা। তাও আবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের প্রথম ট্রফি জেতার ম্যাচ! যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না ইংল্যান্ড কোচের।

Advertisement

ইতিহাস গড়ে ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ কুপার অভিভূত। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলেদের এই লড়াই আমাকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে।’’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘‘এই জয় শৃঙ্খলা, ব্যক্তিগত দক্ষতা ও ইংল্যান্ড ফুটবলের। ০-২ পিছিয়ে থেকে ৫-২ জিতে ফেরাই সেটা প্রমাণ করে।’’

সাংবাদিক সম্মেলনে এর পরে অবধারিত ভাবে প্রশ্ন করা হয়, এটা কি ইংল্যান্ড ফুটবলে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় হাসিল করার অন্যতম সেরা ম্যাচ?

Advertisement

শুনে প্রথমে হাসেন ইংল্যান্ড কোচ। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল আমাদের। কিন্তু পিছিয়ে গিয়েও আমার দলের বিশ্বাস ছিল, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ইংল্যান্ডের হাতেই রয়েছে। স্পেনের কাছে নয়। বিরতিতে ছেলেদের বলেছিলাম, চিন্তার কিছু নেই। নিজে কখনই চিন্তিত হয়ে পড়িনি। জানতাম, ফাইনাল থার্ডে ঠিকঠাক বল রাখতে পারলে আমরাই জিতবো। তার পরে ছেলেরা যে ফুটবলটা খেলল, তার জন্য আমি সত্যিই গর্বিত।’’

ইংল্যান্ডের এ দিনের জয়ের নায়ক ফিল ফোডেন। টুর্নামেন্টে সোনার বলজয়ী এই ফুটবলারের প্রশংসার পাশাপাশি ইংল্যান্ড কোচের মুখে শোনা গেল তাঁর দলের সোনার বুট জয়ী রিয়ান ব্রিউস্টার-এর নামও। কুপার বলেন, ‘‘মোক্ষম সময়ে গোলটা করেছিল ব্রিউস্টার। সেখান থেকেই ম্যাচে ফেরার মানসিক শক্তি পেয়ে গিয়েছিল গোটা টিম।’’

একটু থেমে তিনি বিশ্বকাপ উৎসর্গ করেন তাঁর দেশের ফেডারেশনকে। বলেন, ‘‘এই সাফল্য উৎসর্গ করছি এফএ ও অ্যাকাডেমিগুলোকে। গত তিন চার বছর ধরে এই সাফল্যের জন্য অমানুষিক পরিশ্রম ও সহযোগিতা করে গিয়েছে ওরা।’’

১৯৬৬ সালের পরে কোনও পর্যায়ের ফুটবলেই এর আগে বিশ্বকাপ জেতেনি ইংল্যান্ড। সেখান থেকে চলতি বছরে অনূর্ধ্ব-২০ ও অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। কলকাতায় কাপ জিতে তা গোপন করেননি ইংল্যান্ড কোচ। বলেন, ‘‘ইংল্যান্ডের ফুটবল একটা বিশেষ পর্যায়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তা যে ঠিকঠাক এগোচ্ছে, সেটা প্রমাণ করছে একই বছরে দুই বিশ্বকাপ জয়। এই ইংল্যান্ড টিম আর লং বল তত্ত্বে বিশ্বাস করে না। এই ইংল্যান্ড দলের মূলমন্ত্র পাস, পাস আরও পাস।’’

চলতি বিশ্বকাপে সাতটি ম্যাচের মধ্যে ছ’টি ম্যাচই ইংল্যান্ড খেলেছে কলকাতায়। তাই কলকাতা ও ভারতকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি ইংল্যান্ড কোচ। অন্যদিকে, ম্যাচ হেরে হতাশ স্পেন কোচ সান্তিয়াগো দেনিয়া স্যাঞ্চেস। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেরা দুর্দান্ত খেললেও এই হারের ফলে হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। তবে পৃথিবী এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না।’’

স্পেন কোচের কথায়, ‘‘২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরেও মনে হয়নি, এই ম্যাচ হারতে পারি আমরা। কিন্তু এর পরেই রক্ষণে বহু ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছিল। তার সুযোগ নিয়ে গেল ইংল্যান্ড। শেষ তিরিশ মিনিটেই ম্যাচটা বার করে নিয়ে গেল ইংল্যান্ড। ২-৩ পিছিয়ে থাকার সময়েও ৩-৩ করার একটা সুযোগ এসেছিল। তা করতে না পারায় ম্যাচ থেকে ছিটকে
যাই আমরা।’’

ইংল্যান্ড কোচ এ দিনের নায়ক ফিল ফোডেনকে সে ভাবে প্রচারমাধ্যমের সামনে প্রশংসা না করলেও স্পেন কোচ কিন্তু স্বীকার করে যান, ফোডেনের অনবদ্য পারফরম্যান্সই জয় থেকে ছিটকে দিয়েছে স্প্যানিশদের। তাঁর কথায়, ‘‘রাইট উইং থেকে কাট করে ভিতরে ঢুকে বার বার সমস্যা করছিল ফোডেন। ওকে আটকাতে পারেনি আমাদের রক্ষণ। ও দারুণ ফুটবলার। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে ওর সামনে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন