মহম্মদ সিরাজ। ছবি: সংগৃহীত।
আইপিএল-এ অভিষেক হয়েছে এই বছরই। ইতিমধ্যেই আগামী বছরের জন্য হায়দরাবাদ দলে জায়গা করে নিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। নিলামে ২ কোটি ৬০ লাখে তাঁকে কিনে নিয়েছে তারা। কিন্তু, এই সফরের পিছনে রয়েছে এক কঠিন লড়াই। অটো-চালক বাবার সামান্য রোজগারে ক্রিকেট খেলা ছিল তাঁর জন্য বিলাসিতা। কিন্তু সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ছেলে আজ ভারতীয় দলের জার্সি পরতে চলেছে।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ দলে সুযোগ এসে গিয়েছে সিরাজের। কিন্তু গত মরসুমে আইপিএল-এ সুযোগ পাওয়ার পরই বাবাকে বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আর অটো চালাতে হবে না।’’ সে দিন থেকে অটো চালানো ছেড়ে দিয়েছেন সিরাজের বাবা মহম্মদ ঘাউস। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে সিরাজ বলছিলেন, ‘‘আমার এটা ভেবে ভাল লাগছে, মাত্র ২৩ বছর বয়সে আমি পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে পেরেছি। যে দিন আমি আইপিএল-এ চুক্তি করি, সে দিনই বাবাকে বলে দিয়েছিলাম আমি আমার তাকে কাজ করতে দেব না। এখন থেকে বিশ্রাম করতে বলি। এখন আমি পুরো পরিবার নিয়ে নতুন বাড়িতেও উঠে এসেছি।’’
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ দল ঘোষণা, দেখে নিন টিম লিস্ট
আইপিএল-এ হায়দরাবাদের হয়ে যেমন ভাল পারফরম্যান্স রয়েছে সিরাজের, তেমনই ইন্ডিয়া ‘এ’ দলের হয়েও রয়েছে। কিন্তু সিনিয়র দলে এত দ্রুত জাক আসবে স্বপ্নেও ভাবেননি। বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম এক দিন আমি নিশ্চয়ই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাব। এত তাড়াতাড়ি সেটা হবে ভাবিনি। আমি বলে বোঝাতে পারব না আমি কতটা খুশি। আমি যখন বাবা-মাকে জানাই তখন তারা কোনও কথা বলতে পারেননি। এটা একটা স্বপ্ন সফল হওয়া।’’ সোমবারই ভারতীয় দলে ডাক এসেছে মঙ্গলবার কর্নাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ খেলতে নামবেন তিনি। সিরাজের মতে ২০১৬-১৭ মরসুমে হায়দরাবাদের হয়ে র়ঞ্জি ট্রফিতে তাঁর ভাল খেলাই তাঁকে আইপিএল-এ জায়গা করে দিয়েছিল। বলেন, ‘‘আজকে আমি যেখানে পৌঁছেছি সেটা অবশ্যই রঞ্জি ট্রফির পারফরম্যান্সের জন্য। গত মরসুমে আমার ৪০টি উইকেট আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উইকেট পাওয়ার মতো ভাল আর কিছু হতে পারে না।’’
আরও পড়ুন
বিরাটকে টুইট জোনসের, মূহূর্তের মধ্যে ট্রোলড টুইটারে
তাঁর সাফল্যের পিছনে ভারতীয় দলের বোলিং কোচ ভরত অরুণেরও যে বড় ভূমিকা রয়েছে সেটা বলতে ভোলেননি তিনি। হায়দরাবাদে থাকার সময় তাঁকে কাছ থেকে পেয়েছেন সিরাজ। বলেন, ‘‘আমি ভরত অরুণ স্যরের কাছে কৃতজ্ঞ। ও দারুণ কোচ। গত বছর তিনি হায়দরাবাদ দলের সঙ্গে ছিলেন। আর সেই প্রথম আমি বুঝতে পারলাম কী ভাবে নিজের বোলিংয়ের পরিবর্তন এনে এই পর্যায়ে টিকে থাকা যায়।’’ ভরত অরুণের পাশাপাশি ভুবনেশ্বর কুমার ও আশিস নেহরাকেও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি সিরাজ। যদিও রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে বেশি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে নাই করে দিয়েছেন। সিরাজ বলেন, ‘‘দ্রাবিড় স্যর আমাকে বলেছে আমার বোলিংয়ে কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। তাঁর সহজ বক্তব্য, সেটাই কর যেটা এত দিন তোমাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আশা করি এই পর্যায়েও সেটা ধরে রাখতে পারব।’’