আই লিগ নিয়ে ডামাডোল

দিল্লি হাইকোর্টের নজিরবিহীন রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর দিল্লির ফুটবল হাউস চূড়ান্ত অস্বস্তিতে। সেখানে এ রকমই সব নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। ফুটবলের ভরা মরসুম শুরু হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই। চলবে পাঁচ মাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৫
Share:

পাঁচ মাসের মধ্যে দু’বার নির্বাচন করতে হবে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন! কোনও সর্বভারতীয় সংস্থায় কখনও যা হয়নি।

Advertisement

আদালত নিযুক্ত প্রশাসক যোগ দেবেন দু’সপ্তাহ পরে। সেই নির্দেশও আছে।

প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া কোনও আর্থিক লেনদেন করা যাবে না।

Advertisement

দিল্লি হাইকোর্টের নজিরবিহীন রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর দিল্লির ফুটবল হাউস চূড়ান্ত অস্বস্তিতে। সেখানে এ রকমই সব নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।

ফুটবলের ভরা মরসুম শুরু হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই। চলবে পাঁচ মাস। কর্তারা ভেবে পাচ্ছেন না, দু’বার নির্বাচনের মধ্যে কী ভাবে সামলাবেন সমস্ত কিছু। আই লিগের সংগঠন নিয়েও রয়েছে নানা ধোঁয়াশা। ২৪ বা ২৫ নভেম্বর আই লিগ শুরু করতে চাইছে ফেডারেশন। কর্তারা ঠিক করে রেখেছেন, লিগ শুরুর আগে ১১ নভেম্বর দিল্লিতে লুইস নর্টন দে মাতোস, সঞ্জয় সেন, খালিদ জামিল-সহ দশ টিমের কোচেদের এক সঙ্গে বসিয়ে ট্রফি উদ্বোধন করে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। কিন্তু সেগুলো কি সব ঠিকঠাক হবে?

আই লিগের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুনন্দ ধর বললেন, ‘‘আদালত বা প্রশাসক কেউ তো ফুটবল বন্ধ করতে চাইবেন না। আশা করছি কোনও সমস্যা হবে না। সব ঠিকঠাক চলবে।’’ আই লিগের প্রধান অফিস-কর্তা সুনন্দ এ কথা বললেও ফেডারেশন কর্তাদের বেশির ভাগের মনেই আদালতের রায়ের প্রভাব কী হতে যাচ্ছে, স্পষ্ট করে জানেন না।

ময়দানের এক নামী আইনজীবী, যিনি আবার ফেডারেশন ঘনিষ্ঠও তিনি শনিবার পুরো রায় দেখে তিনটি প্রশ্ন তুলেছেন। এক) আই লিগ শুরুর আগে প্রতিটি ক্লাবকে দশ থেকে পনেরো লাখ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রায় দেড় কোটি টাকা। সেটা কী ভাবে দেওয়া হবে? কারণ প্রশাসক যদি এত দেরিতে যোগ দেন তা হলে টাকার যোগান আসবে কী করে?

দুই) রায়ে কোথাও পরিষ্কার করে বলা নেই যে, ফেডারেশনের নির্বাচিত কর্মসমিতির সঙ্গে লিগ কমিটি, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিগুলোকেও ভেঙে দেওয়া হয়েছে কি? কারণ আই লিগ চালানোর সময় তো এই দু’টি কমিটি অপরিহার্য। তা ছাড়া লিগের সূচির অনুমোদনই বা দেবে কে?

আদালতের রায় দেখার পর ফেডারেশনের এক পদ-হারানো কর্তা দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘রায় দেখার পর আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না কী করব। পাঁচ মাসে দু’বার নির্বাচন কখনও শুনিনি। বুঝতে পারছি না সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া ঠিক হবে কি না। প্রেসিডেন্ট আগে ঠিক করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। এখন তিনিই ঠিক করবেন কী ভাবে এগোনো হবে।’’

জানা গিয়েছে, আই লিগ ঠিকঠাক শুরু যাতে হয় সে জন্য আদালত নিযুক্ত প্রশাসক এস ওয়াই কুরেশিকে সোম বা মঙ্গলবার থেকে ফুটবল হাউসে আসতে অনুরোধ করতে পারেন ফেডারেশন কর্তারা। যে-হেতু রায়ে কোথাও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নেই, তাই কর্তারা বেশ স্বস্তিতে। আদালত নিযুক্ত প্রশাসক প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার কুরেশি আবার ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল এবং সচিব কুশল দাশের ঘনিষ্ঠ। কুশলবাবুর সঙ্গে একই কলেজে পড়তেন তিনি। ফলে ফুটবল চালানোর জন্য কুরেশি তাঁদের কথা শুনবেন বলেই মনে করছেন ফুটবল কর্তারা। সুনন্দ বলছিলেন, ‘‘আই এসএল তো শুরু হয়ে যাচ্ছে আই লিগের আগেই। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি-ই যদি না থাকে তা হলে হঠাৎ কোনও সমস্যা তৈরি হলে মেটাবে কে?’’

শোনা যাচ্ছে, প্রশাসকের কাছ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অনুমতি নিয়ে লিগ কমিটি বা শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে কাজ করার সিলমোহর চাওয়া হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পাশাপাশি ফুটবলটাও চলুক চাইছেন ফেডারেশন কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন