রোহিতের ইডেন-প্রেমে ‘ভিলেন’ হতে চাই

এক দিকে এখন ডেভিড ওয়ার্নারের তরুণ আরসিবি বোলিংকে বেধড়ক ঠ্যাঙানোর লাইভ কভারেজ চলছে টিভিতে। আর এক দিকে আমার ছোট্ট মেয়ে আজিনের দুষ্টুমি চলেছে এত রাতে কেকেআরের টিম হোটেলের ঘরে। গোটা ঘর ঘুরপাক খাচ্ছে ও। কিছুতেই ঘুমোতে চাইছে না।

Advertisement

গৌতম গম্ভীর

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১৯
Share:

ইডেনে রোহিত শর্মার ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস

এই কলামটা লেখার সময় দু’টো ব্যাপার বিরাট ভাবে আমার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।

Advertisement

এক দিকে এখন ডেভিড ওয়ার্নারের তরুণ আরসিবি বোলিংকে বেধড়ক ঠ্যাঙানোর লাইভ কভারেজ চলছে টিভিতে। আর এক দিকে আমার ছোট্ট মেয়ে আজিনের দুষ্টুমি চলেছে এত রাতে কেকেআরের টিম হোটেলের ঘরে। গোটা ঘর ঘুরপাক খাচ্ছে ও। কিছুতেই ঘুমোতে চাইছে না।

ঈশ্বর জানেন, কোথ্বেকে এই সব পকে়ট সাইজ ওদের এনার্জিটা পায়! আজ্ঞে, এ কথাটা আজিন আর ওয়ার্নার, দু’জনের জন্যই বলছি।

Advertisement

প্রথমে ওয়ার্নারের ব্যাপারটা সমাধান করা যাক। আমি মনে করি, ও বলের লেংথগুলো খুব তাড়াতাড়ি ধরে ফেলে। আর তার পরে ওর দুর্দান্ত হ্যান্ড স্পিড, ফ্যান্টম-সাইজ ব্যাটের সৌজন্য-সহ ভয়ঙ্কর পাঞ্চগুলো দেয়। শুধু যে খুব আগ্রাসী ভাবে রান তোলে তাই নয়। পরিস্থিতি বিচারের ক্ষমতাও অসাধারণ। যেটা অবশ্য বড় ম্যাচের প্লেয়ারদের একটা খুব কমন সূত্র।

বুধবারই আমি আর এক জন বিগ ম্যাচ প্লেয়ারের মুখোমুখি হচ্ছি ইডেনে— রোহিত শর্মা। ক্লাস ব্যাটসম্যান। আমি হতাশ হব, যদি ও ১০ হাজার টেস্ট রান আর তারও বেশি রান ওয়ান ডে-তে না করে। ২০১৫-এ আমার টিম ওর হাতে মার খেয়েছিল। নব্বইয়ের আশপাশে বোধহয় করেছিল, কিন্তু এটা আমি হলফ করে বলতে পারি যে, স্ট্যাটিস্টিশিয়ানদের কাছেও সেটা ট্রাপিজ আর্টিস্টের মতো ঝলমলে ছিল। আমি খুব একটা পরিসংখ্যান-ভক্ত নই. তবু জানি তথ্য বলছে, ইডেন গার্ডেন্সের প্রতি রোহিতের স্পেশ্যাল ভালবাসা আছে। আশা করি, ওর ভালবাসায় আজ আমরা একটা কিছু ব্যাঘাত ঘটাতে পারব। এটুকু বলতে পারি, ওর জন্য এই ম্যাচে আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে। আশা করব, সেটা কাজ দেবে। নইলে আর কী! ‘রোহিত প্রদর্শনের’ আমিও একজন নীরব ভক্ত হয়ে মাঠে উপস্থিত থাকব।

দিন কয়েক আগে আমাদের প্রথম ম্যাচে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে রবিন উত্থাপ্পা যেমন ব্যাট করেছে, তাতে বুধবার একটা ‘রবিন শো’-রও সম্ভাবনা আছে। ওর গত রবিবারের স্ট্রেট ড্রাইভগুলো দিয়ে ট্রাম লাইন আঁকা যায়। আশা করব, রবিন ওর ‘এ-গেম’ (বড় হাতের ‘এ’) আজকের ম্যাচেও দেখাতে পারবে। এমন এক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যাদের বোলিং লাইন আপ বৈচিত্রে ভরা হলেও যারা প্রথম ম্যাচে পুণের কাছে হারে ক্ষত নিয়ে নামবে ই়ডেনে। বুধবারের ম্যাচটা তরুণ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদেরও একটা পরীক্ষা।

বোলিংয়ে আমরা সব সময় ভাল কাজ পেয়ে থাকি। এ ব্যাপারে মর্নি মর্কেল, আন্দ্রে রাসেল, জন হেস্টিংসের পাশে ভারতীয় পেসার উমেশ যাদব, জয়দেব উনাদকাট রয়েছে। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, ফর্ম্যাট যাই হোক না কেন, ক্রিকেটে ম্যাচ জেতায় বোলাররাই। আমাদের শেষ ম্যাচে অসাধারণ বোলিং এবং শেষমেশ জিতে মাঠ ছাড়া নিজের এই বিশ্বাসকে আরও পোক্ত করেছে।

সে দিন আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আমাদের ‘তরুণ’ স্পিনার ব্র্যাড হগের কোনটা আমার পছন্দ? সত্যি বলতে, নেটে ওকে খেলতে আমার অসুবিধে হচ্ছে। কিন্তু সেটা আমাকে আরও আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে যে, বিপক্ষ ব্যাটিং লাইন আপ তা হলে ওকে খেলতে কী রকম সমস্যা পড়বে! আর হগি-র কোনটা আমার পছন্দ? উইকেট তুলে ওর জিভ বার করে সেলিব্রেশনটা সবার উপরে। ৪৫ বছরেও যেন একজন অভিষেক ঘটানো বোলারের সেলিব্রেশন!

নিজের ফর্ম নিয়ে কোনও কিছু বলতেই আমি খুব সতর্ক এখন। গত বছর আমার টেকনিক পাল্টানোর পর থেকে আমি বল ভাল মারছি। বিশেষ করে শর্ট ডেলিভারিগুলো। তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরো ব্যাটিং ছন্দ পাচ্ছি, নেটে আমার লড়াই চলবে। আত্মবিশ্বাস আছে সেটা আমি জিতব। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই যে, এই রাত এগারোটাতেও ছোট্ট আজিনকে ঘুম পারাতে পারব কি না! দেখি, আর এক বার চেষ্টা করে...

(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন