পাল্টা আক্রমণ না-করার মাসুল দিতে হল ভারতকে

আজ ভারত ম্যাচটা হেরে গেল সেই শুরুর দিকেই। নিউজ়িল্যান্ডকে এ দিন খেলতে হত ২৩ বল। সেই ২৩ বলে ২৮ রান দেয় ভারতীয় বোলাররা। এই রানটা যদি আরও ১০ রান কম হত, তা হলেও ভারত সুবিধাজনক অবস্থায় থাকত। 

Advertisement

এরাপল্লি প্রসন্ন

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০৪:১৯
Share:

পতন: ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ব্যাটিং-ধস। প্রথম ১০ ওভারেই ফিরে যান রোহিত, বিরাট-সহ টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। এএফপি, এপি, রয়টার্স, টুইটার

ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্ট ঝড়েই এ বারের মতো শেষ হয়ে গেল ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। লিগে চতুর্থ হয়ে যে নিউজ়িল্যান্ড উঠে এসেছিল, তাদের কাছেই সেমিফাইনালে হারতে হল ১৮ রানে। মঙ্গলবার যখন বৃষ্টির কারণে ৪৬.১ ওভারে ২১১-৫ স্কোরবোর্ডে রেখে নিউজ়িল্যান্ড খেলা শেষ করেছিল, তখনই বলেছিলাম, এই ম্যাচে ভারত চালকের আসনে। কিন্তু নিউজ়িল্যান্ডের ফিল্ডিং অন্যতম সেরা। ওদের সুযোগ দেওয়া যাবে না। শুরুর দিকে চার-পাঁচ ওভার সতর্ক ভাবে খেললে ফাইনালে যাবে বিরাটের ভারত।

Advertisement

সেখানে আজ ভারত ম্যাচটা হেরে গেল সেই শুরুর দিকেই। নিউজ়িল্যান্ডকে এ দিন খেলতে হত ২৩ বল। সেই ২৩ বলে ২৮ রান দেয় ভারতীয় বোলাররা। এই রানটা যদি আরও ১০ রান কম হত, তা হলেও ভারত সুবিধাজনক অবস্থায় থাকত।

এই ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের নিউক্লিয়াসটা দুই জায়গায়। উপরের দিকে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহালি। আর মাঝের সারিতে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বাদ দিলে রোহিত সব ম্যাচেই শুরুতে ক্যাচ তুলে বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে রোহিত সতর্ক হয়নি। এ দিন ম্যাট হেনরির দুর্দান্ত বলে টম লাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যায় রোহিত। তার পরে কোহালি এসে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়কের চালটা ধরতে পারেনি। বিরাট কোহালি অনসাইডে ভাল খেলে। পয়েন্ট আর থার্ডম্যান রাখেনি। তার পরে ট্রেন্ট বোল্ট ওকে শুরুর দিকে দু’টি বল বাইরের দিকে করে। তৃতীয় বল সামান্য ভেতরে আসে বিরাটের। চতুর্থ বলটা এমন ভয়ঙ্কর ভাবে উইকেটের দিকে ঢুকে আসে, যা বিরাট চকিতে বুঝতে না পেরেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যায়। আমি বলব এই পরিকল্পনা নিউজ়িল্যান্ড দল অঙ্ক কষেই বার করেছিল। তাই বিরাট বুঝতে পারেনি। তার কিছু পরেই কে এল রাহুল শিক্ষানবীশের মতো ব্যাট চালিয়ে নিউজ়িল্যান্ড উইকেটকিপার লাথামের হাতে ধরা পড়ে। ৩.১ ওভারের মধ্যে পাঁচ রানে তিন প্রথম সারির ব্যাটসম্যান ফিরে গিয়েছে। সেমিফাইনালের মতো এ রকম চাপের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে হলে, পাল্টা আক্রমণ করা উচিত ছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সেটা ওরা করল কোথায়? বরং এই সময় অতি সতর্ক হয়ে খেলতে গিয়ে স্কোরবোর্ডে রান তোলাটাই বন্ধ করে দিয়েছিল দীনেশ কার্তিক। ২৫ বল খেলে ৬ রান করেছে ও। আমি ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হলে ওকে এই ম্যাচে খেলাতাম না। বদলে মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে দলে রাখতাম। তাই নিউজ়িল্যান্ডের আক্রমণে পাল্টা আক্রমণ না করার মাসুল গুনতে হয়েছে ভারতকে।

Advertisement

স্কোরবোর্ডে ২৩৯ রান নিয়ে লড়তে নেমে নিউজ়িল্যান্ড আক্রমণাত্মক হতই। শর্ট বল, বাউন্সার, সুইং করিয়ে আক্রমণাত্মক সেই ক্রিকেটটাই ওরা খেলেছে। ভারতীয় দল সেই ফাঁদেই পা দিয়ে শুরুতেই ম্যাচটা হাত থেকে বার করে দিয়েছিল। যেখান থেকে ফিরে আসতে পারেনি।

পাশাপাশি, আমি যদি ভারতীয় দলের ম্যানেজার হতাম, তা হলে ধোনিকে ব্যাটিং অর্ডারে তুলে আনতাম। পাঁচ রানে তিন উইকেট চলে যাওয়ার পরেই ধোনিকে নামিয়ে দিলে, ও আরও বল খেলতে পারত। ভাবুন তো এই ধোনি যদি আরও ১০-১১টা বল বেশি খেলার সুযোগ পেত? এতে ভারত ও ধোনির রান যেমন বাড়ত, তেমনই ঋষভ ও হার্দিককে বিশাল অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করতে পারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন