ইস্টবেঙ্গলকেই এগিয়ে রাখতে হবে

অদ্ভুত একটা আবহ তৈরি হতো বড় ম্যাচকে কেন্দ্র করে। গোটা বাংলা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যেত ডার্বির কয়েক দিন আগে থেকেই। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে বাংলার মানুষের যা আবেগ, তাতে এখনও নিশ্চয়ই ছবিটা বদলায়নি।

Advertisement

আই এম বিজয়ন

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৫:০৭
Share:

ছবি সুদীপ্ত ভৌমিক

এক দশকেরও বেশি হয়ে গিয়েছে ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছি। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ডার্বির প্রসঙ্গ উঠলে এখনও একই রকম ভাবে রোমাঞ্চিত হই।

Advertisement

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আসন সংখ্যা শুনেছি এখন অনেক কমে গিয়েছি। আমরা কিন্তু লক্ষাধিক দর্শকের সামনে খেলতাম। এখনও যেন শুনতে পাই দু’দলের সমর্থকদের সেই চিৎকার।

অদ্ভুত একটা আবহ তৈরি হতো বড় ম্যাচকে কেন্দ্র করে। গোটা বাংলা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যেত ডার্বির কয়েক দিন আগে থেকেই। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে বাংলার মানুষের যা আবেগ, তাতে এখনও নিশ্চয়ই ছবিটা বদলায়নি। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরাও এই আবেগ ভেসে যান।

Advertisement

ফুটবলাদের কাছেও ডার্বির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কেউ পুরো মরসুমে হয়তো একাধিক দুর্ধর্ষ গোল করেছে। অথবা কেউ দুর্দান্ত খেলেছে। অথচ ডার্বিতে ব্যর্থ। তখন কিন্তু কেউ কোনও মূল্য নেই। ডার্বিতে যেমন নতুন নায়কের জন্ম হয়, তেমনই বহু সম্ভাবনাময় ফুটবলারের জীবনে অন্ধকার নেমে আসতে দেখেছি। ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ডার্বির কখনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। বহু ফুটবল বিশেষজ্ঞের পূর্বাভাস এর আগে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দুই প্রধানের হয়েই ডার্বিতে খেলার অভিজ্ঞতা আমার আছে।

রবিবারের ম্যাচে কে জিতবে তা নিয়ে আগাম মন্তব্য করতে চাই না ঠিকই। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং ডুডু ওমাগবেমি যোগ দেওয়ায় একটু এগিয়ে রাখব ইস্টবেঙ্গলকে। তবে জিততে হলে কিন্তু রবিবার ইস্টবেঙ্গল কোচ খালিদ জামিলকে একটু সাহসী হতে হবে। ওর প্রিয় ৪-১-৪-১ স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করতে হবে। ডুডু-র মতো স্ট্রাইকার ওর দলে। খালিদের উচিত ৪-৪-২ ফর্মেশনে দল সাজানো। সামনে থাকবে ডুডু ও উইলিস প্লাজা। কারণ, মোহনবাগানের চার ডিফেন্ডার অরিজিৎ বাগুই, কিংগসলে ওবুমনেমে, কিংশুক দেবনাথ ও রিকি-র মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভাল। ক্যামেরন ওয়াটসনকে ডিফেন্সিভ ব্লকার হিসেবেই খেলাবে মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। ফলে এক স্ট্রাইকারে খেললে কিন্তু গোল পাওয়া কঠিন হবে ইস্টবেঙ্গলের। আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচটা জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্টবেঙ্গলের জন্য।

সনি নর্দে নেই। তাই দিপান্দা ডিকা ও আক্রম মোঘরাবিকে সামনে রেখে মোহনবাগানেরও ৪-৪-২ ফর্মেশনে দল সাজানার সম্ভাবনা বেশি। তবে যাঁরা সনি ছিটকে যাওয়ার জন্য মোহনবাগানকে পিছিয়ে রাখছেন, আমি তাঁদের সঙ্গে একমত নই। সনি দুর্দান্ত ফুটবলার। কিন্তু একজন ফুটবলার না থাকলে তার প্রভাব খুব একটা পড়ে বলে আমি অন্তত মনে করি না। আমরা বহুবার দুর্দান্ত দল নিয়েও দুর্বল প্রতিপক্ষের কাছে হেরে মাঠ ছেড়েছি। আবার উল্টোটাও হয়েছে। তা ছাড়া মোহনবাগানের অন্যান্য ফুটবলারদের কাছে এই ম্যাচটাই হচ্ছে এই মরসুমে নিজেদের প্রমাণ করার শেষ সুযোগ। তাই কাগজ-কলমে ইস্টবেঙ্গল একটু এগিয়ে আছে ঠিকই। তবে মোহনবাগান জিতলেও বিস্মিত হব না। ডার্বি মানেই যে চমক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন