তিনশো না-তুললে এ রকম বোলিং জেতাতে পারবে না

ভারতীয় দল নিয়ে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে। প্রথম তিন জন ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হলে ভারত বড় রান তুলতে পারে না। রবিবার দেখলাম, রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, বিরাট কোহালি— তিন জনই অল্প রানে ফিরে গেল।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

ম্যাচ হারার পর বিরাট কোহালি।—ছবি এএফপি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচ হারার পরে ত্রাহি, ত্রাহি রব তোলার এখনই কিছু হয়নি। কিন্তু এই হার কয়েকটা জিনিস চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বোঝা গেল, কয়েকটা ব্যাপারে গলদ রয়েছে যা ঠিক করে নিলে ভবিষ্যতে ভারতের উপকারই হবে।

Advertisement

ভারতীয় দল নিয়ে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে। প্রথম তিন জন ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হলে ভারত বড় রান তুলতে পারে না। রবিবার দেখলাম, রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, বিরাট কোহালি— তিন জনই অল্প রানে ফিরে গেল। যদিও তার পরে ঋষভ পন্থ এবং শ্রেয়স আইয়ার রান পেয়েছে, কিন্তু ভারত তিনশোর গণ্ডি টপকাতে পারল না। এখন কিন্তু ৩১৫-৩২০ রান না উঠলে জেতা কিন্তু কঠিন হয়ে যায়। ফলে ‘বিগ থ্রি’-র উপরে নির্ভরতা আবার ফুটে উঠছে।

তবে চেন্নাইয়ের উইকেটটা প্রথম দিকে একটু মন্থর ছিল। যে কারণে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা বড় শট খেলতে পারেনি। আর একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। পন্থ অনেক দিন বড় রান পায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই ও শুরুতে সতর্ক ছিল। চেনা ছন্দে ব্যাট করলে ৬৯ বলে পন্থের স্কোরটা নিশ্চয়ই ৭১ রানের চেয়ে বেশি হত।

Advertisement

আরও পড়ুন: নিলাম বসছে কলকাতাতেই, ছক কষা শুরু আট দলের

ভারতের যে ব্যাটসম্যানরা এখন খেলছে, মোটামুটি তারাই পরের বছর বিশ্বকাপে খেলবে। সঙ্গে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং হার্দিক পাণ্ড্য যোগ হতে পারে। হার্দিক এলে নিঃসন্দেহে নীচের দিককার ব্যাটিং অনেক শক্তিশালী হবে। কিন্তু তার আগে এই সিরিজে আরও দুটো ম্যাচ খেলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। মাথায় রাখতে হবে, আগে ব্যাট করলে তিনশোর উপরে রান চাই ।

তার একটা কারণ যদি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ফোরক ব্যাটিং, অন্য কারণটা অবশ্যই ভারতের বোলিং। এই সিরিজে ভারত যে বোলিং লাইন খেলাচ্ছে, তা কিন্তু চাপে ফেলতে পারছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংকে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখা গিয়েছে, ওয়ান ডে-তেও দেখা গেল। প্রথম ওয়ান ডে-তে চার বিশেষজ্ঞ বোলারকে নিয়ে খেলানোর কৌশলটাও কাজে লাগেনি। কেদার যাদব প্রথম ওভারে ১১ রান দেওয়ার পরে কোহালি আর ওকে দিয়ে বল করানোর ঝুঁকি নেয়নি। শিবম দুবের আট ওভার দেখে মনে হয়নি ও উইকেট নিতে পারে।

আরও পড়ুন: বিরাট ক্রিকেটের রোনাল্ডো, ডনের দলেও থাকত, বললেন লারা

মানছি, একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছে শিবম, কিন্তু ওকে কি শুধু ব্যাটিংয়ের কথা ভেবে দলে রাখা হয়েছে? তা-ই যদি হয়, তা হলে রবীন্দ্র জাডেজার পরে কেন ব্যাট করতে নামছে? আর যদি শিবমের বোলিংয়ের কথাও মাথায় রাখা হয়, তা হলে বলব ১০ ওভার বল করার মতো বোলার ও নয়।

ভুবনেশ্বর কুমারের চোট পাওয়াটা বড় ধাক্কা। ওর জায়গায় শার্দূল ঠাকুরকে কেন নেওয়া হল, বুঝতেই পারছি না। শার্দূল এর মাঝে কিছুই তো করেনি। এই জায়গায় অবশ্যই উমেশ যাদবকে সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনা যেত। ছেলেটা টেস্টে দারুণ বল করেছে। ছন্দে আছে। গতির সঙ্গে সুইংটা করাতে পারছে। অতীতে হয়তো ও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভাল খেলতে পারেনি। কিন্তু একটা সুযোগ উমেশের প্রাপ্য।

আরও একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিরাটদের। খুব তাড়াতাড়ি কুল-চা জুটিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। অর্থাৎ, কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চহালকে একসঙ্গে খেলাতে হবে। মনে রাখতে হবে, বছর দেড়েক আগেও এই দুই রিস্টস্পিনার মাঝের ওভারগুলোয় নিয়মিত উইকেট তুলে বিপক্ষকে চাপে রেখে যেত। এই জুটি প্রচুর ম্যাচ জিতিয়েছে ভারতকে।

ভারতের এই বোলিং সমস্যা পরের বছর আর থাকবে বলে মনে হয় না। যশপ্রীত বুমরা, ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পাণ্ড্যরা ফিরে এলে দলের ভারসাম্য অনেক ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু এই সিরিজের কথা মাথায় রেখে বলব, প্রয়োজনে জাডেজাকে বসিয়ে কুল-চা জুটিকে ফেরাতে হবে। জাডেজার বাঁ-হাতি স্পিন সহজেই খেলে দিচ্ছে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। ফ্লাইট বা স্পিনে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে পারছে না জাডেজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন