মূল পর্বে ভারত, সতীর্থদের সঙ্গে ওড়িশি নাচ স্রিদার্থের

শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া হলেও ভারতীয় শিবিরের কোনও হতাশা নেই। ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ওড়িশি নাচল ফুটবলারেরা। টিম হোটেলে ফিরেও চলল উৎসব। সেখানেও আকর্ষণের কেন্দ্রে স্রিদার্থ। 

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৬
Share:

সফল: রবিবার ম্যাচের শেষে তাসখন্দে ভারতীয় ফুটবল দল। টুইটার

কল্যাণী স্টেডিয়ামে মাসখানেক আগে তার দুরন্ত হ্যাটট্রিকেই নেপালকে ৭-০ চূর্ণ করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল ভারত। রবিবার তাসখন্দে উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের শেষ ম্যাচে সেই স্রিদার্থ নংমেইকাপাম-ই ৬৮ মিনিটে গোল করে এগিয়ে দেয় ভারতকে। যদিও ম্যাচ শেষ হওয়ার আট মিনিট আগে সমতা ফেরায় উজ়বেকিস্তানের রিয়ান ইসলামভ। তাতে অবশ্য আগামী বছর বাহরিনে অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন আটকায়নি ভারতীয় দলের। এই নিয়ে টানা তিন বার (সব মিলিয়ে মোট ন’বার) মূল পর্বে ভারতের খুদেরা।

Advertisement

শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া হলেও ভারতীয় শিবিরের কোনও হতাশা নেই। ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ওড়িশি নাচল ফুটবলারেরা। টিম হোটেলে ফিরেও চলল উৎসব। সেখানেও আকর্ষণের কেন্দ্রে স্রিদার্থ।

মণিপুরের প্রতিশ্রুতিমান স্ট্রাইকারের বাবা ইতোচা সিংহ নংমেইকাপামও ফুটবলার ছিলেন। তবে তিনি খেলতেন রক্ষণে। নব্বইয়ের দশকে মোহনবাগানে সই করেছিলেন। জাতীয় দলেও ছিলেন। স্রিদার্থের অবশ্য ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল স্ট্রাইকার হওয়া। আদর্শ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। রবিবার উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে গোল করে প্রিয় নায়কের ভঙ্গিতেই উৎসব করে মাতিয়ে দিয়েছিল। রাতে তাসখন্দ থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে স্রিদার্থ শোনাল অনেক অজানা কাহিনি।

Advertisement

উল্লাস: গোল করে রোনাল্ডোর ভঙ্গিতে লাফ স্রিদার্থের। টুইটার

প্রেরণা বাবা: বাবার প্রেরণাতেই ফুটবল খেলতে শুরু করি। আমাদের স্কুলের ফুটবল দলেরও কোচ বাবা। স্কুলের হয়ে সুব্রত কাপ খেলার পরেই জাতীয় দলে সুযোগ পাই। বাবার জন্যই আমি এই জায়গায় আসতে পেরেছি।

গোলের উৎসব: আমি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অন্ধ ভক্ত। পরের দিন ম্যাচ থাকা সত্ত্বেও শনিবার রাতে সেরি আ-তে জুভেন্তাস বনাম ভেরোনা দ্বৈরথ দেখতে ভুলিনি। রোনাল্ডো গোল করায় দারুণ আনন্দ হয়েছিল। তখনই ঠিক করেছিলাম, উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে গোল করলে আমিও সি আর সেভেনের ভঙ্গিতে উৎসব করব। কারণ, এই ম্যাচটা আমাদের কাছে খুব কঠিন ছিল। ঘরের মাঠে উ‌জ়বেকিস্তান সব সময়ই খুব শক্ত প্রতিপক্ষ। তাই গোল করে দারুণ আনন্দ হয়েছিল।

কোচের পরামর্শ: বিবিয়ানো (ফার্নান্ডেজ) স্যর এই ম্যাচটার গুরুত্ব আমাদের খুব ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ড্রয়ের কথা না ভেবে জয়ের জন্য ঝাঁপাতে। আগের দু’টো ম্যাচ আমরা দুর্দান্ত ভাবে জিতেছি। উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধেও সেই ছন্দ ধরে রাখতে হবে। জিততে না পারলেও আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোচের আস্থার মর্যাদা দিতে পেরেছি।

ওড়িশি নাচের রহস্য: আমাদের সতীর্থ রঞ্জনের বাড়ি ওড়িশায়। ওর কাছেই আমরা ওড়িশি নাচ শিখেছি। ঠিক করেছিলাম, অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে সকলে মিলে ড্রেসিংরুমেই ওড়িশি নাচব।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: আরও উন্নতি করতে চাই। লক্ষ্য আগামী বছর অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ আটে পৌঁছনো। কোচ বলে দিয়েছেন, আসল পরীক্ষা শুরু আগামী বছর। তাই উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলে হবে না। লক্ষ্যে স্থির থাকতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন