ছবি: সংগৃহীত।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে স্কোরবোর্ডে ভারতের যে রকম বড়সড় রান ছিল, আর বোলাররা যে ভাবে ফর্ম দেখাচ্ছিল, তাতে ম্যাচের মাঝামাঝি সময় মনে হচ্ছিল ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেমিফাইনালের দিকে এক কদম এগিয়েই গিয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটের মজাটা হচ্ছে খেলাটা কখনও কাগজে-কলমে খেলা হয় না। আগের দিনই র্যাঙ্কিংয়ে উপরের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে গিয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভারতের করা ৩২২ রান তাড়া করে শ্রীলঙ্কার ম্যাচ জেতা দেখে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তানের সেই জয় শ্রীলঙ্কানদের অনুপ্রেরণা হয়তো বাড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের প্রথম দশ ওভার যখন ভারত চালকের আসনে ছিল তখন কোনও আশঙ্কার কিছু ছিল না। কিন্তু যেই হার্দিক পাণ্ড্য এবং রবীন্দ্র জাডেজা বল করতে এল তখনই শ্রীলঙ্কার ধনুষ্কা গুণতিলক এবং কুশল মেন্ডিস ওদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। দু’জনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই চাপ বেড়ে যায় ভারতের। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটীয় দক্ষতাই শুধু নয়, ওদের মানসিকতাও আমাকে মুগ্ধ করল। সব সময় ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। কিন্তু কখনওই অহেতুক ঝুঁকি নেয়নি। কিন্তু ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে গিয়েছে। এই সব কিছুর মিশেলই ওদের জয় এনে দিল। দ্বিতীয় উইকেটের জুটি ওদের ভিতটা তৈরি করে দেয়। তার পর যারা এসেছে, সবাই একই ভাবে খেলে গেল।
তার মানে কিন্তু এই নয়, যে ভারত খারাপ বল করেছে। ফিল্ডিংয়েও আগের পাকিস্তান ম্যাচের চেয়ে পারফরম্যান্স ভালই ছিল। কিন্তু জাডেজা এবং পাণ্ড্য বল হাতে বেশি রান দেওয়াতেই সমস্যায় পড়ে যায় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি।
আমার মতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন দড়ির উপর ঝুলছে। আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তানের স্পিনারদের খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল। কাজেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কেদার যাদবকে বসানো হোক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলানোর এটাই উপযুক্ত সময়। অশ্বিন-জাডেজা জুটি দক্ষিণ আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতেই পারে। পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে এখনও পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাক-ই চলছে। সেক্ষেত্রে একজন ব্যাটসম্যানকে বসালে টিমের ভারসাম্যটা ঠিকঠাক থাকবে।
ম্যাচ হেরে ভারত হতাশ হতে পারে। কিন্তু মানসিক ভাবে যেন ভেঙে না পড়ে। শিখর ধবন দুর্দান্ত ব্যাট করছে। নিশ্চুপে খেলে যাচ্ছে রোহিত শর্মা। এমএস ধোনিও সতর্ক ভাবে শুরু করে শেষের দিকে মারমুখী হয়ে উঠছে। অনুপ্রাণিত শ্রীলঙ্কার কাছে হার একটা হঠাৎ ধাক্কা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি আশাবাদী, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হাসিমুখেই মাঠ ছাড়বে ভারতীয়রা।