ভরসা: শুক্রবার দুই ওপেনারের দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারত। ছবি: এপি ।
বৃহস্পতিবার সাউদাম্পটনে চতুর্থ টেস্ট শুরুর আগে টিভিতে যে পিচ রিপোর্ট দেখছিলাম, তাতে সঞ্জয় মঞ্জরেকর বলছিলেন, এটাই নাকি সিরিজের সেরা উইকেট হতে চলেছে। ইংল্যান্ডের ৮৬ রানে ৬ উইকেট পড়া দেখে অবশ্য তা মনে হল না।
আসলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংটা বেশ নড়বড়ে লাগছে। তার অন্যতম বড় কারণ, অ্যালেস্টেয়ার কুকের ফর্মে না থাকা। যে ভাবে হার্দিক পাণ্ড্যের প্রায় পঞ্চম স্টাম্পে আসা বলটা কাট করতে গিয়ে স্লিপে বিরাট কোহালির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন, তার পরে ওঁর খারাপ ফর্ম নিয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই। স্যাম কারেন দুটো বড় পার্টনারশিপ না খেললে ইংল্যান্ড ২৪৬ রানে পৌঁছতেই পারত কি না, সন্দেহ। তবে এই পিচে ভারতকে ভাল জায়গায় থাকতে গেলে প্রথম ইনিংসে অন্তত দেড়শো রানে এগিয়ে থাকতেই হবে। কারণ, এখানে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা মোটেই সোজা হবে না। ইংল্যান্ড যে দুই স্পিনারে নেমেছে, তাও মাথায় রাখতে হবে বিরাট কোহালিকে। এই মাঠটা আবার মইন আলির পয়া মাঠও।
বুমরাকে দেখে দারুণ লাগল। একটা কথা স্বীকার করে নিচ্ছি। বুমরাকে আগে দেখে আমার কখনও মনে হয়নি, টেস্ট খেলতে পারেন। ছোট রান আপে এসে অদ্ভুত অ্যাকশনে বল করেন। কিন্তু এখন এই বুমরাই কোহালির বড় অস্ত্র। আগে ইয়র্কারটা ছিল বুমরার। এখন আউটসুইংটাও খুব ভাল করছেন। যে আউটসুইংয়ের (বাঁ-হাতি কিটন জেনিংসের কাছে ইনসুইং) শিকার হলেন ইংল্যান্ড ওপেনার। জেনিংস বুঝতেই পারেননি, বলটা ও রকম ঢুকে আসবে।
বৃহস্পতিবারের স্কোরকার্ড দেখে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে। ইংল্যান্ড ইনিংসে বাই হয়েছে ২৩ রান। কিন্তু তা বলে তরুণ উইকেটকিপার ঋষভ পন্থকে খুব একটা দায়ী করলে চলবে না। অস্ট্রেলিয়া যেমন কিপারদের স্বর্গরাজ্য, তেমনই ইংল্যান্ড একটা বড় পরীক্ষার জায়গা। কেন বলছি, ব্যাখ্যা করছি।
অস্ট্রেলিয়ার পিচে বাউন্স থাকে। কিপারদের বল ধরতে সমস্যা হয় না। ওখানে অসমান বাউন্স প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু ইংল্যান্ডে ছবিটা অন্য। এখানে বল এত সুইং করে, যে কিপারদের বোঝা কঠিন, কোন দিকে শেষ মুহূর্তে বাঁক নেবে। এমনকি ব্যাটসম্যানদের পার হয়ে গিয়েও বল সুইং করে। ফলে হাতটা ঠিক বলের পিছনে নিয়ে যাওয়ার কাজটা মোটেই সোজা নয়। জনি বেয়ারস্টোর কথাই ধরুন। আগের টেস্টে ইংল্যান্ড কিপারের আঙুলে চোট লেগেছিল। ব্যাটসম্যানকে পার হয়ে বল মুভ করে, বেয়ারস্টো হাতটা ঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে পারেননি। চোট পেয়ে যান। ফলে ঋষভের কাজটা কতটা কঠিন, বোঝা যাচ্ছে তো? ভারতীয় কিপার এ দিন ক্যাচ ধরেছেন, ডাইভ দিয়ে বলও আটকেছেন। অভিজ্ঞতা বাড়লে ঋষভের ত্রুটিগুলো ঢেকে যাবে।
যাই হোক, এ বার লড়াই ব্যাটসম্যানদের। ভারতকে কতদূর টেনে নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা, সেটাই দেখার।