প্রত্যয়ী: অনুশীলনে মগ্ন জবি। তিরুঅনন্তপুরমে। নিজস্ব চিত্র
লিয়োনেল মেসি তাঁর আদর্শ। বার্সেলোনার তিনি ভক্ত। অথচ জীবনযুদ্ধে জিততে জবি জাস্টিনের প্রেরণা লিভারপুলের রূপকথার প্রত্যাবর্তন।
সই বিতর্কে জর্জরিত ভারতীয় স্ট্রাইকার তিরুঅনন্তপুরম ফিরে গিয়েছেন। অগস্ট অথবা সেপ্টেম্বরে কলকাতায় ফেরার কথা জবির। তবে কবে তিনি মাঠে ফিরবেন? ইস্টবেঙ্গল না এটিকে, পরের মরসুমে কোন দলের জার্সি গায়ে খেলবেন? তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। ফুটবলের মূলস্রোতে ফেরার প্রস্তুতি অবশ্য শুরু করে দিয়েছেন জবি। বাড়ির কাছেই ষন্মুগম সৈকত। রোজ সকালে সেখানে অনুশীলন করছেন। ফিটনেস ট্রেনিং করতে দুপুরে ছুটছেন জিমে। সন্ধ্যায় এফএফসি এরিনার কৃত্রিম ঘাসের মাঠে নেমে পড়ছেন ম্যাচ প্র্যাক্টিস করতে। কিন্তু লিভারপুল বনাম বার্সেলোনা ম্যাচের জন্য বুধবার সকালে আর অনুশীলন করতে পারেননি। আনন্দবাজারকে ফোনে হতাশ জবি বললেন, ‘‘অবিশ্বাস্য ম্যাচ দেখলাম। ফের মেসির দুর্ধর্ষ গোল ও বার্সেলোনা জয় দেখার জন্য টিভির সামনে বসেছিলাম। লিভারপুল যে এ ভাবে জিতবে কল্পনাও করতে পারিনি।’’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে বার্সেলোনা ৩-০ হারিয়েছিল লিভারপুলকে। ফাইনালে উঠতে হলে য়ুর্গেন ক্লপের দলকে ঘরের মাঠে অন্তত ৪-০ জিততেই হত। অধিকাংশ ফুটবল বিশেষজ্ঞ মেসিদেরই এগিয়ে রেখেছিলেন। লিভারপুলের ফুটবলারেরা কী ভাবে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন? জবি বললেন, ‘‘আমার মতে, লিভারপুলের সাফল্যের আসল কারিগর য়ুর্গেন ক্লপ। প্রথম পর্বে ম্যাচে বার্সেলোনা ছক বদলে খেলে চমকে দিয়েছিল। মহম্মদ সালাহরা ওদের রণকৌশল বুঝতে অনেক দেরি করেছিলেন। হার থেকে শিক্ষা নিয়েই ঘুরে দাঁড়াল লিভারপুল।’’
কী ভাবে? জবির ব্যাখ্যা, ‘‘শুরু থেকেই লিভারপুলের লক্ষ্য ছিল প্রেসিং ফুটবল। অর্থাৎ, শুরু থেকেই বিপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করে যাওয়া। ভুল করতে বাধ্য করা। তাই বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকলেও জিততে সমস্যা হয়নি। প্রথম গোলটার কথা মনে করুন। জর্দি আলবার দুর্বল ব্যাক হেড ধরে গোল লক্ষ্য করে শট মারলেন জর্ডান হেন্ডারসন। বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্কো তার স্তেগানের হাতে লেগে বল বেরিয়ে আসে। গোলে ঠেলে দেন দিভোক ওহিগি।’’ জবি আশা করেছিলেন, প্রথমার্ধে ০-১ পিছিয়ে থাকলেও বার্সেলোনা ঘুরে দাঁড়াবে। বলছিলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, মেসিকে ৯০ মিনিট আটকে রাখতে পারবে না লিভারপুল। আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হল। বাকি তিনটি গোলও লিভারপুলের আক্রমণের ঝড় সামলাতে না পেরে খেল বার্সেলোনা।’’
অ্যানফিল্ডে কেন চেনা ছন্দে পাওয়া গেল না মেসিকে? জবি বলছেন, ‘‘মেসি ছন্দে ছিল না বলে আমি মনে করি না। খেলছিলেন একা মেসি-ই। প্রথম পর্বে বার্সা একটা দল হিসেবে খেলেছিল। মঙ্গলবার রাতে ক্লপ শুরু থেকেই সেই ছন্দটা নষ্ট করে দেন। জবি অভিভূত মহম্মদ সালাহকে নিয়েও। বলছিলেন, ‘‘টিভিতে দেখছিলাম, সালাহর টি-শার্টের বুকে লেখা ছিল, নেভার গিভ আপ। চোটের কারণে নিজে খেলতে পারেননি। কিন্তু পুরো দলটার মধ্যেই লড়াইয়ের এই বার্তাটা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সালাহ।
লিভারপুলের জয় থেকে কী শিক্ষা নিলেন? জবি বললেন, ‘‘লিভারপুলের জয় ফের প্রমাণ করল, ফুটবলে সব সম্ভব। কখনও হাল ছাড়তে নেই। শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেই সাফল্য আসবে। আমার লড়াই তো সবে শুরু হয়েছে।’’