প্রথমে দিল্লি টেস্টে লড়াকু ড্র। তার পরে ধর্মশালায় ওই জয়। মনে হচ্ছিল, ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভাল লড়াই করতে পারবে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দেখা গেল, ওই দু’টো ম্যাচ নেহাতই অঘটন। এখন পর্যন্ত যা দেখছি, তাতে ভারতের সামনে আবার সেই বিধ্বস্ত হওয়ার পথে শ্রীলঙ্কা। রোহিত শর্মার দুর্দান্ত ইনিংস, শিখর ধবনের শাসন এবং যুজবেন্দ্র চহাল এবং তাঁর সঙ্গীদের বোলিং। এই মিলিত পারফরম্যান্স কোনও সুযোগই দেয়নি প্রতিপক্ষকে।
মোহালিতে রোহিত শর্মার ওই ইনিংসই শ্রীলঙ্কার যাবতীয় প্রতিরোধ শেষ করে দেয়। ভারত সফরের মাঝপথে এসে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা বোধহয় ভেবেছিল, ওরা ভাল জায়গায় চলে এসেছে। যেখান থেকে ভারতকে চাপে ফেলতে পারবে। কিন্তু ‘রোহিত ঝড়’ যে ওই ভাবে ওদের ওপর আছড়ে পড়বে, তা সম্ভবত কেউই ভাবেননি। রোহিতের ওই ব্যাটিং তাণ্ডবের পরে শ্রীলঙ্কার মধ্যে যে লড়াইয়ের তেজ দেখা যাচ্ছিল, তা পুরোপুরি হারিয়ে যায়। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওই রকম একটা ইনিংস আমি অনেক দিন দেখিনি। ওই ইনিংস যে দলের বিরুদ্ধে খেলা হবে, তারা এমনিতেই বেসামাল হয়ে যাবে। শুধু বেসামাল হওয়াই বলি কেন, ও রকম ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানের উল্টো দিকে থাকতে হলে যে কোনও দলের মনোবল তুবড়ে যেতে বাধ্য। ওই ইনিংসটা আরও স্পেশ্যাল, কারণ অধিনায়কের দায়িত্বও ছিল রোহিতের ওপর। তা ছাড়া ওই ম্যাচটা হারলে সিরিজও হেরে যেত ভারত। ওই ইনিংস রোহিতের মানসিকতাও বুঝিয়ে দিল ভালমতো।
রোহিত যখন পুরো ছন্দে ব্যাট করে, তখন সেই দৃশ্য রীতিমতো উপভোগ্য। টেস্টে বেশ ভাল ফর্মে ছিল রোহিত। আর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তো ও সব সময় বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে যদি চাপের মধ্যে থাকে। দ্বিতীয় ওয়ান ডে যদি রোহিতের হয়ে থাকে, তা হলে তৃতীয় ওয়ান ডে-তে আমরা ধবনের শাসন দেখলাম। আর প্রথম টি-টোয়েন্টির পরে একটা ব্যাপার পরিষ্কার। কোনও বিভাগেই ভারতের বিরুদ্ধে পাল্লা টানার ক্ষমতা নেই শ্রীলঙ্কার।
আরও একটা ব্যাপার আমার ভাল লেগেছে। কে এল রাহুলের রান পাওয়া। ও খুবই ভাল ক্রিকেটার। নির্বাচকদের উচিত ওকে আত্মবিশ্বাস জোগানো। আমার মনে হয়, কঠিন পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে দ্রুতগতির পিচে রাহুলকে চার নম্বরের জন্য ভাবা যেতেই পারে। দ্রুতগতির পিচে ‘ব্যাকফুট প্লে’-টা ভাল হওয়া খুব দরকার। যেটা রাহুলের আছে। ওকে আত্মবিশ্বাস হারাতে দিলে চলবে না।
ভারতকে এখন যেটা করতে হবে, তা হল, এই আত্মবিশ্বাস এবং ফর্মটা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও ধরে রাখতে হবে। এবং সেখান থেকে পরবর্তী বিদেশ সফরগুলোয়। অধিনায়ক বিরাট কোহালির নেতৃত্বে যা খুবই সম্ভব।