দৃপ্ত: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ফৌজি কুচকাওয়াজের ভঙ্গিতে বিরাট কোহালি। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে। পিটিআই
বিরাট কোহালির ‘ঘরের মাঠে’ এ বার টি-টোয়েন্টি সিরিজ রক্ষার লড়াইয়ে নামছে ভারত। চিন্নাস্বামীর যে উইকেটে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হতে চলেছে, তাতে রান-উৎসব দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
আইপিএলে কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মাঠ বেশির ভাগ সময়ই ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গোদ্যান হয়ে দেখা দিয়েছে। যেখানে ক্রিস গেল, কোহালি, এ বি ডিভিলিয়ার্সরা বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছেন প্রায়ই। সেই চিন্নাস্বামীতে এ বার কোহালি-রোহিত শর্মাদের থামানোর চ্যালেঞ্জ প্যাট কামিন্সদের সামনে।
আগের ম্যাচে বিশাখাপত্তনে মাত্র ১২৬ রানে আটকে যাওয়ার পরেও ভারত যে লড়াইটা লড়েছে, সেটাই এখন দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে ভারতের বাঁ হাতি স্পিনার ক্রুণাল পাণ্ড্য বলে যান, ‘‘আমাদের বোলাররা দারুণ বল করেছে। ওই অল্প রান করা সত্ত্বেও আমরা ম্যাচটা প্রায় জিতে যাচ্ছিলাম। আমাদের শুধু ব্যাটিং নিয়ে একটু সতর্ক থাকতে হবে।’’ ক্রুণাল পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওই একটা হারে দলের ছন্দ মোটেও নষ্ট হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘‘জানি, সিরিজে আমরা ০-১ পিছিয়ে। তাই কালকের ম্যাচটা আমাদের কাছে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। একটা হারে আমাদের ছন্দ কিন্তু মোটেও নষ্ট হয়নি। আগের রাতে ম্যাচটা আমরা হেরেছি ঠিকই, কিন্তু পরপর দুটো ম্যাচ হারব না। আমি নিশ্চিত, আমরা কাল ভাল কিছু করব।’’
এ দিন নেটে কোহালির নেতৃত্বে পুরোদমে অনুশীলনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। অধিনায়ককে প্রথমেই ব্যাট হাতে নেমে পড়তে দেখা যায়। এর পরে থ্রোডাউনও নিতে দেখা যায় কোহালিকে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে না থাকলেও এ দিন নেটে হাজির ছিলেন মহম্মদ শামি, কুলদীপ যাদব, ভুবনেশ্বর কুমাররা। ওয়ান ডে সিরিজের প্রস্তুতিতে এই তিন ক্রিকেটার ট্রেনিং করছিলেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। শামি তো ভারতের নেটে বলও করেন।
চিন্নাস্বামীর বাইশ গজের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘‘আইপিএলে আমরা যে রকম পিচ দেখতে অভ্যস্ত, ততটা নিষ্প্রাণ পিচ না হলেও কাল এখানে প্রচুর রান উঠবে। যে পিচে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা হবে, সেটা মাস দুয়েকের বেশি ব্যবহার করা হয়নি। শেষ বার বিজয় হজারে ট্রফির ম্যাচ হয়েছিল এই পিচে।’’ কতটা রান উঠতে পারে এখানে? কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গে জড়িত অভিজ্ঞরা মনে করেন, ১৮০ রান এখানে গড়পরতা স্কোর।
ক্রুণালও মনে করেন, বিশাখাপত্তনমের চেয়ে এই মাঠে বেশি রান উঠবে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি এখনও উইকেট দেখিনি। কিন্তু মনে হয় বিশাখাপত্তনমের চেয়ে এখানে ব্যাটিং করা সহজ হবে।’’ পিচে হাল্কা সবুজ আভা থাকলেও মনে করা হচ্ছে ম্যাচের আগে ঘাস পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া হবে। এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে, শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে, ইংল্যান্ডকে ৭৫ রানে হারিয়েছিল ভারত। যেখানে প্রথমে ব্যাট করে ভারত তোলে ছয় উইকেটে ২০২।
তবে অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স ঠিক নিশ্চিত নন, পিচ কী রকম ব্যবহার করবে। তিনি বলেছেন, ‘‘এই উইকেটটা বেশ অদ্ভুত। আমি যখন সাত, আট বছর আগে আইপিএল খেলতে বেঙ্গালুরুতে এসেছিলাম, তখন চোখ বুজে বলে দেওয়া যেত, ২২০ রান উঠবে। কিন্তু এখন আমি অতটা নিশ্চিত নই।’’ কেন তিনি পিচ নিয়ে দোটানায়, তাও বলেছেন কামিন্স। ‘‘গত কয়েক বছরে এখানকার উইকেটটা বেশ মন্থর হয়ে গিয়েছে,’’ মন্তব্য তাঁর।
বিশ্বাখাপত্তনমের বাইশ গজ ব্যাটসম্যানদের পছন্দ না হতে পারে, কিন্তু কামিন্স বলে দিচ্ছেন, ওই রকম পিচ পেয়ে তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। অস্ট্রেলীয় বোলিং আক্রমণের সেরা অস্ত্রের মন্তব্য, ‘‘বিশাখাপত্তনমে হয়তো বেশি স্কোর হয়নি, কিন্তু ম্যাচটা দারুণ হয়েছিল। ওখানকার পিচটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের আটকানোর জন্য কখনও ইয়র্কার, কখনও স্লোয়ার করতে হয়। কিন্তু বিশাখাপত্তনমের পিচে ভাল বলগুলো ব্যাটসম্যানরা মারতে পারেনি। শেষ দিকে তো আমি একটু
সুইংও পাচ্ছিলাম।’’