আফ্রিদি-সামিদের ব্যর্থতায় এশিয়া কাপ থেকে বিদায় পাকিস্তানের। আফ্রিদিদের পাঁচ উইকেটে হারিয়ে রবিবারের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হওয়ার রাস্তা পাকা করে ফেলল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছে এই আত্মসমর্পণের পর কাঠগড়ায় দুই সিনিয়র ক্রিকেটার আফ্রিদি ও সামি।
টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্তটা যে মোটেই ঠিক হয়নি পাকিস্তানের, তা ইনিংসের প্রথম থেকেই টের পেতে শুরু করে তারা। আঠাশ রানের মধ্যেই চারটি উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের। খুররাম, শার্জিল, হাফিজ, আকমলরা একে একে ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন সরফরাজ আহমেদ ও শোয়েব মালিক। এই দু’জনের ৭০ রানের পার্টনারশিপটা না হলে এ দিন পাকিস্তানের বিদায় অনেক আগেই নিশ্চত হয়ে যেত। এ দিন মীরপুরের যে উইকেটে খেলা হয়, তাও বেশ পাটা ধরণের ছিল। আগের ম্যাচগুলি যে উইকেটে খেলা হয়েছিল, তার মতো সবুজ, পেস সহায়ক ছিল না। এই উইকেটে টিকে থেকে ব্যাট করলে যে রান পাওয়া যায়, তা সরফরাজ ও শোয়েবের এই জুটিই প্রমাণ করেন। মুস্তাফিজুরের অনুপস্থিতি যে বাংলাদেশের বোলিংকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে, তা-ও এই সময়ই বোঝা যায়। আট ওভারেরও বেশি সময় ধরে সেই পাকিস্তানের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বিপক্ষের বোলারদের যে শাসন করে গেলেন, তাতেই নিজেদের বেশ খানিকটা এগিয়ে নিলেন পাকরা। তবে একশোর গণ্ডী পেরোলেই যে এই উইকেটে বিপদসীমার বাইরে চলে যাওয়া যাবে, তা কিন্তু নয়। দরকার ছিল আরও অন্তত পঞ্চাশ রানের, যে পুঁজি নিয়ে লড়াই করা যেত। দলের একশোর মুখে শোয়েব মালিক ফিরে যাওয়ার পর শাহিদ আফ্রিদির কাজ ছিল সেটাই। হাতে ছিল মাত্র তিন ওভার। কিন্তু আফ্রিদি প্রথম বলটাই ফুলটস পেয়েও সুযোগ হারালেন তা থার্ড ম্যানের বেশি পার করাতে না পেরে। আল আমিন হোসেনের পরের বলটাও ফুলটস এবং এটাতেও ভুল করলেন আফ্রিদি। ঠিকমতো ব্যাটে-বলে লাগাতে না পেরে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে। ওখানেই পাকিস্তানের লড়াই প্রায় শেষ হয়ে যায়। আফ্রিদির এই দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং নিয়ে এই ম্যাচের পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। শেষ দু’ওভারে আনোয়ার আলি, সরফরাজরা দু’টি চার ও একটি ছয় মেরে পাকিস্তানকে ১২৯-এ পৌঁছে দিলেও তা যথেষ্ট ছিল না।
আফ্রিদি যদি হন পাক ব্যাটিংয়ের ভিলেন, তা হলে বোলিংয়ে ভিলেন মহম্মদ সামি। যিনি তাঁর শেষ ওভারে পরপর দু’টো নো বল করে এবং তাতে দুটো ফ্রি হিট দিয়ে বাংলাদেশকে প্রায় জয় উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়লেন। তিন ওভারের খেলা বাকি থাকতে বাংলাদেশ যখন ১০৪-৫। যখন তাদের ১৬ বলে ২৬ রান দরকার, এ রকম সময়ে বল করতে এসে সামি এই কাণ্ডটা করেন। তাঁর ওই এক ওভারে ১৫ রান না নিলে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠতে পারত কি না, যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সামির ওই ওভারেই বাংলাদেশ জয়ের চেয়ে মাত্র তিন রানের দূরত্বে পৌঁছে যায়।