ফের সুপারহিট ভারত, ‘সুপার চোকার্স’ নিউজ়িল্যান্ড
India

মণীশের লড়াই, শার্দূলের শেষ ওভারেই ৪-০

সাম্প্রতিক কালে সুপার ওভার কি টিম সাউদিদের কাছে ‘নার্ভাস সুপার ওভার’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৮
Share:

উল্লাস: হাত ছুড়ে উচ্ছ্বাস বিরাটের। শূন্যে লাফ সঞ্জুর। শুক্রবার। এএফপি

পরপর দু’টো ম্যাচে সুপার ওভারের স্নায়ুচাপ তুড়ি মেরে উড়িয়ে অনায়াসে জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৪-০ করে ফেলল বিরাটেরা। যা প্রমাণ করে দিচ্ছে, কোহালির এই দলটা আত্মবিশ্বাসে কতটা ভরপুর।

Advertisement

একই সঙ্গে বিশ্বকাপ ফাইনাল ধরলে এক বছরের মধ্যে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এবং ভারতের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে গড়ানো চারটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হারল নিউজ়িল্যান্ড! তা হলে সাম্প্রতিক কালে সুপার ওভার কি টিম সাউদিদের কাছে ‘নার্ভাস সুপার ওভার’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? বেচারা নিউজ়িল্যান্ড দল! শুক্রবার ভারতের বিরুদ্ধে ওয়েলিংটনে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থ ম্যাচটা যেন হুবহু গত বুধবারের ম্যাচের ‘রিপ্লে’। ক্রিকেটের অঙ্ক অনুযায়ী, এই দু’টো ম্যাচেই ওদের জেতা উচিত ছিল। কিন্তু এই দু’টো ম্যাচেই ওরা সুপার ওভারে ঢুকে হেরে বসল ভারতের কাছে।

টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত করে ১৬৫-৮। জবাবে নিউজ়িল্যান্ডের ইনিংসও শেষ হয়, ১৬৫-৭। ফলে সুপার ওভারে খেলা গড়ায়। সেখানে শুরুতে ব্যাট করে ১৩ রান করে নিউজ়িল্যান্ড। জবাবে এক বল বাকি থাকতেই ১৬ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় কোহালিরা।

Advertisement

এ দিনের ম্যাচের ‘টার্নিং পয়েন্ট’ কলিন মুনরোর রান আউট হওয়া। বলটা শার্দূল ঠাকুর ছুড়তে চেয়েছিল বোলিং এন্ডে। বলটা মাঝখানে দাঁড়ানো বিরাটের হাতে চলে যায়। অনেক শিক্ষার্থী ক্রিকেটার একে ‘রিলে থ্রো’ বলবে। কিন্তু এটা ‘রিলে থ্রো’ ছিল না। ম্যাচটা এর আগে নিউজ়িল্যান্ডের পক্ষে ৯০ শতাংশ ছিল। কিন্তু এই আউটের পরেই ভারত ধীরে ধীরে চালকের আসনে বসে পড়ে। ২০তম ওভারে শার্দূলের বলে নিউজ়িল্যান্ডের একটি রান আউট-সহ চার উইকেট পতন ও স্কোরবোর্ডে ছয় রান যুক্ত হয়। কেউ কেউ বলতে পারেন, এতেই খেলাটা সুপার ওভারে গড়িয়েছে। কিন্তু আমি বলব ১৯তম ওভারে নবদীপ সাইনির চার রান দেওয়া। এতেই চাপের মুখে মনঃসংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ডের।

আরও পড়ুন: আগ্রাসী কোহালির লক্ষ্য এখন শান্ত থাকা

সিরিজ আগেই জেতা হয়ে গিয়েছে। তাই এ দিন রোহিত শর্মা, মহম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাডেজার জায়গায় সঞ্জু স্যামসন, নবদীপ সাইনি ও ওয়াশিংটন সুন্দরকে খেলানো হয়েছিল। এদের মধ্যে নবদীপই বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে। ওর হাতে ভাল ইয়র্কার, বাউন্সার রয়েছে। সঙ্গে উইকেট টু উইকেট নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে। সঞ্জু, ওয়াশিংটন ও শিবম দুবে সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ।

মণীশ পাণ্ডে বরং এ দিন দায়িত্ব নিয়ে চাপের মুখে ৩৬ বলে যে ৫০ রান করল, তা আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওর জায়গা মজবুত করবে। ঘরোয়া ক্রিকেট ও বিদেশের মাঠে ব্যাট হাতে সফল। সঙ্গে দুরন্ত ফিল্ডিং। এই কারণেই ও অন্যদের সঙ্গে ফারাক গড়ছে। নির্বাচকরা ওকে বাদ দিতে গেলে দু’বার ভাববে।

আরও পড়ুন: বন্ধু জেরেভের বুম বুম সার্ভিস থামিয়ে ট্রফির লড়াইয়ে থিম

এ দিন যে মেজাজে রাহুলকে ব্যাট করতে দেখলাম, তাতে নির্বাচক ও কোহালিদের বড় প্রশ্ন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রাহুল না শিখর ধওয়ন— কে রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেন করবে? সপ্তম ওভারে পিছনের পায়ে গিয়ে কুখেলাইনের বল পয়েন্ট ও কভারের মাঝখান দিয়ে রাহুল যে ভাবে চার মারল, তা দু’চোখ ভরে দেখার মতো। ওর সময়জ্ঞানও দুর্দান্ত। কিপিংটাও মন্দ করছে না। বিশ্বকাপে হয়তো শিখরই ওপেন করবে। সে ক্ষেত্রে রাহুল, মণীশ, শ্রেয়স মাঝের সারিতে থাকলে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ভারসাম্য আসবে।

বুমরাকে এই ম্যাচে পুরো ছন্দে দুরন্ত গতিতে বল করতে দেখলাম। সুপার ওভারেও দারুণ বল করেছে। ওর বলে ওঠা ক্যাচগুলো ধরতে পারলে নিউজ়িল্যান্ড সুপার ওভারে আরও কম রানে শেষ হয়ে যেতেই পারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন