মায়াবী: জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে আলোকোজ্জ্বল স্টেডিয়াম। বিদায়ী মার্চপাস্টে ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে হাঁটলেন হকি দলের ক্যাপ্টেন রানি রামপাল। ছবি: পিটিআই।
অলিম্পিক্সের পরে খেলাধুলোয় বিশ্বের সব চেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এশিয়ান গেমস। সেখানে ভারত এ বার মোট ৬৯টি পদক জিতল। যার মধ্যে ১৫টি সোনা, ২৪টি রুপো এবং ৩০টি ব্রোঞ্জ। এশিয়াডে এর আগে কখনও ভারত এত পদক পায়নি।
এ দেশের খেলাধুলোর বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন এমন অপ্রত্যাশিত সাফল্যে ভারতে বহু অলিম্পিক্স ইভেন্টের চর্চায় নতুন আগ্রহ তৈরি হবে। সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া সৌরভ চৌধুরী থেকে ষাট বছরের প্রণব বর্ধনের সাফল্যে ঢাকা পড়েছে এমনকি হকি, কবাডির মতো খেলায় ভারতের ব্যর্থতাও।
ইঞ্চিয়নে আগের এশিয়াডে ভারতের মোট পদক ছিল ৬৫টি। এ বার সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৯। ১৯৫১ সালে প্রথম এশিয়াডে সোনা এসেছিল ১৫টি। এ বার সেই নজিরও স্পর্শ করেছে ভারত। সঙ্গে গড়েছে সর্বাধিক ২৪টি রুপো জয়ের রেকর্ড। এর আগে কখনও কোনও ভারতীয় দল যে কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেনি।
জাকার্তা ও পালেমবার্গের এই গেমসে সাফল্যে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন অ্যাথলিটরা। ১৫টি সোনার সাতটিই তাঁরা এনেছেন। জেরোলা বুং কার্নো স্টেডিয়ামে প্রথম বড় চমকটা ছিল তাজিন্দর পাল সিংহের। তিনি শটপাট ছোড়েন ২০.৭৫ মিটার। যা গেমসের রেকর্ড। এ বারের আর একটি চমক অবশ্যই স্বপ্না বর্মণের হেপ্টাথলনের মতো কঠিন ইভেন্টে প্রচুর পয়েন্ট স্কোর করে সোনা জেতা। তাঁর আগে কোনও ভারতীয় হেপ্টাথলিট এশিয়াডে সোনা জিততে পারেননি। কম যাননি দ্যুতি চন্দও। ১০০ ও ২০০ মিটারে তাঁর রুপো জয় অবশ্যই ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে বিশেষ একটা ঘটনা। পাশাপাশি জাকার্তায় দারুণ ভাবে নজর কেড়েছেন হিমা দাসও। সঙ্গে সফল নীরজ চোপড়া, মনজিৎ সিংহ, জিনসন জনসনরাও।
এ দিকে, আটশো মিটারে রুপোজয়ী জনসন বলেছেন, ‘‘এই ইভেন্টটা আমার খুবই প্রিয়। সোনা জিততে পারলেই বেশি খুশি হতাম। তবে ভারতের দু’জন সোনা-রুপো জিতেছে, সেটাও কম কথা নয়। আর মনজিৎ সোনা জেতায় আমি অন্তত অবাক হইনি। এমনিতে আমার সঙ্গে ওর সময়ের বিশেষ ফারাক নেই। জানতাম আমি সোনা জিততে পারলে মনজিতও পারতে পারে।’’
এ দিকে রাশিয়া বিশ্বকাপের মতোই জার্কাতায় এশিয়ান গেমসের শেষ দিন সমাপ্তি অনুষ্ঠান হল প্রবল বৃষ্টিতে। বিদায়ী মার্চপাস্টে জাতীয় পতাকা নিয়ে হাঁটলেন মেয়েদের হকি দলের অধিনায়ক রানি রামপাল। যদিও সোনাজয়ী কাউকে এই সুযোগ বা সম্মান না দিয়ে কেন রানিকেই বাছা হল তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। আইওএ-র বক্তব্য, সোনাজয়ীদের প্রায় সবাই দেশে বা অন্য কোথাও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চলে গিয়েছেন। অগত্যা তাই নাকি রানিকে সুযোগটা দেওয়া। তার উপর তাঁর নেতৃত্বেই ভারত ফাইনাল খেলল কুড়ি বছর পরে। যা যথেষ্ট কৃতিত্বের। আর হকি দলের অধিনায়ক নিজে দারুণ খুশি। যা তিনি টুইট করে লিখলেনও।