দীপা
কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রেকর্ড সংখ্যক ভারতীয় অ্যাথলিট এসেছেন রিও-তে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও পদক আসেনি। অভিনব বিন্দ্রা, হিনা সিধু, জিতু রাই, দীপিকা কুমারীরা একের পর এক ইভেন্টে ব্যর্থ হচ্ছেন। চার দিন হয়ে গেল কোনও পদক নেই। এই অবস্থায় ফাইনাল রাউন্ডে উঠে ইতিহাস তৈরি করা দীপা কর্মকারকেই চাঁদমারি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বিজয় গোয়েল মঙ্গলবার বলে দিলেন, ‘‘দীপা যা করেছে অবিশ্বাস্য। আমি ওকে আলাদা ভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আলাদা করে ওর সঙ্গে কথাও বলব।’’
দিন দুয়েক হল, মোদী সরকারের নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী এসেছেন রিওতে। কিন্ত এখানকার জঘন্য ব্যবস্থাপনা এবং ভাষা সমস্যায় অন্যদের মতো জেরবার তিনিও। এতটাই বিরক্ত যে বলে দিলেন, ‘‘আমার গাড়ি যখন আসার কথা আসছে তার দু’ঘণ্টা পরে। ফলে সকাল থেকে বসে আছি যতগুলো ভেন্যু সম্ভব যাব বলে। কিন্তু যেতে পারছি না। অনেক দূরে দূরে ভেন্যু। নাম বললেও কেউ চিনতে পারছে না। অদ্ভুত অবস্থা।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ রকম অবস্থায় সবার কাছে পৌঁছব কী করে। কেউ যেন আমাকে না ভুল বোঝে। তিরন্দাজি হচ্ছে পঞ্চাশ মাইল দূরে। কী ভাবে যাব ওখানে বুঝতেই পারছি না।’’
অনেক খুঁজে খুঁজে শ্যুটিং রেঞ্জে পৌঁছে গিয়েছিলেন। অভিনব বিন্দ্রার হাতে পদক উঠবে এই আশায়। কিন্তু সেখানেও পদক না পাওয়ায় আফসোস শোনা গেল তাঁর গলায়। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বললেন, ‘‘আমি ওটাকে ব্যড লাক বলব না, হার্ড লাক বলব। খুব খারাপ লাগছে ওর জন্য। খুব আশা ছিল।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য ‘‘তিরন্দাজির টিম ইভেন্টেও শুনলাম অল্পের জন্য ব্যর্থ হয়েছে টিম। আর হকিতে তো জার্মানির সঙ্গে যেটা হল সেটা দুর্ঘটনা। কয়েক সেকেন্ড খেলা বাকি ছিল, গোল খেয়ে গেলাম।’’
তাঁকে বারবার প্রশ্ন করা হল, এত টাকা খরচ করেও এখনও একটা পদক এল না। তা হলে বড় দল পাঠিয়ে লাভ কী? প্রশ্ন শুনে কিছুটা থতমত খেয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বললেন, ‘‘অপেক্ষা করুন। এখনও তো অনেক ইভেন্ট বাকি। তবে এটা ঠিক শ্যুটিং থেকে পদক আশা করেছিলাম। সরকার কী করতে পারে। যে যা সাহায্য চেয়েছে করা হয়েছে। বাকিটা তো কর্তা-কোচ-খেলোয়াড়দের কাজ।’’
কিন্তু এমনও তো অভিযোগ উঠছে, লন্ডন অলিম্পিক্সের আগে তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী অজয় মাকেন পুরো বিষয়টির দেখভাল করেছিলেন বলে এত পদক এসেছিল। এ বার তো টাকা নিয়ে যে যেখানে পারে চলে গিয়েছে। কেউ নজরই রাখেনি। এ নিয়ে কী বলবেন? চুপ করে থাকেন ক্রীড়ামন্ত্রী এ বার।