বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনে পালাবদল আসন্ন। মাস খানেক পরেই হয়তো বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনে দেখা যাবে কিছু নতুন মুখ। তার আগে ধুন্ধুমার কাণ্ড সিএবি-র বর্তমান শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সভায়।
ক্রিকেট প্রশাসনে এক বিদায়ী শীর্ষকর্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার শেষ চেষ্টাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো হুলুস্থুল বেধে গেল সিএবি বৈঠকে। সংস্থার প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনেই।
বুধবার সন্ধ্যায় ইডেন ক্লাব হাউসের তিনতলায় সিএবি-র শীর্ষকর্তা ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা বসেছিলেন সিএবি-র পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করার জন্য। সন্ধ্যায় বৈঠক চলাকালীন রীতিমতো ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। যখন আইনি উপদেষ্টা ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় উঠে বলতে শুরু করেন, লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিএবি থেকে এ বার বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে-র। তিনি যেহেতু দশ বছর সিএবি-র শীর্ষকর্তা বা অফিস বিয়ারার থেকেছেন, তাই তাঁর আর ক্রিকেট প্রশাসনে ফেরার কোনও পথ নেই।
বিশ্বরূপ পাল্টা যুক্তি দেন, তিনি যেহেতু এই দশ বছরের মধ্যে দু’বছর সহসচিব ছিলেন, এবং সহসচিবকে সিএবি-র বার্ষিক সভায় নির্বাচিত করা হয় না, তাঁদের মনোনীত করা হয় বার্ষিক সভার পর প্রথম ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে, তাই সহসচিবকে কখনওই অফিস বিয়ারার বলা যায় না। এই যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন সিএবি-র শীর্ষপদে তাঁর দশ বছর নয়, আট বছর হয়েছে এবং তিন বছরের কুলিং অফ পিরিয়ড কাটিয়ে তিনি সিএবি-তে এক বছরের জন্য ফিরতেই পারেন। যা ঊষানাথবাবু মানতে রাজি হননি। পরে বর্তমান সহ সচিব অনু দত্ত-ও একই কথা বলতে গেলে বৈঠকের পারদ চড়ে যায়। দোতলায় অপেক্ষারত মিডিয়া প্রতিনিধিরাও বৈঠকের সেই উত্তাপ টের পান।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিশ্বরূপের যুক্তি মানা হয়নি। তবে এই বৈঠকে দুই বিদায়ী শীর্ষকর্তাকে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এই ঘটনার ফলে। বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই ঊষানাথবাবুকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে সৌরভ জানান, ‘‘আমরা কাউকে অসম্মান জানিয়ে বেরিয়ে যেতে বলতে পারি না। সে রকম কিছু বলাও হয়নি এ দিনের বৈঠকে।’’
বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী সোমবার জরুরি ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক ডেকে বিশেষ সাধারণ সভার দিন ঠিক করা হবে। ২২ জানুয়ারি ইডেনে ভারত-ইংল্যান্ড ওয়ানডে-র পরপরই এই বৈঠক হবে। বিশেষ সভায় গঠনতন্ত্র সংশোধন ও সাধারণ সভার দিন স্থির করা হবে। যা হতে হতে অন্তত ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ গড়িয়ে যাবে। পাঁচটি শীর্ষপদ প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সচিব, যুগ্মসচিব ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচন করতে হবে সিএবি-কে। সহসচিব পদ আর রাখা যাবে না। কারা এই পদে থাকবে, তা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হলেও, সে ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন সিএবি কর্তারা। তবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অভিষেক ডালমিয়া ছাড়াও, নরেশ ওঝা, প্রবীর চক্রবর্তীর কথা শোনা গেল সিএবি-র অন্দরমহলে।