প্রতিবাদ: অশ্বিনকে ধিক্কার জানিয়ে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে জস বাটলারকে যে ভাবে মাঁকড়ীয় ভঙ্গিতে আউট করেছিলেন আর অশ্বিন, তা নিয়ে স্বরব বিশ্বের ক্রিকেটমহল। মাইকেল ভন, অইন মরগ্যান থেকে ডেল স্টেন অশ্বিনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এ দিন ইডেনের সমর্থকেরাও বুঝিয়ে দিলেন, অশ্বিনের করা সেই রান আউট তাঁরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেননি।
ঠিক টসের আগের মুহূর্তে যখন অশ্বিনের মুখ জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠল, ইডেনের বেশির ভাগ গ্যালারি থেকে তাঁর উদ্দেশে ভেসে এল কটূক্তি। প্রথম ওভার বল করতে আসার সময় ‘কে’ ব্লকের গ্যালারিতে শোনা গেল মন্তব্য, ‘‘গো ব্যাক অশ্বিন। ইডেনে তুমি খেলার যোগ্য নও।’’
তাঁদেরই মধ্যে পটনা থেকে আসা এক সমর্থকের হাতে দেখা গেল একটি পোস্টার। অশ্বিন সেই পোস্টার দেখলে হয়তো দু’রাত আগের সেই মুহূর্তের কথা আরেকবার ভাবতেন। পোস্টারে পরিষ্কার লেখা রয়েছে, ‘‘নো মার্সি অশ্বিন।’’ অর্থাৎ, ইডেন তোমাকে কখনও ক্ষমা করবে না।
আরও পড়ুন: রাণা, রাসেল, না ‘নো বল’, নাইটদের পঞ্জাব বধের আসল নায়ক কে?
পটনা থেকে আসা সেই ব্যক্তির নাম মহম্মদ শাহিদ রেজ়া। কলকাতা নাইট রাইডার্সের সমর্থক নন তিনি। তাঁর প্রিয় দল চেন্নাই সুপার কিংস। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভক্ত ২৫ বছর বয়সি এই যুবক। অশ্বিনের কাণ্ড দেখে রাগ হওয়ার থেকেও বেশি দুঃখ হয়েছে তাঁর। কারণ, ধোনির নেতৃত্বেই আইপিএল জীবন শুরু করেছিলেন অশ্বিন। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন। ধোনির নেতৃত্বে রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্টসের হয়েও খেলেছেন। তার পরেও কী ভাবে এই কাজ করে বসলেন? শাহিদ বলেন, ‘‘আমি জানি না, ধোনিভাইয়ের সঙ্গে এত দিন খেলেও কী ভাবে উনি এই কাজ করতে পারলেন। হয়তো ক্রিকেটের নিয়মের মধ্যেই এ ধরনের আউট রয়েছে। তবু অশ্বিন একেবারেই ভুল করেছেন। ফেয়ার প্লে-র কোনও ইঙ্গিতই পাওয়া যায়নি।’’কথায় আছে, কর্মের ফল ভোগ করতেই হয়। অশ্বিন নিজেও হয়তো দর্শকের বিদ্রুপে বেশ কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করতে যেতে দেখা যায়নি তাঁকে। এক বার গেলেও ফিরে আসেন মিড-অনে। মাঁকড়ীয়য় আউটের চাপ হয়তো তাঁর বোলিংয়েও প্রভাব ফেলেছে। এ দিন চার ওভার বল করে ৪৭ রান দেন অশ্বিন। উইকেট পাননি একটিও। এমনকি সুযোগও তৈরি করতে পারেননি। অনায়াসে তাঁর বল খেলে বেরিয়ে গেলেন নীতীশ রানা, রবিন উথাপ্পারা। অশ্বিনের বলে যখন চার-ছয় হাঁকাচ্ছিলেন ব্যাটসম্যানরা, তখন গ্যালারি থেকে স্লোগান ভেসে আসছিল, ‘‘কর্মের ফল ভোগ করতেই হবে।’’
এ দিন নেতৃত্ব দিতে গিয়েও ভুল করে ফেলেন অশ্বিন। ১৬.৬ ওভারে মহম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। তখন তাঁর রান ছিল তিন। কিন্তু উপস্থিত আম্পায়ার রাসেলকে অপেক্ষা করতে বলেন। কারণ, আম্পায়ার গুনে দেখেন ৩০ গজের লাইনের মধ্যে মাত্র তিনজন ফিল্ডার ছিলেন। থাকার কথা ছিল চার ফিল্ডারের। যা তাঁর মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের কাছ থেকে আশা করা যায় না। তার ফলও ভোগ করতে হল হাতে-নাতে। ১৭ বলে ঝোড়ো ৪৮ রানের ইনিংস ফের ইডেনকে উপহার দিয়ে গেলেন ‘দ্রে রাস’। ইডেনও মাতল রাসেল ঝড়ে। ফের স্লোগান উঠল ‘রাসে-এ-এ-এ-এ-ল, রাসে-এ-এ-এ-এ-ল।’a