সফল: ৪৭ বলে ৭৯। প্রথম ম্যাচেই সফল গেল। ফাইল চিত্র
আর অশ্বিনের মাঁকড়ীয় আউট কাণ্ডে প্রায় ধামাচাপা পড়ে গেলেও পঞ্জাবের ক্রিকেট ভক্তদের কাছে এখন তিনিই সেরা তারকা। তিনি ক্রিস গেল। যাঁর সম্পর্কে এখন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের লক্ষ লক্ষ ভক্ত বলছেন একটাই কথা, ‘সড্ডা স্টার’। মানে ‘আমাদের তারকা’।
চেন্নাই সুপার কিংসের যেমন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরাট কোহালি, তেমনই কিংসের ক্রিস গেল। সোমবার জয়পুরে যাঁর ব্যাটে রান-ঝড় ওঠে। ৪৭ বলে ৭৯ রান করেন ক্যারিবিয়ান তারকা। জয়পুরের সওয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামে তাঁর আটটি চার ও চারটি ছয়ে সাজানো ইনিংসে যেমন আনন্দ দেন দর্শকদের, তেমনই এই বিধ্বংসী ইনিংস নিজেও ভরপুর উপভোগ করেছেন ‘ইউনিভার্স বস’।
মঙ্গলবার কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের ওয়েবসাইটে তিনি বলেন, ‘‘ভাল লাগছে যে, ফর্মে ছিলাম, ফর্মে আছি। ইদানীং এ রকম বিধ্বংসী মেজাজেই খেলছি। এমন বড় মাঠে আইপিএলের শুরুটা ভাল করতে পেরে দারুণ লাগছে। এ রকম ইনিংস আমি উপভোগ করি। এটাও করেছি।’’
তবে নিজের পারফম্যান্সের চেয়ে দলের জয় নিয়ে বেশি উত্তেজিত গেল। যে ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসেরই শেষ হাসি হাসার কথা, সেই ম্যাচ ১৪ রানে তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়াটা যে বোলারদের বড় কৃতিত্ব, তা মেনে নিয়ে গেল বলেন, ‘‘ওরা (রাজস্থান রয়্যালস) ব্যাটিংয়ের জন্য ভাল উইকেট পেয়েছিল। আমাদের বোলাররাই ম্যাচ জিতিয়ে দিল (১৬ রানে বিপক্ষের শেষ সাত উইকেট ফেলেন কিংস বোলাররা)। তবে শুধু আমি নই, মায়াঙ্ক (আগরওয়াল), সরফরাজও (খান) ভাল ব্যাটিং করেছে। ওরাও বড় রান (১৮৪-৪) তুলতে সাহায্য করেছে। সবাই মিলে দলকে জেতালাম। আইপিএলে এ ভাবেই জিততে হবে।’’
ফেব্রুয়ারির শেষে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঝোড়ো ১৬২ রানের (৯৭ বলে) ওয়ান ডে ইনিংস খেলার পরেই ফের ২৭ বলে ৭৭ রান করেন গেল। সেটা ছিল চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। তার পরে সোমবারের এই ইনিংস। এমন ছন্দে থাকা গেল বুধবার নামছেন তাঁর পুরনো আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের ঘরের মাঠে।
সোমবার জয়পুরে রাজস্থান রয়্যালসকে হারানোর পথে ওঁরা দু’জনেই নিজেদের ক্রিকেটীয় দক্ষতা প্রকাশ করেছেন।
গেল-এর পাশাপাশি সোমবার কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের ব্যাটিংয়ে চমক দিয়েছেন সরফরাজ খানও। শেষ ওভারে বেন স্টোকসের অফের দিকে থাকা লেংথ বল হাঁটু গেড়ে বসে স্কুপ করে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে চার মারেন তিনি। খেলা শেষে সরফরাজের সাক্ষাৎকার নেন কে এল রাহুল। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘হঠাৎ স্কুপ মারতে গেলে কেন?’’ সরফরাজের উত্তর, ‘‘ওটাই আমার কাছে নিরাপদ শট বলে মনে হয়েছে।। ব্যাট করার সময় ঠিক করেই রাখি, বোলার যদি স্লোয়ার দেয়, তা হলে সুযোগ পেলে ও ভাবেই স্কুপ মারব।’’ যা শুনে রাহুলের পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ‘‘ও ভাবে মারতে গিয়ে যদি আঘাত পাও? ভয় করে না?’’ শুনে সরফরাজের উত্তর, ‘‘মাঠে আসার সময়ে ভয়টা হোটেলের ঘরেই ফেলে আসি।’’
এর পরেই রাহুলের পাল্টা সাক্ষাৎকার নেন সরফরাজ। জানতে চান, ‘‘স্টিভ স্মিথের ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচটা নিলে কী ভাবে?’’ জবাবে রাহুল বলেন, ‘‘আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ক্যাচ ধরার সময় আমরা সবাই বলটা ধরার জন্য তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রেও তাই করেছি। ভাগ্য ভাল থাকায় বলটা হাতে বসে গিয়েছিল। এ রকম ক্যাচ ধরতে পারলে কেরিয়ার তৈরি হয়ে যায়।’’ সরফরাজ এর পরেই প্রশ্ন করেন রাহুলের ক্যাচ ধরে গ্যালারির দিকে ঘুরে উৎসবের ব্যাপারে। যে প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, ‘‘উৎসব করি না সচরাচর। কিন্তু দলের কাজে লাগতে পেরে খুশিতে ও রকম করে ফেলেছি।’’