পরাজিত নায়ক পাণ্ড্যকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন রাসেল। ছবি: এএফপি।
আন্দ্রে রাসেল ফের নায়ক। রবিবার তাঁর বিধ্বংসী ৪০ বলে ৮০ রানের সুবাদে কেকেআর পাহাড়প্রমাণ রান করে।
নাইটদের রান তাড়া করতে নেমে হার্দিক পাণ্ড্য মরিয়া একটা চেষ্টা করেছিলেন। মাত্র ৩৪ বলে ৯১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন মুম্বই অলরাউন্ডার। তিনি যত ক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, তত ক্ষণ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জেতার আশা ছিল। পাণ্ড্য ফিরতেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। দিনের শেষে রাসেলই শেষ হাসি হাসেন। ম্যাচের সেরাও হন তিনি।
কিন্তু কেকেআর-মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে, রবিবারের ইডেনে পাণ্ড্যর কাছে হার মেনেছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। রাসেলের স্ট্রাইক রেট এ বারের আইপিএলে ঈর্ষণীয়। রবিবার স্ট্রাইক রেটে পাণ্ড্য পিছনে ফেলে দেন রাসেলকে। পাণ্ড্যর স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৭.৬৪। সেখানে রাসেলের স্ট্রাইক রেট ২০০।
আরও খবর: হার্দিক হ্যারিকেন সত্ত্বেও যে সব কারণে মুম্বই বধ করল কলকাতা
আরও খবর: প্রাক্তন চিয়ারলিডার, ফিজিয়োথেরাপিস্ট, অ্যাথলিট...ইনি জাক কালিসের বোন
শুধু স্ট্রাইক রেটই নয়, ম্যাচের উপরেও পাণ্ড্যর প্রভাব ছিল রাসেলের থেকে বেশি। কেকেআর-এর রান তাড়া করতে নেমে এক সময়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ধুঁকছিল। পাণ্ড্য ব্যাট করতে নামার সময়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের রান রেট ছিল ৬.৯৬। জেতার জন্য দরকার তখন ওভার পিছু ১৫ রান। এরকম একটা অবস্থা থেকে পাণ্ড্য রানের গতি বাড়ান। অন্য দিকে, রাসেল যখন নেমেছিলেন তখনই কেকেআর-এর রান রেট ছিল ১০.১০। রাসেলের জন্য মঞ্চ প্রস্তুতই ছিল। এমনকি ক্যারিবিয়ান তারকার উপরে প্রবল চাপও ছিল না পাণ্ড্যর মতো। রাসেল অনেক খোলা মনে ব্যাট করতে পেরেছিলেন। অন্য দিকে পাণ্ড্যর উপরে ছিল অনন্ত চাপ। প্রথমত পরে ব্যাট করতে নেমে রান রেটে পিছিয়ে থাকা। তার উপরে আস্কিং রেট প্রতি মুহূর্তে বাড়ছিল। পাণ্ড্য বেশ ভালই সামলাচ্ছিলেন পরিস্থিতি।
রাসেল যখন ব্যাট করতে নামেন, তখনই শুভমান গিল ২৮ বলে ৪২ রান করে ফেলেছেন। পার্টনার হিসেবে রাসেলের সঙ্গী তখন ক্রিজে জমে গিয়েছেন এবং মুম্বই বোলারদের আক্রমণের রাস্তা নিয়েছেন। কিন্তু পাণ্ড্যর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ছিল অন্য। কেকেআর বোলারদের চাপে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছিল। পাণ্ড্য যখন নামেন তখন তাঁর পার্টনার পোলার্ডও ক্রিজে অপেক্ষাকৃত নতুন।
মুম্বইয়ের রানের গতি বাড়ানোর পুরো চাপটাই এসে পড়েছিল পাণ্ড্য ও পোলার্ডের উপরে। ক্যারিবিয়ান তারকা বিপরীত প্রান্তে থাকলেও পাল্টা মার দেওয়া শুরু করেন পাণ্ড্যই। খুব কঠিন একটা পরিস্থিতি থেকে হার্দিক পাণ্ড্য প্রায় অসাধ্য সাধন করে ফেলেছিলেন। ভাগ্য তাঁর সহায় না হওয়ায় ম্যাচটা হারতে হয়, কিন্তু দিনের শেষে মুম্বই অলরাউন্ডার হারিয়ে দিলেন বাহুবলী রাসেলকে।