উৎসব: হায়দরাবাদকে হারানোর পরে কেক কাটছেন পৃথ্বী। টুইটার
ভারতীয় ক্রিকেটের দুই সেরা তরুণ প্রতিভা তাঁরা। দু’জনের ব্যাটিং দাপটে দিল্লি ক্যাপিটালস আইপিএল ফাইনালে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে তাঁরা শুক্রবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি। এই ম্যাচে যারা জিতবে, রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবে তারাই।
তার আগে ঋষভ পন্থকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত পৃথ্বী শ। বলে দিচ্ছেন, তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে এই মুহূর্তে ঋষভই সব চেয়ে ভাল ‘ফিনিশার’। ‘‘এই ধরনের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খুবই চাপ থাকে। আমি প্রার্থনা করে যাচ্ছিলাম যেন আমরা জিতি। পন্থ দারুণ খেলেছে। আমার মনে হয়, তরুণদের মধ্যে সেরা ফিনিশার ঋষভ,’’ বলে পৃথ্বী যোগ করছেন, ‘‘ও সব সময়ই খেলাটা আমাদের দিকে এনে দেয়। দারুণ খেলছে। দুর্ভাগ্যবশত, ম্যাচটা ও শেষ করতে পারেনি। কিন্তু কিমো (পল) আমাদের জিতিয়ে দিল।’’
সানরাইজার্সের ১৬৩ রান তাড়া করতে নেমে দুই উইকেটে জেতে দিল্লি ক্যাপিটালস। ২১ বলে ৪৯ করেন পন্থ। তিনি আউট হয়ে গেলে এক বল বাকি থাকতে খলিল আহমেদের বলে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জেতান কিমো পল। শুক্রবার কোয়ালিফায়ার টু-তে দিল্লির প্রতিপক্ষ মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই। কী ভাবে তিনি চেন্নাইয়ের বোলারদের মোকাবিলা করবেন বলে ভাবছেন? পৃথ্বীর জবাব, ‘‘হরভজন সিংহ, জাডেজা, ইমরান তাহির স্যরকে কী ভাবে খেলতে হবে, সেটা নিয়ে আমরা ভাবব নিশ্চয়ই। আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। অতীতে কী ভাবে সফল হয়েছিলাম, সেটাও দেখতে হবে।’’
১৯ বছরের নতুন বিস্ময় আরও মনে করছেন, প্রথম দিকে কয়েকটা ম্যাচে খারাপ খেলার পরে ফর্মে ফেরাটা খুবই জরুরি ছিল। ঋষভ দিল্লিকে জয়ের কাছে এনে দিলেও শুরুতে ৩৮ বলে ৫৬ করে দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দেন পৃথ্বীই। ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে তিনি বলে যান, ‘‘প্রথম ছয় ওভার খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি বোর্ডে রান তুলে ফেলা যায়, পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের উপর থেকে চাপ কমে যায়।’’ উইকেট মোটেও খুব সহজ ছিল না। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে পৃথ্বী যোগ করছেন, ‘‘ওদের বোলাররা এই উইকেটে কাটার করছিল। আমাকে আলগা বলের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছিল।’’ কী ভাবে ইনিংস নিয়ে পরিকল্পনা করেন? জানতে চাওয়ায় পৃথ্বী বলেন, কোন বোলারদের তিনি আক্রমণ করতে পারেন, সেটা আগে দেখে নেন। ‘‘ব্যাট করার সময়ে, একটাই লক্ষ্য থাকে। নিজের খেলা খেলে যাও আর কোন বোলারের বিরুদ্ধে রান করবে, সেটা বেছে নাও। সানরাইজার্সের যেমন নবি আর রশিদ ছিল সেরা বোলার। ম্যাচটা খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল আর আমরা খুব খুশি জিততে পারায়।’’
বার বার দেখা যাচ্ছে, মোক্ষম সময়ে উইকেট হারাচ্ছে দিল্লি। এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে মজা করে পৃথ্বী বলেন, ‘‘আমরা বোধ হয় ম্যাচ জমিয়ে তুলতে ভালবাসি। যখনই মনে হয়, আমরা খুব ভাল এগোচ্ছি, দু’তিনটে উইকেট চলে যায়। কিন্তু সেটাই সম্ভবত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশেষত্ব।’’ অমিত মিশ্রের প্রশংসা করে এর পর বলেন, ‘‘দশ-বারো বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে।’’ তাঁর প্রতি আস্থা না হারানোর জন্য টিম ম্যানেজমেন্টের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পৃথ্বী। বলেন, ‘‘পাওয়ার প্লে-তে খুব ভাল করতে পারছিলাম না। তাতে দল খুব খুশি ছিল না। তবু আমার প্রতি আস্থা দেখিয়ে গিয়েছে। সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সৌরভ স্যর, রিকি স্যর, প্রবীণ স্যর (ব্যাটিং কোচ প্রবীণ আমরে), কাইফ স্যর (মহম্মদ কাইফ)। ওঁরা সারাক্ষণ আমাকে ইতিবাচক তরঙ্গ দিয়ে গিয়েছেন। তাই আমি নিজের খেলার ধরনটা চালিয়ে
যেতে পেরেছি।’’