গত মাসে আইপিএল নিলামের সময়ই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, দেশের মাটিতেই হতে চলেছে আইপিএল। —ফাইল চিত্র।
বিদেশে নয়, এ বছরও আইপিএল হচ্ছে ভারতেই। এবং তা এপ্রিলে নয়, এগিয়ে আসতে চলেছে মার্চের শেষ সপ্তাহে, সম্ভবত ২৩ মার্চ থেকে। মে মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে যাতে আইপিএল শেষ করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। যাতে আইপিএলে খেলা ক্রিকেটারেরা বিশ্বকাপের আগে বিশ্রাম পান। গত মাসে আইপিএল নিলামের সময়ই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, দেশের মাটিতেই হতে চলেছে আইপিএল। এ বার সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেওয়া হল।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)-এর দুই সদস্য বিনোদ রাই ও ডায়ানা এডুলজি সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় ও একাধিক রাজ্য সরকারি প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। যা মঙ্গলবার বোর্ড সরকারি ভাবে জানিয়েও দেয়। তবে শুরুটা ঠিক করা হলেও এই প্রতিযোগিতা কবে শেষ হবে, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানিয়েছে সিওএ। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত সূচি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এপ্রিল-মে মাসে সারা দেশে নির্বাচনের জন্য আইপিএল আংশিক বা পুরোপুরি বিদেশে হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। যেমন ২০০৯-এ পুরো আইপিএল হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় ও ২০১৪-য় প্রতিযোগিতার শুরুর দিকটা হয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে।
তার উপর আবার এই প্রশ্নও ওঠে যে, বিশ্বকাপ শুরুর সপ্তাহখানেক বা দিন দশেক আগে আগে আইপিএল শেষ হলে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা কতটুকুই বা বিশ্রাম পাবেন? অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশের বোর্ডও মে মাসে তাদের দেশের ক্রিকেটারদের আইপিএলে খেলার অনুমতি দিতে নারাজ। তাঁদের যেমন বিশ্রাম দরকার, তেমনই আইপিএল খেলতে গিয়ে চোট লেগে যাওয়ার ঝুঁকিও থেকে যাবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাই সব সংশয় মেটাতে আইপিএলে এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত। গত বার ৭ এপ্রিল থেকে ২৭ মে হয়েছিল আইপিএল। এ বার তা দু’সপ্তাহ আগে শুরু হলে শেষও হতে পারে দু’সপ্তাহ আগে। অর্থাৎ মে মাসের প্রথম সপ্তাহে।
সাত বছর আগে ২০১০-এও আইপিএল শুরু হয়েছিল মার্চে। তার পর থেকে বরাবরই এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত হয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে ধনী এই ক্রিকেট লিগ। বোর্ডের নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আইপিএল শেষ হওয়ার পরে অন্তত ১৫ দিন ভারতীয় দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবে না। এ বার আইপিএল এগিয়ে আনার এটাও একটা কারণ বলা যেতে পারে।
দেশের মাটিতেই যে এ বারের আইপিএল আয়োজন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা নিলামের সময় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি লিগ বিদেশে নিয়ে যাওয়া হলে কী কী হতে পারে, তাও তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তখন থেকেই আইপিএল ভারতে হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দেয়। তবে মে মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতিযোগিতা শেষ হলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো শেষের দিকে বিদেশি ক্রিকেটারদের পাবে কি না, সেই অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে। কারণ, বেশির ভাগ দেশেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে মে-র শুরু থেকেই। তাই কোনও বোর্ডই সম্ভবত তাদের ক্রিকেটারদের ওই সময় আইপিএলে খেলতে দেবে না।