ভাল শুরু করেও শেষ রক্ষা হয়নি কলকাতা নাইট রাইডার্সের। শুরু থেকে দাপটের সঙ্গে খেললেও অনেকগুলো ‘যদি’, ‘কিন্তু’র উপর নির্ভর করেই চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে যায়গা করে নেওয়া, শেষে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়িয়ে কোনওক্রমে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নেয় কলকাতা। এখানেই শেষ। কোয়ালিফায়ারের গণ্ডি আর টপকানো হয়নি বাজিগরের দলের।
মুম্বইয়ের কাছ ৬ উইকেটে নাস্তানাবুদ হয়ে লিগ অভিযান শেষ করতে হয় নাইটদের।
কলকাতার হারের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে শনিবার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে আনলেন বাংলার ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
নাইটদের হারকে টিম ম্যানেজমেন্টের অদূরদর্শীতার ফল হিসাবে ব্যাখ্যা করলেন বাংলার প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার শিবশঙ্কর পাল। তিনি বলেন, “মুম্বই ম্যাচ নিয়ে সঠিক হোমওয়ার্ক ছিল না নাইটদের। প্লেয়ার নির্বাচন থেকে মানসিকতা— সব দিক থেকেই পিছিয়ে ছিল গম্ভীর বাহিনী। এ ছাড়াও মণীশ পাণ্ড্যের অনুপস্থিতিও কলকাতাকে অনেকটা ব্যাকফুটে ফেলে দেয়। কলকাতার বোলিং ব্রিগেডেও সেই ধার লক্ষ করা যায়নি। অঙ্কিত রাজপুতকে এখন উন্নতি করতে হবে।’’
পর্যুদস্ত নাইট অধিনায়ক। ছবি:এএফপি।
একই সুর বাংলার ভিশন ২০-২০-র বোলিং কোচ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরাশিস লাহিড়ীর গলাতেও। এ দিন মুরলীধরনের এই সহযোগী বলেন, “সুনীল নারিনকে নিয়ে ফাটকা খেলা এবং রবীন উথাপ্পার ব্যাটিং লাইনআপে পরিবর্তন মুম্বই ম্যাচ হারের মূল কারণ। বিগত ম্যাচগুলিতে ফাটকা চললেও এই ধরনের ডু অর ডাই ম্যাচে রবীনকেই ওপেন করতে পাঠানো উচিত ছিল। অন্য দিকে, কেকেআর বোলাররা গোটা টুর্নামেন্টে নির্ভরতা দিতে ব্যর্থ হয়।” পীযূষ চাওলা এবং কুলদীপ যাদবকে যে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়নি তা-ও এ দিন মনে করিয়ে দেন সৌরাশিস। তিনি বলেন, “রোটেশন করে পীযূষ এবং কুলদীপকে খেলালেও দু’জনকেই মানসিক নির্ভরতা দিতে ব্যর্থ হয় নাইট মেন্টররা। ফর্মে থাকা বোলারকে বসিয়ে দেওয়াও এই বিপর্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ কারণ।”
আরও পড়ুন: সম্মুখ সমরে ‘রো-হিট’ এবং ‘মাহি’
হারের পর্যলোচনা করতে গিয়ে প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও শোনা গেল একই সুর। আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, “মুম্বই ম্যাচের দল নির্বাচনেই গলদ ছিল কলকাতার। পীযূষ চাওলার বদলে কুলদীপ যাদবকে খেলানোর প্রয়োজন ছিল এ দিনের ম্যাচে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত চাপ নিয়ে ফেলাটাও মুম্বইয়ের কাছে হারের অন্যতম কারণ।” এ ছাড়া মনীশ পান্ড্যর অনুপস্থিতে এবং নারিনকে ফাটকা খেলানোটাও হারের বড় কারণ বলে মনে করেন তিনি।