বৃহস্পতিবার কোটলায় ম্যাচটা দেখতে দেখতে একটা সময় মনে হচ্ছিল, ঋষভ প্রতি বলে ছয় হাঁকাতে চায়। মাঝে মাঝে ক্যারিবিয়ানদের মতো স্কুপ করে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে ছয় মারছিল। মাঝে মাঝে সোজা ব্যাটে সরাসরি অফ সাইডের উপর দিয়ে। সচিন তেন্ডুলকর তো দেখে বলেই দিয়েছে দশটা আইপিএলে দেখা ওর সেরা ইনিংস।
মাত্র ১৯ বছর বয়স ছেলেটার। এই বয়সে এ রকম ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মানসিকতা থাকে ছেলেদের মধ্যে। আইপিএলের ঠিক আগেই বাবার মৃত্যুটাকেও মনের উপর প্রভাব ফেলতে দেয়নি ও। খ্যাতি ও সাফল্যেও ওর মাথা ঘুরে যায়নি। সেই মানসিকতা যে ঋষভ মাঠেও কাজে লাগাবে, ভাবা যায় না। কব্জির মোচড়ে যে ফ্লিকগুলো করে ও সেগুলো দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা যায়। আর ও তো ক্রিজে নামেও অনেকক্ষণ থাকার জন্যই। সারা জীবন মনে রাখার মতো একটা ইনিংস আপনাকে উপহার দেওয়ার জন্য।
সত্যিই আগুনে পারফরম্যান্স ছেলেটার। রঞ্জি ট্রফিতে দ্রুততম সেঞ্চুরিটা যেমন ওর, মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা তিনশোর ইনিংসও আছে। ইন্ডিয়া ক্যাপও উঠেছে ওর মাথায়। যুব বিশ্বকাপের সময় থেকে ও রাহুল দ্রাবিড়ের ছত্রছায়ায় রয়েছে। তার ফল তো পাওয়া যাবেই।
সঞ্জু স্যামসন ঋষভের চেয়ে বয়সে একটু বড়, ২২। কিন্তু ঋষভের মতো বিশেষ প্রতিভা বলা যাবে না ওকে। জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে ও একটু বেশি সময় নিয়ে থাকে বলে মাঠে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিয়ে বাউন্ডারি মারতে পারে। ছয়গুলো মারতেও ওকে বাড়তি শক্তি লাগাতে হয় না। তবু এ বারের আইপিএলে প্রায় একই সংখ্যক ছয় মেরেছে সঞ্জু ও ঋষভ।
এই দুই তরুণ প্রায় ঘুমিয়ে পড়া দিল্লিকে ফের জাগিয়ে তুলেছে। ওদের বাকি তিনটে ম্যাচই ঘরের মাঠে। তবে যে জায়গায় ওরা আছে, তাতে প্লে অফে জায়গা করে নেওয়া ওদের পক্ষে খুবই কঠিন। কিন্তু ওদের দলের তরুণ প্রতিভারা যে ভাবে নজর কেড়ে নিচ্ছে, তাতে দিল্লির উপর থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। ওরা যে পরের ম্যাচগুলোতে বড়সড় কোনও অঘটন ঘটাবে না, তাও বলা যাচ্ছে না।