আগ্রাসী: পঞ্জাবের ব্যাটিং ভাঙলেন ঈশান। ফাইল চিত্র
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে এক দিন বাকি থাকতেই জিতে নকআউট পর্বে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলা। হরভজন সিংহদের বিরুদ্ধে বোনাস পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে গ্রুপ ‘ডি’-র অঙ্ক পাল্টে দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেলেন মনোজ তিওয়ারিরা। বাংলার এখন ৫ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট। বিদর্ভের পয়েন্ট ৪ ম্যাচে ২১। তৃতীয় স্থানে থাকা পঞ্জাবের ৫ ম্যাচে ১৫।
১৫৫ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ অভিষেক রামন হলেও ৩২ রানে পাঁচ উইকেট ছিনিয়ে নিয়ে বাংলাকে নক-আউট পর্যায়ের স্বপ্ন দেখাল তরুণ পেস বোলার ঈশান পোড়েল। যাঁর পরিবারে কবাডির চল থাকলেও ছোটবেলা থেকেই তাঁর স্বপ্ন ক্রিকেটার হওয়ার। মন্থর উইকেটেও বাংলার উদীয়মান পেসার পাঁচ উইকেট তুলে নিলেন। ম্যাচ শেষে ঈশান ফোনে বলেন, ‘‘আমার জীবনের এটি অন্যতম সেরা ম্যাচ। এ রকম প্রয়োজনের মুহূর্তে বাংলাকে সাহায্য করতে পেরে আপ্লুত। কঠিন পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। একটি খারাপ ম্যাচের পরেও দলের কেউ ভেঙে পড়িনি। এটি দলগত একতার জয়।’’ অমৃতসর থেকে টেলিফোনে বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও বললেন, ‘‘দলগত একতাতেই পঞ্জাবকে ওদের ঘরের মাঠে হারাতে পেরেছি। দলের তরুণ খেলোয়াড়রা অসাধারণ খেলেছে। বিশেষ করে ঈশান ও প্রদীপ্ত।’’
আরও পড়ুন: লঙ্কা সমর্থককে আমন্ত্রণ বিরাটের
রবিবার ম্যাচের তৃতীয় দিনে ১৪৭ রানের জবাবে ৩৭৯-৯ স্কোরে ডিক্লেয়ার করে বাংলা। ২৩২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলেন জীবনজ্যোত সিংহ-রা। চল্লিশ রানের মধ্যেই তিনটি উইকেট হারায় পঞ্জাব। আনমোলপ্রীত সিংহ ও গুরকিরাত সিংহ মান ম্যাচের হাল কিছুটা ধরলেও বেশিক্ষণ সামলাতে পারেননি। ১২৯-৪ থেকে পরের ৮৪ রানে শেষ সাতটি উইকেট হারায় পঞ্জাব। দলে হরভজন সিংহের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থাকলেও ঘরের মাঠে তারা দাঁড়াতেই পারেনি।
চন্দননগরের ন্যাশনাল স্পোর্টিং ক্লাব থেকেই ক্রিকেট যাত্রা শুরু করেছিলেন ঈশান। উদীয়মান পেসারের সাফল্যে বাংলার কোচ থেকে অধিনায়ক সবাই অত্যন্ত খুশি। ঈশান বলেন, ‘‘দলের সবাই আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। সাইরাজ স্যার বলেছেন যে, ভাল সময় তো আসবেই কিন্তু খারাপ সময়েও শক্ত থাকতে হবে। ভেঙে পড়লে চলবে না।’’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই নিয়ে তৃতীয় ম্যাচ খেললেন ঈশান। কল্যাণীতে বিদর্ভের বিরুদ্ধে বাংলা হারলেও ঈশানই কিন্তু চার উইকেট পেয়ে সে দিনও সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন। এর আগে অনূর্ধ-১৬ ও অনূর্ধ-১৯ বাংলা দলেও খেলেছেন তিনি। ভাল পারফরম্যান্সের কারণেই অনূর্ধ-১৯ ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন ঈশান। অনূর্ধ-১৯ ভারতীয় দলের হয়ে ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ৩-১ সিরিজ হারিয়ে নির্বাচকদের নজরে পড়েন বাংলার উদীয়মান পেসার। ঈশানের বলের গতি নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেটমহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।