ইতালি-২ (জাকারিনি, পেল্লে) : বেলজিয়াম-০

চেনা ইতালি হারাল সোনার প্রজন্মকে

প্রতিটা ফুটবল টুর্নামেন্টের এখন ইউএসপি হয়ে উঠেছে গ্রুপ অব ডেথ। যে গ্রুপে ফেভারিট বলে কেউ হয় না। যে কোনও দল যে কাউকে হারাতে পারে। প্রত্যাশিত রেজাল্টের থেকে অঘটন থাকে বেশি। প্রতিটা ম্যাচই যেন থ্রিলার। এ বারের ইউরোর গ্রুপ অব ডেথে ইতালি বনাম বেলজিয়াম ছিল দুই সম্পূর্ণ আলাদা ঘরানার লড়াই। এক দিকে ট্র্যাডিশনাল রক্ষণাত্মক ইতালি। বিপক্ষে বেলজিয়ামের সোনার প্রজন্ম।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৯:৪২
Share:

প্রতিটা ফুটবল টুর্নামেন্টের এখন ইউএসপি হয়ে উঠেছে গ্রুপ অব ডেথ। যে গ্রুপে ফেভারিট বলে কেউ হয় না। যে কোনও দল যে কাউকে হারাতে পারে। প্রত্যাশিত রেজাল্টের থেকে অঘটন থাকে বেশি। প্রতিটা ম্যাচই যেন থ্রিলার।

Advertisement

এ বারের ইউরোর গ্রুপ অব ডেথে ইতালি বনাম বেলজিয়াম ছিল দুই সম্পূর্ণ আলাদা ঘরানার লড়াই। এক দিকে ট্র্যাডিশনাল রক্ষণাত্মক ইতালি। বিপক্ষে বেলজিয়ামের সোনার প্রজন্ম। যাদের আক্রমণাত্মক ফুটবল নিয়ে এখন ইউরোপ জুড়ে হইচই।

নব্বই মিনিটে পরে সেই চেনা ইতালিকেই দেখতে পেলাম। দলে বেশির ভাগ অনামী ফুটবলার থাকতে পারে। সাউদাম্পটনে খেলা সেন্টার ফরোয়ার্ড থাকতে পারে। কিন্তু দিনের শেষে ইতালি তো কোনও ব্যক্তিগত তারকার উপর নির্ভর করে না। বরং নির্ভর করে এগারো জনের উপর। যারা একসঙ্গে একটা নির্দিষ্ট ছকে ম্যাচ বার করবে। সবাই যে যার দায়িত্ব পালন করবে। ডিফেন্স যেমন আক্রমণকে সাহায্য করবে। আবার ডিফেন্স যখন বিপদে, ফরোয়ার্ডরা নিচে নেমে জমাট বাঁধবে। এ দিনও তাই হল।

Advertisement

আন্তোনিও কন্তে নিজেও দাপটে ইতালিতে খেলেছে। ভাল ভাবেই জানে দল কোন ব্র্যান্ডের ফুটবল খেলতে অভ্যস্ত। সেই ৩-৪-৩ ফর্মেশন রেখে তিন ডিফেন্ডার। ইনভার্টেড উইংব্যাক। অর্থাৎ মাঝমাঠে ফুলব্যাকরা খেলবে। আর মিডিও যারা, তারা লং বল বাড়ানোর আউটলেট পাবে। প্রথমার্ধে আর ম্যাচের একেবারে শেষে দুটো গোলই হল ছবির মতো। প্রথমটা প্রায় সেন্টার সার্কল থেকে বোনুচ্চির বাড়ানো নিঁখুত লং বল দুর্দান্ত রিসিভ করে এমানুয়েল জাকারিনি। তার পরে মাথা ঠান্ডা রেখে ততটাই ভাল ফিনিশ। দ্বিতীয় গোল প্রতিআক্রমণে। কান্দ্রেভার পাসে পেল্লের সাইড ভলিতে গোল ।

হ্যাজার্ড, লুকাকু, দে’ব্রায়ান, ফেলাইনি— ক্লাব ফুটবলের সমস্ত সেরা নাম। কিন্তু নামের জোরে খাতায়কলমে এগিয়ে থাকা যায়। মাঠে নয়। সোমবার রাতের বেলজিয়ামকে দেখে মনে হল এগারো জন অচেনা লোকের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশকে ইউরো জেতানোর। যাদের মধ্যে কম্বিনেশন নেই। মাঝমাঠ থেকে একটাও সুযোগ তৈরি হয়নি। ইতালির মতো উইংয়ে খেলা ছড়াতে পারেনি ফেলাইনিরা। ভিনসেন্ট কম্পানিকে ছেড়ে নেতৃত্ব দেওয়ার লোক নেই ডিফেন্সে। লুকাকুর মতো ফরোয়ার্ড অতিরিক্ত বেশি টাচ নিচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সহজ একটা সুযোগ নষ্ট করল। আর ইতালি একবার এগিয়ে গেলে ফিরে আসা মুশকিল হয় বিপক্ষের। কারণ বরাবরের মতো এ দিনও ইতালি সাপোর্টিং ডিফেন্ডার প্রথাতে খেলল। অর্থাৎ আসল মার্কার কেটে গেলে আর একজন সাপোর্টে থাকে। বেলজিয়াম গোলকিপার কুর্তোয়া দু’টো দুর্দান্ত সেভ না করলে আরও গোল হত।

সবে একটা মাত্র ম্যাচ খেলল ইতালি। তাই এখনই বলব না সেমিফাইনাল বা ফাইনালে যাবে। কিন্তু সোমবার রাতের মতো খেললে এই ইতালিকে হারানো মুশকিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন